জম্মু কাশ্মীরে যে আশঙ্কার পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তা প্রশমিত করতে রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক বলছেন, সাংবিধানিক রদবদলের কোনও খবর রাজ্যের কাছে নেই। অমরনাথ যাত্রা বাতিলের পর এবং যাত্রী ও পর্যটকদের অবিলম্বে রাজ্যত্যাগের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর উদ্ভূত আশঙ্কার কথা জানাতে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ন্যাশনাল কনফারেন্সের একটি প্রতিনিধিদল। সে দলের নেতৃত্বে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা।
সত্যপাল মালিক ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, "মানুষজন জানতেন না যে এ এলাকায় জঙ্গি বা আত্মঘাতী হামলা হতে পারে। তিনি বলেন, সমস্ত নাগরিককে সুরক্ষা দেওয়া রাজ্যের দায়িত্ব।"
সেনাসংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে মালিক বলেন, "নিরাপত্তা পরিস্থিতির যে বদল হয়েছে তাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন ছিল।"
আরও পড়ুন, নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে নিহত ৭ মাওবাদী
রাজ্যপাল বলেন, নিরাপত্তাবাহিনীর কাছে অমরনাথ যাত্রায় জঙ্গি হামলা নিয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য ছিল। পাকিস্তান নিয়্ন্ত্রণরেখায় গুলিবর্ষণের পরিমাণ বাড়িয়েছে, যার যথাযোগ্য উত্তর দিয়েছে সেনাবাহিনী। তিনি আরও বলেন, এই পরিপ্রেক্ষিতে যাত্রী ও পর্যটকরা যাতে দ্রুত ফিরে আসেন সে কারণে একটি অ্যাডভাইজরিও সরকারের তরফ থেকে জারি করা হয়েছে।
ওমর আবদুল্লা বলেছেন, "রাজ্যপালের তরফ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ৩৭০ ধারা বা ৩৫এ ধারা অথবা রাজ্যের ত্রিখণ্ডীকরণের ঘোষণা নিয়ে কোনও তোড়জোড় চলছে না।"
বৈঠকের পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে ওমর আবদুল্লা বলেন, "আমরা বর্তমান পরিস্থিতি জানতে চেয়েছিলাম। আধিকারিকদের কাছ থেকে আমরা জানতে পারি কিছু একটা ঘটেছে, কিন্তু কী ঘটছে তা কেউ জানে না।"
সত্যাল মালিকের কথা যে চূড়ান্ত নয়, সে কথা জানিয়ে ওমর বলেন তিনি এ ব্যাপারে কেন্দ্রে কাছ থেকে জানতে চান। "জম্মু-কাশ্মীরে রাজ্যপালের কথা চূড়ান্ত নয়। জম্ম-কাশ্মীর নিয়ে চূড়ান্ত কথা বলে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে এখানকার মানুষের যে চিন্তিত হওয়ার কোনও কারণ নেই, সে কথা আমি সরকারের কাছ থেকে জনসমক্ষে শুনতে চাই।"
আরও পড়ুন, উন্নাও ধর্ষণে অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়কের অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল
এ ব্যাপারে চলতি লোকসভা অধিবেশনে বিবৃতি দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করেছেন ওমর আবদুল্লা।
অমরনাথ যাত্রা শুক্রবার বাতিল হওয়ার পর শনিবার কাশ্মীর উপত্যকা সংলগ্ন পাহাড়ি কিশতোয়ার পাড্ডার এলাকায় বার্ষিক মাচেল মাতা যাত্রাও বাতিল করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন।
উপত্যকার অনিশ্চয়তার পরিপ্রেক্ষিতে এলাকাবাসী নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মজুত করতে শুরু করেছেন। তার মধ্যে পেট্রোল থেকে শুরু করে মুদির জিনিসপত্রও রয়েছে। এটিএম থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে নগদ টাকা। বিমানসংস্থা ক্যানসেলেশন ফি মকুব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাত্রীরা ফেরার তোড়জোড় শুরু করেছেন। শ্রীনগরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি পরবর্তী নির্দেশ না-আসা পর্যন্ত ক্লাস সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
Read the Story in English