ভয়াবহ বন্যার কবলে পাকিস্তান। দেশের বিভিন্ন অংশ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার উদ্ধার ও ত্রাণ কাজে সেনাবাহিনীকে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাক সরকার। শনিবার পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এ তথ্য জানিয়েছেন। এক দশকেরও বেশি সময় পর দেশে এমন বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তিন কোটিরও বেশি মানুষ। ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির (এনডিএমএ) তথ্য অনুসারে, পাকিস্তানে বন্যার কারণে এখনও পর্যন্ত ৯৮২ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং গত ২৪ ঘন্টায় ৪৫ জন বন্যার কবলে পড়ে মারা গেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সানাউল্লাহ বলেন, “এক দশকেরও বেশি সময় পর দেশে এমন বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে এবং উদ্ধারকার্যে সেনা বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে।
দেশের প্রায় অর্ধেক জলমগ্ন
শুক্রবার জারি করা একটি সরকারী বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে সেনা সদর দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে সেনা মোতায়েন করার ব্যপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বন্যায় দেশের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং NDMA-এর মতে, ৩হাজার কিলোমিটার রাস্তা বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ১৪৯ টি সেতু ভেসে গেছে এবং সাতলক্ষ বাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় দেশের প্রায় অর্ধেক জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ১১০টি জেলায় ৫৭ লাখেরও বেশি মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: < Mann Ki Baat: অপুষ্টি দূরীকরণে একাধিক পদক্ষেপ, দেশের মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান মোদীর >
পাকিস্তানে অনেক জায়গায় বন্ধ রেলপরিষেবা
সিন্ধু ও বেলুচিস্তানে বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির তথ্য সামনে এসেছে এবং দেশের অধিকাংশ স্থানে রেল পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পাক পরিবেশমন্ত্রী শেরী রহমানের মতে, দেশে প্রতি বছর তিন থেকে চার দফায় বর্ষা আসত, কিন্তু এবার আট দফা বর্ষা এসেছে, আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ শুক্রবার দেশের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে একটি জরুরি বৈঠকে বসেন।
ক্ষতিগ্রস্ত তিন কোটির বেশি মানুষ
পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী চলতি বছর বন্যায় ক্ষয়ক্ষতিকে ২০১০-১১ সালের বন্যার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে”। বৈঠকে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, চীন, জাপান, কুয়েত, সংযুক্ত আরবআমীরশাহী তুরস্ক, দক্ষিণ কোরিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, বাহরাইন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, ওমান, কাতার, যুক্তরাজ্য এবং সৌদি আরবের কূটনীতিক, রাষ্ট্রদূত এবং হাইকমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন। শরীফ বলেন, আকস্মিক বন্যা ও বৃষ্টিতে তিন কোটির বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।