গুজরাত জনচেতনা দলের তরফে গত ২৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জীবনের উপর ভিত্তি করে নির্মিত 'পিএম নরেন্দ্র মোদী' ছবিটি নির্বাচন মডেলের আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে বলে নির্বাচন কমিশনে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কংগ্রেসের তরফ থেকেও অভিযোগ করা হয়েছে, ছবিটিকে নির্বাচনের আগে রিলিজ করিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে মোদী সরকার।
সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে প্রযোজকদের তরফে আইনজীবী হিতেশ জৈন বলেছেন, কিছু পাবলিক ইভেন্টস, ফেসবুক পোস্ট এবং টুইটের মাধ্যমে যে মিথ্যে অভিযোগ তুলে যেভাবে রাজনৈতিক রঙ লাগানোর চেষ্টা চলছে তা শুধু অসত্যই নয়, কোনও আইনগত ভিত্তিও নেই এর।
এই ছবির প্রযোজকরা হলেন আনন্দ কে পন্ডিত, সন্দীপ সিং, মনীশ আচার্য এবং সুরেশ ওবেরয়। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের নোটিসের উত্তরে প্রযোজকদের তরফে বিজেপির সঙ্গে এই ছবির সম্পর্ককে অস্বীকার করে জানানো হয়, ছবিটি তাঁদের ব্যক্তিগত টাকার বিনিয়োগে তৈরী হয়েছে।
আরও পড়ুন: "পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতিতে আমার সমস্যা নেই, তবে দেশের গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক"
প্রসঙ্গত, হিতেশ জৈন নিজে পেরিনাম ল অ্যাসোসিয়েটের অংশীদার। এছাড়াও হিতেশ ব্লু কার্ট ডিজিট্যাল ফাউন্ডেশনের শেয়ারহোল্ডার ও প্রতিষ্ঠাতা। গত বছর প্রকাশিত 'এক্সাম ওয়ারিওর্স' বইটির টেকনোলজি এবং নলেজ পার্টনার হিসেবেও ছিল হিতেশের নাম। কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের রেকর্ড অনুযায়ী, মার্চ ২০১৮-তে ব্লু-কার্ট সংস্থাটির ৫০ শতাংশ শেয়ারের মালিক ছিলেন হিতেশ জৈন।
চলতি বছরের মার্চ মাসেই ব্লু-কার্ট প্রকাশ করে তাদের দ্বিতীয় বই, মোদীর 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানটির ৫০টি এপিসোডের একটি সংকলন। আগের বছর তারা প্রকাশ করেছিল 'যোগা উইথ মোদী' শীর্ষক কিছু ভিডিও।
এই প্রসঙ্গে হিতেশ জৈন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, তিনি একজন স্বাধীন আইনজীবি, ব্লু-কার্টের সঙ্গে তাঁর আইনি পেশার কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি অনেক সংস্থাতেই ডিরেক্টর হিসেবে আছেন। সরকারের সঙ্গেও ব্লু-কার্ট সংস্থাটির কোনও যোগাযোগ নেই।
আরো পড়ুন: জাভেদের পর সমীর, একাধিক বিতর্কে মোদীর বায়োপিক
'পিএম নরেন্দ্র মোদী' ছবিটির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই ছবিটি তাঁদের ক্লায়েন্ট এবং চলচ্চিত্র শিল্পের প্রযোজকদের দ্বারা একটি বাণিজ্যিক উদ্যোগ হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। কোনও প্রযোজক রাজনৈতিক অনুষঙ্গ আছে, এমন কোনও ছবি তৈরি করলেই রাজনীতির রঙ লাগিয়ে তাঁকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
হিতেশ আরও জানান, ছবিটিতে নরেন্দ্র মোদীর চরিত্রটি করছেন বিবেক ওবেরয়। বিবেকের নিজের রাজনৈতিক মত থাকতেই পারে, কিন্তু এটি ভাবার কোনও কারন নেই যে এটি একটি আদ্যন্ত রাজনৈতিক ছবি। ছবিটির মুক্তির সময় পিছিয়ে দেওয়া নিয়ে এবং "একটি রাজনৈতিক ছবি"-র তকমা দিয়ে বিরোধী পক্ষ যেভাবে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে, তাতে ক্ষুদ্ধ প্রযোজকেরা।
হিতেশ জৈন আরও দাবি করেছেন, এর আগে 'উরি', 'অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার'-এর মতো সংবেদনশীল ছবি দেশ জুড়ে ব্যবসা করলেও কোনও বিরোধিতা হয়নি। কিন্তু এই ছবি নিয়ে বিরোধিতা হচ্ছে। একে "বিরোধী পক্ষের চক্রান্ত" বলেই মনে করছেন তাঁরা।
Read the full story in English