আসাম এনআরসি এ মুহূর্তের কোনও নথি নয়, ভবিষ্যতের এক ভিত্তি। দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ রবিবার এ কথা বলেছেন। পোস্ট কলোনিয়াল আসাম নামক এক বইয়ের প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে গগৈ বলেন, বেআইনি অভিবাসীদের সংখ্যা কিছুটা সুনিশ্চিত করার জন্য এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
সংবাদসংস্যা এ এন আই রঞ্জন গগৈকে উদ্ধৃত করেছে। তিনি বলেছেন, "এর মাধ্যমে বিষয়টাকে একটি যথাযথ প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করা গেল। জাতীয় নাগরিক পঞ্জি শেষ পর্যন্ত যা দাঁডাতে পারে, তাতে এটা এই মুহূর্তের কোনও নথি নয়। ১৯ লক্ষ না ৪০ লক্ষ সেটা ব্যাপার নয়। এটা হল ভবিষ্যতের ভিত্তি।"
আরও পড়ুন, বিশ্লেষণ: সারা দেশে এনআরসি চালুর আগে কেন নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করাতে চান অমিত শাহ
এদিন সংবাদমাধ্যমের একাংশের বিরুদ্ধেও দায়িত্বজ্ঞানহীন খবর প্রকাশের অভিযোগ তুলে তোপ দেগেছেন প্রধান বিচারপতি, দাবি করেছেন, এর ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
তিনি বলেন, "কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দায়িত্বজ্ঞানহীন রিপোর্টিং পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করেছে। বেআইনি অভিবাসীদের সংখ্যা কিছুটা পরিমাণ নিশ্চিত করার জরুরি প্রয়োজন ছিল, যে কারণেই সাম্প্রতিক এনআরসি প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে, তার কমও কিছু নয়, অধিকও কিছু নয়।"
আরও পড়ুন: ভারতের নতুন মানচিত্রে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একাধিক এলাকা
এ বছরের ৩১ অগাস্ট এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, আবেদনকারী ৩.৩০ কোটির মধ্যে বাদ পড়েছেন ১৯ লক্ষ। এর দু মাস পর এ নিয়ে মন্তব্য করলেন প্রধান বিচারপতি। সুপ্রিম কোর্ট গোটা এনআরসি প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেছে, মধ্যে মধ্যে কেন্দ্র ও রাজ্য যাতে একই পথে থাকে সে জন্য হস্তক্ষেপও করেছে।
তবে যাঁরা তালিকাছুট হয়েছেন, তাঁদের সামনে এখনও আবেদনের পথ খোলা রয়েছে। তাঁরা একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এনআরসি থেকে তাঁদের প্রত্যাখ্যানের নির্দেশের নথি সহ ফরেনার্স ট্রাইবুনালে আবেদন করতে পারেন।
আরও পড়ুন, বিশ্লেষণ: এনপিআর কী, এ নিয়ে এত বিতর্ক কেন?
তাঁদের প্রমাণ করতে হবে যে তাঁরা নিজেরা বা তাঁদের পূর্বপুরুষ ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে এ দেশের নাগরিক ছিলেন। ১৯৮৫ সালের আসাম চুক্তি অনুসারে এটিই নির্দিষ্ট তারিখ হিসেবে স্থির করেছিল কেন্দ্র এবং আসু। বাংলাদেশ থেকে অভিবাসন আটকানোর বিরুদ্ধে ৬ বছর ব্যাপী চলা আন্দোলন শেষ হয়েছিল এই চুক্তির মাধ্যমে।