'গত সাত দশকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য পাকিস্তানের একমাত্র গৌরব হল সন্ত্রাসবাদ, জনজাতির নির্মূলীকরণ, মৌলবাদের বাড়বাড়ত্ব এবং গোপনে পারমাণবিক বাণিজ্য।' সন্ত্রাসবাদের প্রশ্নে রেকর্ড করা ভাষণে মুখ খুলেছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তার প্রতিবাদ করে পাকিস্তানকে এভাবেই কটাক্ষ ছুঁড়ে দিলেন রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি মিজিতো ভিনিতো।
নিজের বক্তব্য ইমরান দাবি করেন, জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত রাষ্ট্রসংঘের। জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের স্বাধীনতা ও অধিকার খর্ব করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। উপত্যকায় ভারতীয় বাহিনীর উপস্থিতি, সংখ্যালঘুদের প্রতি ব্যবহারের মতো নানা বিষয় নিয়ে যথারীতি মুখ খুলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও, কাশ্মীর একটি পারমাণবিক দ্বন্দ্বের জায়গায় পরিণত হচ্ছে বলে হুঁশিয়ারি দেন ইমরান খান। পাক প্রধানমন্ত্রীর দাবির প্রতিবাদ জানিয়ে এ দিন সভাকক্ষ ছাড়েন রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি মিজিতো ভিনিতো।
পরে ভারতের বক্তব্য পেশের সময় ইমরানের বক্তব্য উড়িয়ে দিয়ে মিজিতো ভিনিতো জানান, কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তাই সেখানকার কোনও বিষয়ে অন্য দেশের নাক গলানোর প্রয়োজন নেই। কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, 'এই সভাকে এমন একজনের মিথ্যা ভাষণ শুনতে হল, যাঁর নিজের স্বপক্ষে কিছু তুলে ধরার নেই, হর্ব করার মতো কোনও কৃতিত্ব নেই এবং বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য যুক্তিসঙ্গত কোনও পরামর্শ নেই। বদলে এই সভার মাধ্যমে ভুয়ো তথ্য পেশ, অন্য দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্ররোচনা এবং কুৎসা ছড়াতে দেখা গেল। যখন নিজের (পাক প্রধানমন্ত্রী) ভাষণ চালিয়ে গেলেন, তখন আমরা ভাবতে বাধ্য হচ্ছিলাম, উনি কি নিজের কথাই বলছেন?'
আরও পড়ুন: চিন-পাকিস্তানকে দুরমুশ করতে আজ রাষ্ট্রসংঘে মোদীর ভাষণ
এরপরই রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি মিজিতো ভিনিতো বসেন, 'গত সাত দশকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য পাকিস্তানের একমাত্র গৌরব হল সন্ত্রাসবাদ, জনজাতির নির্মূলীকরণ, মৌলবাদের বাড়বাড়ত্ব এবং গোপনে পারমাণবিক বাণিজ্য।'
ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসবাদকে প্রত্যক্ষভাবে মদত দেওয়ার জন্য পাকিস্তানকে নিশানা করেন ভারতীয় কূটনীতিক ভিনিতো। তিনি বলেন, 'এই দেশ (পাকিস্তান) ৩৯ বছর আগে দক্ষিণ এশিয়ায় গণহত্যা করেছিল। নিজেদের লোককেই মেরেছিল তারা। এই দেশই বারবার জঙ্গিদের অস্ত্র, টাকা ও অন্যান্য সবরকমের মদত যোগায়। এসবের একাধিক প্রমাণ রয়েছে। রাষ্ট্রসংঘ জানিয়েছে এই দেশেই সবথেকে বেশি জঙ্গি রয়েছে।'
একমাত্র সন্ত্রাসবাদকে মদত দেওয়ার বন্ধ করলে তবেই পাকিস্তান স্বাভাবিক হবে। নাহলে শুধু ভারত বা দক্ষিণ এশিয়া নয়, তা গোটা বিশ্বের পক্ষেই বিপদজনক বলে জানান ভারতীয় কূটনীতিক।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন