New Delhi Railway Station Stampede: 'এত মৃতদেহ দেখে রাতের খাবারও খেতে পারিনি'... অসহায় মানুষের আর্তনাদ আর মৃত্যুর ভয়াবহ দৃশ্য! নয়াদিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে পদপিষ্ট হওয়ার মর্মান্তিক কাহিনী আপনার বুক কাঁপিয়ে দেবে।
শনিবার রাতে নয়াদিল্লি রেল স্টেশনে তখন হাজার হাজার মানুষ প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভে যাওয়ার অপেক্ষা করছিলেন। কয়েক সেকেন্ডের হুড়োহুড়ি....! তারপরই চিৎকার আর্তনাদ, স্বজনহারার কান্নায় ভাসল নয়াদিল্লি স্টেশন। ১৩ ও ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পদপিষ্ট হয়ে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অনেকে। নিহতদের মধ্যে ৯ জন মহিলা, ৪ জন পুরুষ এবং ৫ নিষ্পাপ শিশুও রয়েছে। মৃত্যুর ঘটনায় বিহার, দিল্লি এবং হরিয়ানার একাধিক পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া।
সুগন লাল মীনা যিনি যিনি বছরের পর বছর ধরে নয়া দিল্লি রেলস্টেশনে কুলির কাজ করেন, দুর্ঘটনার পর তিনি যা জানিয়েছেন সংবাদ মাধ্যমের সামনে তা ভাষায় বর্ণনা করা কঠিন। কাঁপা কাঁপা গলায় তিনি জানিয়েছেন, "আমি ১৯৮১ সাল থেকে এখানে কুলি হিসেবে কাজ করছি, কিন্তু এত ভিড় কখনও দেখিনি। প্ল্যাটফর্ম বদলের ঘোষণায় মানুষের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। মুহূর্তেই পদপিষ্টের ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অনেকের। আমরা নিজেদের হাতে ১৫টি মৃতদেহ বের করে অ্যাম্বুলেন্সে তুলেছি। সর্বত্র বিশৃঙ্খলা। মৃতদেহ, রক্ত এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জুতো, সেই দৃশ্য দেখার পর থেকে আমি এখন পর্যন্ত খাবার খেতে পারিনি।"
দুর্ঘটনার কারণ কি প্রশাসনিক গাফিলতি?
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ট্রেনের হঠাৎ প্ল্যাটফর্ম পরিবর্তনই দুর্ঘটনার মূল কারণ। প্রয়াগরাজ স্পেশাল ট্রেনটি ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়ার কথা ছিল কিন্তু শেষ মুহূর্তে ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তরিত করা হয়। হাজার হাজার মানুষ এই ঘোষণায় ছুটতে শুরু করেন। সিঁড়ি এবং এসকেলেটরে ভিড় নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই পদপিষ্টে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
এখন প্রশ্ন এই মর্মান্তিক ঘটনার পিছনে দায় কার? রেল প্রশাসনের অবহেলার কারণেই কী ঘটে গেল এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা? ট্রেনের প্ল্যাটফর্ম বদলের ঘোষণা কেন আগে থেকে করা হল না? ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কেন স্টেশন চত্ত্বরে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি? এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো আগামী দিনে পাওয়া যাবে, কিন্তু শনিবার রাতে যারা তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন তাদের সামনে কেবল একরাশ শূণ্যতা।