বেআইনি ভাবে বুলডোজার চালানোর বিহার পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করল পাটনা হাইকোর্ট। এক মহিলার বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় মুখ পুড়ল বিহার পুলিশের। বিচারপতি সরাসরি বিহার পুলিশের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, 'রাজ্যের দেওয়ানি আদালতগুলি কী বন্ধ হয়ে গিয়েছে? পুলিশ, ভূমি মাফিয়াদের সঙ্গে যোগসাজশে, কোনও রকম আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে'।
ভুমি ও রাজস্ব দফতর ও পুলিশের কর্মকর্তাদের তলব করে ৮ ডিসেম্বর আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন বিচারপতি সন্দীপ কুমার । শুক্রবার ভাইরাল হওয়া তার একটি গুরুত্বপূর্ণ আদেশে বিচারপতি সন্দীপ কুমার এই কথা বলেন। তিনি বলেন, পুলিশ আধিকারিকদের হলফনামা পড়ে মনে হচ্ছে সব পুলিশকর্মী কিছু ভূমি মাফিয়ার সঙ্গে যোগসাজশ করছেন। তারা আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে অবৈধভাবে আবেদনকারীর বাড়ি ভেঙে দিয়েছে্ন।
পাটনা হাইকোর্ট এক মহিলার বাড়ি ভাঙচুরের জন্য বিহার পুলিশকে তিরস্কার করেছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত মন্তব্য করেন, বিহার পুলিশ কার প্রতিনিধিত্ব করে, দেশের না কোন ব্যক্তির? পাটনার বিজয় নগরের স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন এক মহিলা। তিনি অভিযোগ করেছিলেন যে জমি মাফিয়াদের নির্দেশে জমি খালি করার জন্য তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছিল। পুলিশ আধিকারিকের নির্দেশে স্থানীয় থানার পুলিশ বাড়িটি ভেঙে দেয়। আদালতে অভিযোগের পর পাল্টা হলফনামা দেন থানার আধিকারিক। বিচারপতি সন্দীপ কুমারের একটি বেঞ্চ প্রাথমিকভাবে দেখেছে যে রাজ্য পুলিশ আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বেআইনিভাবে বাড়িটি ভেঙে দিয়েছে। আগামী ৮ ডিসেম্বর শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: < অবশেষে নির্বাচন দিল্লিতে, কার দখলে থাকবে এমসিডি, তুঙ্গে চর্চা >
জমি সংক্রান্ত বিরোধের অজুহাতে বাড়ি ভাঙার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে
পাটনা হাইকোর্ট তার পর্যবেক্ষণে বলেছে, 'এই ধরনের পুলিশ ও অপরাধমূলক সম্পর্ক আদালতকে উপহাস করেছে। জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির অজুহাতে একজন মহিলার বাড়ি ভাঙার এই ক্ষমতা পুলিশকে কে দিয়েছে? কোন আইন পুলিশকে এই ধরনের কাজের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে?'
বিচারপতি সন্দীপ কুমার বলেন, পুলিশ আবেদনকারী ওই মহিলার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। আর এসবের আড়ালে তার বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এই মামলায় পাঁচ প্রভাবশালী ব্যক্তির যোগসাজশের প্রমাণও মিলেছে। আবেদনে সকলকে ভূমি মাফিয়া হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। আদালত এই মামলায় সকলকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানাও নির্দেশ দিয়েছে। আগামী ৮ ডিসেম্বর ফের শুনানির সিন ধার্য করেছে আদালত।