জ্যোতি মালহোত্রা
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রকে ইমপিচ করার বিরোধীদের উদ্যোগকে কড়া নিন্দা করলেন ফলি নরিম্যান। এ ঘটনাকে ‘ভয়ংকর কালো দিন’ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, এর ফলে সমগ্র বিচারব্যবস্থার উপর থেকে মানুষের ভরসা উঠে যেতে পারে। শুধু তাই নয়, এর ফলে কোনও একজন বিচারপতির দেওয়া একটি রায় পছন্দ না হলে, তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য এরপর থেকে উদ্যোগী হয়ে উঠতে পারে শাসক দল, এমনটাও আশংকা করছেন অভিজ্ঞ এই আইনজ্ঞ। সানডে এক্সপ্রেসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, তাঁর ৬৭ বছরের কর্মজীবনে এমন ঘটনা দেখেননি।
কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলি যে যে অভিযোগ প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে এনেছে, তা আগে চার বিচারপতির আনা অভিযোগের সঙ্গে মিলছে না বলে উল্লেখ করেছেন নরিম্যান। গত ১২ জানুয়ারি বিচারপতি জাস্তি কমলেশ্বর, বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফ এবং বিচারপতি মদন লোকুর এক সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ তুলেছিলেন। নরিম্যান বলেছেন, বিরোধীদের আনা অভিযোগগুলির মধ্যে জালিয়াতির অভিযোগও রয়েছে। কিন্তু চার বিচারপতির আনা অভিযোগের মধ্যে জালিয়াতির অভিযোগ ছিল না। এ অভিযোগ, বিশেষ করে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আনা এ অভিযোগের মাত্রা যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন, বিচারপতি লোয়ার মৃত্যু স্বাভাবিক, তদন্ত হবে না: সুপ্রিম কোর্ট
প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আনা ইমপিচমেন্টের ঘটনা বিচারপতি লোয়ার মৃত্যু তদন্ত নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া কিনা, সে নিয়ে জানতে চাওয়া হলে নরিম্যান বলেন, ‘‘কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ ও কপিল সিব্বাল জানিয়েছেন, তাঁরা এক সপ্তাহ আগেই উপরাষ্ট্রপতির কাছে গিয়েছেন।’’
নরিম্যান খুব সুনির্দিষ্ট করে বলেছেন, বিচারব্যবস্থাই সংবিধানের ব্যাখ্যাকারী, সংসদ নয়। ফলে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের জন্য ভিত্তি খুবই দৃঢ় হওয়া প্রয়োজন। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘সংসদ কেবলমাত্র সংবিধান সংশোধনের অধিকারী, সংবিধানের অন্তিম ব্যাখ্যা আদালতেই হয়ে থাকে।’’ প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে এধরনের অভিযোগ আনা ‘সংবিধান ধ্বংস করার শামিল’ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।