ঋণখেলাপি পলাতক হীরে ব্যবসায়ী নীরব মোদী আপাতত রয়েছেন লন্ডনের জেলে। জামিনের আর্জি খারিজ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার লন্ডনের সবচেয়ে জনাকীর্ণ জেলেই হোলির দিনটি কাটালেন নীরব মোদী। বুধবার লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাঁর জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর খবর অনুযায়ী, ২৯ মার্চ পর্যন্ত মোদীর হেফাজত মঞ্জুর হয়েছে।
জেলের ১,৪৩০ জন বন্দির মধ্যে কোনো একজনের সঙ্গেই থাকতে হবে নীরব মোদীকে। ভারতের প্রথম সারির ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে নীরব মোদী অন্যতম। তাঁর জীবনযাপনও যে খুবই বিলাসবহুল, সেকথা কারো অজানা নয়। কিন্তু লন্ডনের জেলে তাঁকে দিন কাটাতে হবে আর পাঁচজন সাধারণ বন্দির মতোই।
সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভিক্টোরিয় আমলে তৈরি এই জেল ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের সবচেয়ে জনাকীর্ণ জেল। যথেষ্ট শিক্ষার সুযোগ না পাওয়া, মানসিকভাবে অসুস্থ, এবং বেশ কিছু নেশাগ্রস্ত বন্দি এখানে রয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও যথেষ্ট কড়া।
আরও পড়ুন, বিমুদ্রাকরণের পরই অর্থনীতিতে ক্রমশ বাড়ছে নগদের জোগান
একজন বন্দি থাকতে পারেন, এমন কারাগারে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একাধিক বন্দিকে রাখা হয়। বন্দিদের জন্য তৈরি শৌচালয়ও যথেষ্ট বড় নয়। খুব কম সময়ের জন্যই কারাগারের বাইরে থাকার অনুমতি পান বন্দিরা।
দেশ ছাড়ার পর পশ্চিম লন্ডনের সেন্টার পয়েন্টের এক বিলাসবহুল ফ্ল্যাটবাড়িই নীরব মোদীর ঠিকানা ছিল গত কয়েক মাস ধরে। সেই সময়কার জীবনযাপনের সঙ্গে কারাগারের জীবনের যে আকাশ পাতাল ফারাক, তা বলার অপেক্ষাই রাখে না।
বৃহস্পতিবার আদালতে হাজিরা দিয়েছিলেন মোদী। তদন্তে সাহায্য করার জন্য যা যা করা দরকার, তার সবই তিনি করেছেন বলে দাবি নীরব মোদীর আইনজীবী জর্জ হেপবার্ন স্কটের। এ দিন আদালতে স্কট দাবি করেন, আইনিভাবেই ব্রিটেনে রয়েছেন নীরব মোদী। আইনত ইংল্যান্ডে বসবাস করতে হলে এবং সেখানে কাজ করতে গেলে ন্যাশনাল ইনশিওরেন্সের যে নম্বর থাকতে হয়, তাও রয়েছে ঋণখেলাপি মামলায় পলাতক নীরব মোদীর কাছে, জানিয়েছেন স্কট।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, ব্রিটেনে বসবাস করার জন্য স্থানীয় কর দিয়ে থাকেন নীরব মোদী। সেটিই তাঁর ঠিকানার বৈধ প্রমাণ হিসেবেও কাজ করে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাঁর নাম ব্রিটেনের ভোটার তালিকায় তোলার প্রস্তাবও দিয়েছেন।
গত বুধবারই গ্রেফতার করা হয় পলাতক অলঙ্কার ব্যবসায়ীকে। লন্ডনে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। কয়েকদিন আগেই লন্ডনের আদালতে নীরব মোদীর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের কেলেঙ্কারিতে অন্যতম মূল অভিযুক্ত নীরব মোদী।