বুধবার রাতে গ্রেফতারের পর দফায় দফায় চিদাম্বরমকে জেরা করেছে সিবিআই। আজ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে পেশ করা হবে। চিদাম্বরমকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে সিবিআই। আদালতে ইতিমধ্যেই এসে পৌঁছেছেন চিদাম্বরমের স্ত্রী নলিনী চিদাম্বরম ও আইনজীবী তথা কংগ্রেস অভিষেক মনু সিঙভি। তাঁদের ‘টার্গেট’ করা হচ্ছে বলে সরব হয়েছেন চিদাম্বরম পুত্র কার্তি।
আরও পড়ুন: টাইমলাইন: আইএনএক্স মিডিয়ায় কীভাবে জড়ালেন চিদাম্বরম
উল্লেখ্য, বুধবার রাতে দেশের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরমকে আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় গ্রেফতার করে সিবিআই। এয়ারসেল মাক্সিস, এয়ার ইন্ডিয়া-সহ বেশ কিছু আর্থিক কেলেঙ্কারি মামলায় তাঁর নাম জড়িয়েছিল।
আরও পড়ুন: চিদাম্বরমের গ্রেফতারে গণতন্ত্র কাঁদছে: মমতা
চিদাম্বরমের গ্রেফতারি নিয়ে নাটকীয় মুহূর্ত তৈরি হয়। মঙ্গলবার সন্ধে থেকে 'বেপাত্তা' থাকার পর বুধবার সন্ধ্যায় কংগ্রেসের সদর দফতরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন চিদাম্বরম। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, "অন্যায় করিনি, মাথা উঁচু করে হেঁটে যাব"। সাংবাদিক বৈঠক শেষে কপিল সিব্বল, অভিষেক মনু সিঙভিদের সঙ্গে জোর বাগের বাড়িতে যান দেশের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
এরপরই চিদাম্বারমের বাড়িতে যায় সিবিআই ও ইডি। চিদাম্বরমের বাড়ির প্রাচীর টপকে ঢোকেন সিবিআই আধিকারিকরা। এরপরই তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন: আইএনএক্স মিডিয়া ও চিদাম্বরমের যোগসাজশ
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দিল্লি হাইকোর্ট তাঁর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়।এরপরই কার্যত 'বেপাত্তা' ছিলেন চিদাম্বরম। দিল্লি হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। কিন্তু সেখানেও উদ্বেগ বাড়ে চিদাম্বরমের। এ মামলা প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে পাঠানো হয়। কিন্তু গ্রেফতারি থেকে রেহাই মেলে না। এরমধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চিদাম্বরমের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই ও ইডি। কিন্তু সেসময় বাড়িতে ছিলেন না চিদাম্বরম। অবিলম্বে হাজিরা দেওয়ার জন্য চিদাম্বরমকে নোটিস দেয় সিবিআই। বুধবার সকালেও তাঁর বাড়িতে যান সিবিআই আধিকারিকরা। চিদাম্বরমের নামে লুকআউট নোটিস জারি করে ইডি।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই প্রথমবার আইএনএক্স মিডিয়ার দুটি মামলায় আগাম জামিন পেয়েছিলেন দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। তার পর থেকে কিছুদিন অন্তর এই মেয়াদ বাড়তে থাকে।
আরও পড়ুন: অন্যায় করিনি, মাথা উঁচু করে হেঁটে যাব: চিদাম্বরম
৩৫০০ কোটি টাকার এয়ারসেল মাক্সিস চুক্তি এবং ৩০৫ কোটি টাকার আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় প্রবীণ কংগ্রেস নেতার ভূমিকা তদন্তকারী সংস্থাগুলির নজরে ছিল। এ দুটি ঘটনাই ঘটে ইউপিএ ১ আমলে, যখন চিদাম্বরম অর্থমন্ত্রী ছিলেন। আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় গত ২০১৭ সালের ১৫ মে সিবিআই এফআইআর দায়ের করে। সেখানে বলা হয়েছিল ২০০৭ সালে বিদেশ থেকে ৩০৫ কোটি টাকা ফান্ড পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ছাড়পত্রের ব্যাপারে নিয়ম মানা হয়নি। এর পর গত বছর ইডি এ ব্যাপারে আর্থিক নয়ছয়ের মামলা রুজু করে।
তাঁর ছেলে কার্তি চিদাম্বরমও এই মামলায় অভিযুক্ত। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করে। পরে দিল্লি হাইকোর্ট কার্তির জামিন মঞ্জুর করে।
গত ৪ জুলাই আইএনএক্স মিডিয়ার প্রাক্তন ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়কে সিবিআইয়ের মামলায় রাজসাক্ষী হওয়ার অনুমতি দেয় দিল্লির এক আদালত।
সোমবারই তাঁকে এয়ার ইন্ডিয়া বিমান ক্রয় মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছিল ইডির তরফ থেকে। আগামী শুক্রবার তাঁর এই মামলার তদন্তকারী অফিসারের কাছে গিয়ে নিজের বয়ান রেকর্ড করার কথা ছিল।