সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের প্রাক্কালে রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আশ্বাস দিয়েছেন সরকার সমস্ত বিষয়েই আলোচনা করতে প্রস্তুত। এদিকে বিরোধীরা দাবি করেছে, লোকসভার সাংসদ আটক ফারুক আবদু্ল্লাকে সংসদে হাজিরা দেওয়ার অনুমতি দিতে হবে। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সর্বদলীয় বৈঠকের সময়ে এই দাবি তোলা হয়।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই মোদীকে উদ্ধৃত করেছে। তিনি বলেছেন, সংসদের বিধি ও অনুশাসন মেনে সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনায় সরকার প্রস্তুত।
আবদুল্লা, চিদাম্বরমকে সংসদে হাজিরার অনুমতি দাবি বিরোধীদের
সরকারের ডাকা বৈঠকে বিরোধীরা আর্থিক মন্দা, কর্মহীনতা এবং কৃষিক্ষেত্রে সংকটের প্রসঙ্গ নিয়ে অধিবেশনে আলোচনার দাবি তুলেছেন বলে জানিয়েছেন লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী।
আরও পড়ুন, ক্যাব বা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে সরকার এত উদ্যোগী কেন?
সর্বদলীয় বৈঠকে ফারুক আবদুল্লার আটকের প্রসঙ্গ ওঠে। ন্যাশনাল কনফারেন্স সাংসদ হাসনান মাসুদি বলেন, সংসদের সদস্যদের অধিবেশনে যোগদান নিশ্চিত করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। রাজ্য সভায় বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, একজন সাংসদ কী করে বেআইনিভাবে আটক থাকতে পারেন! তাঁকে সংসদে যোগ দেবার অনুমতি দেওয়া উচিত।
কাশ্মীরের কঠোর জননিরাপত্তা আইনের আওতায় ফারুক আবদুল্লা আটক রয়েছেন। সংবিধানের ৩৭০ ধারার আওতায় জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পরই তাঁকে আটক করা হয়।
এদিকে কংগ্রেস দাবি জানিয়েছে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরমকে লোকসভায় হাজিরার অনুমতি দিতে হবে। আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় তিনি তিহার জেলে রয়েছেন। বৈঠকের পর গুলাম নবি আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, সংসদের অধিবেশনে মামলা চলাকালীন সাংসদদের হাজিরার অনুমতির উদাহরণ রয়েছে।
মোদী ছাড়া এদিনের বৈঠকে হাজির ছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এবং বেশ কিছু বিরোধী নেতা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাওয়ারচাঁদ গেহলোট, রাজ্যসভায়র সদস্য আনন্দ শর্মা, তৃণমূল নেতা ডেরেক ওব্রায়েন, এলজেপি নেতা চিরাগ পাসওয়ান, সমাজবাদী পার্টির নেতা রামগোপাল যাদব, তেলুগু দেশম পার্টির নেতা জয়দেব গাল্লা এবং ভি বিজয়সাই রেড্ডি সহ আরও অনেকে।
নাগরিকত্ব বিল পাশ করাতে চায় সরকার
সোমবার থেকে শুরু হওয়া সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে সরকারের লক্ষ্য থাকবে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, অযোধ্যা আইন সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অর্ডিন্যান্স পাশ করানো। এদিকে বিরোধীরা চাইবে এই অধিবেশনে আর্থিক মন্দা ও কর্মহীনতা নিয়ে সরকারকে কোণঠাসা করার। উঠবে কাশ্মীর প্রসঙ্গ ও দিল্লির দূষণও।
কেন্দ্র চাইবে আর্থিক মন্দা আটকাতে এবং অর্থনীতির পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে কর্পোরেট করছাড়ের বিষয়ে অর্ডিন্যান্স আনতে। সেপ্টেম্বরে আনা এই অর্ডিন্যান্সের জন্য ১৯৬১ সালের আয়কর আইন এবং ২০১৯ সালের ফিনান্স আইনের সংশোধন প্রয়োজন।
আরও পড়ুন, অযোধ্যা রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করছে মুসলিম ল বোর্ড ও জামিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ
এ ছাড়া সরকার চাইবে সেপ্টেম্বরে আনা ই সিগারেট ও সেজাতীয় সমস্ত দ্রব্য বিক্রি, তৈরি ও মজুত নিষিদ্ধ করার অর্ডিন্যান্স পাশ করাতে।
২৬ নভেম্বর সংবিধান দিবস উপলক্ষে সংসদের দুই কক্ষের যৌথ অধিবেশন হবে। সেদিন ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
শীতকালীন অধিবেশন শেষ হবে ১৩ ডিসেম্বর।