বন্ধু প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন বলে কথা, তাই সীমান্তের কাঁটাতার টপকে সেদেশে গিয়েছিলেন দেশের প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা পাঞ্জাবের মন্ত্রী নভজ্য়োত সিং সিধু। বন্ধু বলতে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। হ্য়াঁ, ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ অনুষ্ঠানে সিধুর যাওয়ার আগেই খানিক টালবাহানা চলছিল। এবাই সেই সিধু শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নয়া বিড়ম্বনায় পড়লেন। বিড়ম্বনা বলতে, ওই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ভারত-পাক শীতল সম্পর্কে পারদ চড়িয়ে পাক সেনা প্রধানকে আলিঙ্গন করেছেন সিধু। যা ঘিরে এই মুহূর্তে তোলপাড় গোটা দেশ।
পাক সেনা প্রধানকে 'ঝাপ্পি' দিয়ে সিধু কি সত্য়িই অন্য়ায় করেছেন? এই প্রশ্নই এই মুহূর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে কাশ্মীর থেকে কন্য়াকুমারীতে। তবে সিধুর পাশে দাঁড়িয়েছেন তিন প্রাক্তন লেফট্যানেন্ট জেনারেল ও এক প্রাক্তন ব্রিগেডিয়ার। যদিও আরেক প্রাক্তন ব্রিগেডিয়ার সিধুর এহেন কাজে সমর্থন করেননি।
প্রাক্তন লেফট্য়ানেন্ট জেনারেল দীপেন্দর সিং- এটা খুবই সামান্য় ব্য়াপার। একজন সেখানে গিয়েছিলেন, আরেকজন তাঁর কাছে এসেছিলেন, দু'জনে আলিঙ্গন করেছেন। কী হয়েছে তাতে! আমাদের বড় দেশ, আমাদের কাজকর্মও বড় দেশের মতো হওয়া উচিত। ওঁরা একে অপরকে আলিঙ্গন করেছেন তো কী হয়েছে। পাঞ্জাবিরা এভাবেই অভিবাদন জানান।
প্রাক্তন লেফট্যানেন্ট জেনারেল তেজ সাপরু- আমার মনে হয় না উনি(সিধু) কোনও ভুল কিছু করেছে। আলিঙ্গন করা মানে এই নয় যে, ও দেশকে বিক্রি করে দিয়েছে। কেউ যদি পাক প্রধানমন্ত্রীকে আলিঙ্গন করতে পারেন, সেক্ষেত্রে পাক সেনা প্রধান প্রধানমন্ত্রীর অধীনে। এক্ষেত্রে একজন তাঁর কাছে এসে হ্য়ালো বলেছেন, আর তাই সৌজন্য়ের খাতিরে উনি আলিঙ্গন করেছেন...উনি এটা বলেননি ওঁকে যে আমরা নিয়ন্ত্রণরেখায় ওঁদের উপর গুলি চালাব না।
I want to thank Sidhu for coming to Pakistan for my oath taking. He was an ambassador of peace & was given amazing love & affection by ppl of Pakistan. Those in India who targeted him are doing a gt disservice to peace in the subcontinent - without peace our ppl cannot progress
— Imran Khan (@ImranKhanPTI) August 21, 2018
প্রাক্তন লেফট্যানেন্ট জেনারেল এইচ এস পনাগ- পাক সেনা প্রধানকে আলিঙ্গন করেছেন তো কী হয়েছে? দক্ষিণপন্থীরাই এত চিৎকার করছেন, কারণ তাঁরা জানেন, পাকিস্তানের সঙ্গে কিছু করার ক্ষমতা নেই তাঁদের। আমি অনেক সেমিনারে গিয়েছি, যেখানে প্রাক্তন পাক সেনা আধিকারিকরা এসেছিলেন এবং আমরা একে অপরকে আলিঙ্গন করেছিলাম। এটা কোনও ইস্য়ু নয়।
প্রাক্তন ব্রিগেডিয়ার সুরিন্দর সিং- অন্তত পারস্পরিক যোগাযোগের কিছু মাধ্য়ম থাকা উচিত। যাঁরা এর সমালোচনা করছেন, তাঁরা বোকামো করছেন। যখন আমরা পাকিস্তানের ব্রিগেডিয়ারদের সঙ্গে দেখা করি ফ্ল্য়াগ মিটিংয়ে, তখন একে অপরের প্রতি সৌজন্য় বিনিময় করি। আবার যখন প্রয়োজন হবে, আমরা একে অপরকে হত্য়া করব।
আরও পড়ুন, ইমরানের শপথ অনুষ্ঠানে সম্ভবত থাকছেন নভজ্যোত সিং সিধু
প্রাক্তন ব্রিগেডিয়ার এম পি এস বাজওয়া- নিয়ন্ত্রণরেখায় যেখানে পাক মদতপুষ্ট অনুপ্রবেশকারীদের গুলিতে আমাদের সেনা জওয়ানদের মৃত্য়ু হচ্ছে, সেই পরিস্থিতিতে আবেগের বশে আলিঙ্গন করা ঠিক নয়। এ প্রসঙ্গে পাঞ্জাবের মুখ্য়মন্ত্রী ক্য়াপ্টেন অমরিন্দর সিং সিধুর যে সমালোচনা করেছেন, তার পূর্ণ সমর্থন জানাই।
অন্য়দিকে, তাঁর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সিধুর আসা নিয়ে বন্ধুকে ধন্য়বাদ জানিয়ে টুইট করেছেন ইমরান খান। শান্তির দূত হিসেবে পাকিস্তানে সিধু গিয়েছিলেন বলে মন্তব্য় করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী।