বালাকোটে ফের সক্রিয় হচ্ছে জঙ্গি শিবির। ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াতের এই দাবি নস্যাৎ করল পাকিস্তান। সেনা প্রধানের দাবি 'সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন' বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর।
Advertisment
এক্ষেত্রেও পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের হাতিয়ার কাশ্মীর। তাদের অভিযোগ, জম্মু-কাশ্মীর ভয়ঙ্করভাবে প্রত্য়েক দিন মানবাধিকার খর্ব হচ্ছে। সেখান থেকে নজর ঘোরাতেই ভারতের তরফে এই অভিযোগ করা হয়েছে। পাক বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ডঃ মহম্মদ ফয়সাল বলেন, "এই নেতিবাচক প্রচারের মাধ্যমে বিশ্বকে বিভ্রান্ত করার ভারতের যে প্রয়াস তা সফল হবে না। এই ধরণের মন্তব্য দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তিকে ব্যহত করতে পারে।"
পাকিস্তানের বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান হামলার সাত মাসের মধ্যেই ফের সক্রিয় হয়ে উঠছে জঙ্গি কর্যকলাপ। বালাকোট থেকে প্রায় পাঁচশোর অনুপ্রবেশকারী ইতিমধ্যেই ভারতে প্রবেশ করতে উদ্যত হয়েছে। সোমবার এমনটাই জানান ভারতের সেনা প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। তিনি বলেন, বলেন, “পাকিস্তান ফের বালাকোটকে সক্রিয় করে তুলছে। বালাকোট হামলার পর সেখানকার জায়গা যে বিনষ্ট হয়ে গিয়েছিল এটা তারই প্রমাণ। সেই কারণেই ওখানকার মানুষজন সব পালিয়ে গিয়েছিল এবং বালাকোট এখন ধীরে ধীরে সক্রিয় হয়ে উঠছে।”
Advertisment
পুলওয়ামাকাণ্ডের পর গত ফেব্রুয়ারিতে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বালাকোটে অভিযান চালায় ভারত। যা ঘিরে ভারত-পাক তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ভারতের দাবি, সেই অভিযানে বালাকোটের জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পাকিস্তানের জইশ-ই-মহম্মদের এই জঙ্গি ঘাঁটির পাঁচ থেকে ছ’টি ‘মিন পয়েন্ট অফ ইম্প্যাক্ট’ এর ছবি প্রকাশ করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, জইশ-ই-মহম্মদের প্রশিক্ষণ শিবিরটি প্রায় ৬ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত ছিল। প্রায় ৬০০ জন জঙ্গি সেখানে প্রশিক্ষণ নিত বলেও খবর। গোয়েন্দা কর্তাদের মতে, বিমান হামলার সময় বালাকোটে জঙ্গি নিয়োগের শেষ ধাপের কাজ চলায় জইশ-ই-মহম্মদের প্রতিষ্ঠাতা মৌলানা মাসুদ আজহারের ভাই মুফতি আবদুল রাউফ আসগরও সেখানে উপস্থিত ছিল।
আগস্ট মাসে জম্মু-কাশ্মীরের থেকে ৩৭০ ধারা রদ করার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্কের পারদ ফের বহুগুণ চড়েছে। মোদী সরকার জম্মু-কাশ্মীরের ‘বিশেষ রাজ্যের’ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার পরই এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে পাকিস্তান। এমনকী এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতেও আবেদন জানানো হয়। যদিও দিল্লি সম্পূর্ণ ঘটনাটিকে দেশের ‘আভ্যন্তরীণ বিষয়’ আখ্যা দিয়ে পাকিস্তানের সেই আবেদন নাকচ করে দেয়। ক্রমশ টানাপোড়েনের মধ্যে ফের বালাকোট রাষ্ট্রসংঘের সাধারনসভায় ইস্যু হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।