Puri Jagannath Temple: তিরুপতি মন্দিরের প্রসাদী লাড্ডূতে পশুর চর্বি ব্যবহার ও নিন্মমানের ঘি ব্যবহারের অভিযোগে দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। তিরুপতি লাড্ডু বিতর্কের পর এবার ওড়িশা সরকারের বড় সিদ্ধান্ত, 'জগন্নাথ মন্দিরের' মহাপ্রসাদে ব্যবহৃত 'ঘি'-এর মান পরীক্ষা করা হবে।
অন্ধ্রের তিরুপতি লাড্ডু বিতর্কের মধ্যেই এখন সতর্ক হয়ে গেছে অন্যান্য রাজ্যের সরকারও। এই প্রেক্ষাপটে জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওড়িশা সরকার। তিরুপতি মন্দিরের প্রসাদ তৈরিতে পশুর চর্বি ব্যবহার নিয়ে বিতর্কের মধ্যে ওড়িশা সরকার একটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মঙ্গলবার পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে প্রসাদ তৈরিতে ব্যবহৃত ঘির গুণমান পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পুরীর জেলা জেলাশাসক সিদ্ধার্থ শঙ্কর বলেছেন যে যদিও এখানে এমন কোনও অভিযোগ নেই, প্রশাসন আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে মন্দিরে 'ভোগ' তৈরি করতে ব্যবহৃত ঘি-এর গুণমান পরীক্ষা করে দেখবে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন 'ওডিশা মিল্ক ফেডারেশন' (ওএমএফইডি) পুরী মন্দিরে ব্যবহৃত ঘি- সাপ্লাই করে।
মন্দিরের উপর নিয়ন্ত্রণ ছাড়ুক সরকার, জোরালো দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলনের হুঙ্কার VHP-র
অন্ধ্রপ্রদেশে কেন বিতর্ক ?
আসলে, তিরুপতি মন্দিরের লাড্ডুতে পশুর চর্বি ব্যবহারের অভিযোগে অন্ধ্রপ্রদেশে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু অভিযোগ করেছিলেন যে পূর্ববর্তী ওয়াইএসআরসিপি সরকারের আমলে তিরুপতি লাড্ডু তৈরিতে বিশুদ্ধ ঘি-এর বদলে পশুর চর্বি ব্যবহার করা হত। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছে রাজ্য সরকার। এদিকে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগন মোহন রেড্ডি ধর্মীয় বিষয়ে 'রাজনীতি' করার জন্য চন্দ্রবাবুকে কাঠগড়ায় তুলেছে। বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
FSSAI নোটিশ পাঠিয়েছে
লাড্ডুতে ভেজালের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, FSSAI তিরুপতি মন্দিরে নিম্নমানের ঘি সরবরাহের অভিযোগে তামিলনাড়ুর একটি কোম্পানিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছে। চন্দ্রবাবু নাইডুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে চূড়ান্ত বিতর্ক। এবার মন্দিরের উপর থেকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ হটাতে আসরে নেমেছে ভিএইচপি। 'সংখ্যালঘুরা যদি চালাতে পারে, তাহলে হিন্দুরা পারবে না কেন'? সেই প্রশ্ন তুলে মন্দিরগুলিকে 'সরকারি নিয়ন্ত্রণ' থেকে সম্পুর্ণ মুক্ত করতে ভিএইচপি প্রচার শুরু করতে চলেছে ৷
উৎসবের মেজাজে উপত্যকায় ভোট, 'পর্যবেক্ষণে' আমেরিকা-সহ বহু দেশের কূটনীতিকরা
বিশ্ব হিন্দু পরিষদ হিন্দু মন্দিরের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ 'হিন্দু সম্প্রদায়ের' হাতে তুলে দিতে দেশব্যাপী প্রচার চালাবে। এই প্রচারের অধীনে, ভিএইচপি-র সমস্ত রাজ্য শাখা তাদের নিজ নিজ রাজ্যে জনসচেতনতা বাড়াতে প্রচার চালাবে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালদের সঙ্গে দেখা করবেন প্রতিনিধিরা এবং মন্দিরগুলিকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করতে স্মারকলিপি জমা দেবেন। ভিএইচপি বলছে, মন্দিরগুলিকে সরকারের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করতে প্রতিবাদ ও সামাজিক সচেতনতা চালানো হবে।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) নেতা ডক্টর সুরেন্দ্র জৈন মঙ্গলবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, 'আদালত এর আগে অনেক সিদ্ধান্তে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে 'মন্দির পরিচালনা' করা সরকারের কাজ নয়। তিনি আরও বলেছেন, 'তিরুপতি বিতর্ক যেভাবে সামনে এসেছে তাতে এটি পরিষ্কার হয়ে গেছে যে এখন 'হিন্দু মন্দির প্রশাসন' হিন্দু সমাজের হাতে তুলে দেওয়া উচিত। ভিএইচপির মতে, হিন্দু মন্দিরের অর্থ হিন্দু সমাজের দরিদ্র মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করা উচিত। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠনটি 'হিন্দুদের জন্য হিন্দু সমাজ কা ধন' নামে একটি প্রচার চালাবে। শুরু হবে অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি মন্দির থেকে।
ভিএইচপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুরেন্দ্র জৈন সাংবাদিক সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় আরও বলেন, রাজ্য সরকার যদি মন্দিরগুলি হিন্দু সমাজের কাছে হস্তান্তর না করে তবে সংগঠন আদালতের দ্বারস্থ হবে। পাশাপাশি জোরালো আওয়াজ তুলে তিনি এও বলেন, 'আজ থেকে আমাদের সংকল্প হল সারা দেশের মন্দিরগুলিকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করে সমাজের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এর জন্য, প্রতিটি রাজ্যে প্রথমে বিক্ষোভ ও আন্দোলন করা হবে এবং আমাদের স্মারকলিপি সংশ্লিষ্ট মুখ্যমন্ত্রীদের মাধ্যমে রাজ্যপালদের কাছে জমা দেওয়া হবে।