ভূমিকম্পের আতঙ্কে বহুতল থেকে নামতে গিয়ে শিলিগুড়িতে মৃত্যু হল এক যুবকের। মৃতের নাম সম্রাট দাস (২২)। বাড়ি শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য শান্তিনগরের বউবাজার এলাকায়। ঘটনার জেরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে রাজ্য সরকার এবং শিলিগুড়ি পুরনিগম।
বুধবার সকাল দশটা কুড়ি মিনিটে ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা। কম্পনের আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন সাধারণ মানুষ। আই এম ই সূত্রে খবর, ২০ থেকে ২৫ সেকেন্ড স্থায়ী ছিল এই কম্পন। বিভিন্ন স্কুলে এদিন ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। এরই মাঝে শিলিগুড়ি সেবক রোড একটি বিল্ডিংয়ের বহুতলে ফাটলের খবর পাওয়া যায়।
ভূমিকম্পের সময়ে বহুতল থেকে তড়িঘড়ি নামতে গিয়ে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় সম্রাটের। জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের একটি বেসরকারি বিএড কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি। বাড়িতে মা-বাবা ছাড়াও দাদা এবং বৌদি রয়েছেন। মৃতের পরিবারের সূত্রে খবর, দুদিন আগেই ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন ওই যুবক। পুজোর পর ফেরার কথা ছিল তাঁর।
আরও পড়ুন: আসামে ভূমিকম্প, কাঁপল বাংলাও
এদিন সকালে নিজের ঘরেই ছিলেন সম্রাট। ভূমিকম্প শুরু হতেই নিজের ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন, এবং তড়িঘড়ি সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যান। ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারান তিনি। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় কলেজ পাড়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে। সেখান থেকে তাঁকে রেফার করে দেওয়া হয় সেবক রোডর অন্য একটি নার্সিংহোমে। সেখানে নিয়ে যাওয়ার সময়ে পথেই মৃত্যু হয় তাঁর। নার্সিং হোমে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃতের পরিবার। পাড়ায় খবর যেতেই সেখানেও শোকের ছায়া নেমে আসে।
খবর পেয়ে সম্রাটের বন্ধু ও পরিজনেরা ছুটে আসেন তাঁকে শেষ দেখা দেখতে। সম্রাটের মা ঊষা দাস জানিয়েছেন, পুজোর ছুটিতে বাড়িতে এসেছিল ছেলে। সকালে ভূমিকম্প হতেই নামতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে গিয়ে নাক মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়। "সব শেষ হয়ে গেল"।
রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, "ক্যাবিনেট মিটিংয়ের জন্য কলকাতায় চলে এসেছি। ঘটনার কথা শুনেছি। খুবই দুঃখজনক ঘটনা, পরিবারকে সমবেদনা জানাই।" শিলিগুড়ি পুরনিগমের মেয়র অশোক ভট্টাচার্য মৃতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।