নেপাল এখনও পর্যন্ত সাড়া না দেওয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনীতে 'অগ্নিবীর' প্রকল্পের আওতায় নেপালি গোর্খাদের নিয়োগ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আগামী ২৫ আগস্ট থেকে টানা এক মাসের মধ্যে পাঁচটি আলাদা-আলাদা কেন্দ্রে এই প্রকল্পে নিয়োগের কথা ছিল, তবে নেপালের অবস্থানে আপাতত তা শুরু নাও হতে পারে।
নেপালের পোখরা ও এবং ধরন এলাকায় দুটি নিয়োগ কেন্দ্র রয়েছে। এই নিয়োগ কেন্দ্রগুলি থেকে ভারতীয় সেনায় নেপালি গোর্খাদের নিয়োগ হয়। সেখানকার সরকারি সূত্র ইএনএসকে জানিয়েছেন, তাঁরা এখনও পর্যন্ত নেপাল সরকারের কাছ থেকে কোনও নির্দেশ পাননি। ধরন ক্যাম্পের একটি সূত্র জানিয়েছেন, ভারতীয় সেনায় 'অগ্নিবীর' প্রকল্পে নেপালি গোর্খাদের নিয়োগ নিয়ে সরকারের তরফে নির্দেশ আসেনি। সেই কারণে আগামী ১৯-২৮ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত নিয়োগ প্রক্রিয়া আদৌ শুরু করা যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সূত্রটি।
উল্লেখ্য, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে করোনা মহামারী ছড়ানোর আগে পর্যন্তও প্রতি বছর ১২০০-১৫০০ নেপালি গোর্খা চাকরি পেয়েছেন। ভারতীয় সেনায় চাকরি করে হাজার-হাজার নেপালি গোর্খা এখনও পেনশন-সহ সেনাবাহিনীর অন্যান্য সুবিধা ভোগ করে চলেছেন। সেনাবাহিনীতে ভারত ও নেপালি গোর্খাদের নিয়ে গোর্খা রেজিমেন্ট, গোর্খা ব্যাটেলিয়ন রয়েছে। নেপালের অর্থনীতিতেও বড়সড় ভূমিকা রয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর।
আরও পড়ুন- দেশের স্বার্থেই বিনামূল্যে সুবিধা দানের প্রতিশ্রুতি নিয়ে বিতর্ক দরকার, মত শীর্ষ আদালতের
তবে এবার 'অগ্নিবীর' প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতীয় সেনায় নিয়োগ চলছে। সেনার গড় বসয় কমানোই এই প্রকল্পের মূল্য উদ্দেশ্য। ভারতীয় সেনাবাহিনীর তিনটি ক্ষেত্রেই 'অগ্নিবীর' প্রকল্পের মাধ্যমে নিয়োগের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা চলছে। যা নিয়েই ঘোর চিন্তায় নেপাল। কারণ এই প্রকল্পের আওতায় ঢুকেই স্থায়ী চাকরির সুযোগ নেই। 'অগ্নিবীর' প্রকল্পে সাড়ে ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আর্মি, নেভি ও এয়ারফোর্সে চার বছরের জন্য চাকরিতে নিয়োগ করা হবে।
আরও পড়ুন- ‘বিধায়কদের কিনতে ৫ কোটির টোপ বিজেপির’, বিস্ফোরক অভিযোগ শাসকদলের
এই চার বছর চাকরি শেষে ২৫ শতাংশ 'অগ্নিবীর'-কে পাকাপাকিভাবে চাকরিতে নেওয়া হবে। তবে বাকি ৭৫ শতাংশকেই ১২ লক্ষ টাকা দিয়ে বিদায় জানানো হবে ভারতীয় সেনাবাহিনী থেকে। এই 'অগ্নিবীর' প্রকল্পে সেনায় নিয়োগ নিয়েই অসন্তুষ্ট নেপাল। সেই কারণেই নেপালে সেখানকার গোর্খাদের ভারতীয় সেনায় নিয়োগের শিবির কবে থেকে শুরু করা যাবে তা নিয়ে বড়সড় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এমনকী এর জেরে ভারত-নেপালের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কেও ধাক্কা আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।