করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে লকডাউন দেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্ষুদ্র-মাঝারি ও অতি ক্ষুদ্র শিল্পক্ষেত্র (এমএসএমই)। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেই ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষেত্রগুলির ক্ষত সারিয়ে তুলতে এই এমএসএমই খাতে ২০ হাজার কোটি টাকা ঢালার অনুমতি দেওয়া হল বৈঠকে।
সংবাদমাধ্যমকে কেন্দ্রীয় তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভেদকর বলেন, "মন্ত্রিপরিষদের তরফে আজ ক্ষুদ্র ও মাঝারি ও অতি ক্ষুদ্র (এমএসএমই) শিল্পক্ষেত্রে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁদের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা তহবিল অনুমোদন করা হয়েছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দু'লক্ষ এমএসএমই উপকৃত হবে।" প্রসঙ্গত, এর আগে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের ঘোষণা করা ২০ লক্ষ কোটির প্যাকেজের মধ্যে মোট ৩ লক্ষ কোটি টাকার পুনরুজ্জীবন প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল এমএসএমই-র জন্য।
সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দেওয়ার সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি বলেন যে মন্ত্রিপরিষদের পক্ষ থেকে এমএসএমই-এর জন্য দুটি প্যাকেজের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, "অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত এমএসএমইগুলির জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা এবং একাধিক তহবিলের একটি তহবিল তৈরি করে তার মাধ্যমে ৫০ হাজার কোটির 'ইক্যুইটি ইনফিউশন' করা হবে।" মাঝারি শিল্প উদ্যোগের ক্ষেত্রে টার্নওভারের সীমা বাড়িয়ে ২৫০ কোটি টাকা এবং বিনিয়োগের সীমা বাড়িয়ে ৫০ কোটি করা হয়েছে।
অন্যদিকে কৃষকদের সহায়তা করতে ১৪টি খারিফ ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে বাড়িয়ে তা করা হল ৫০ থেকে ৮৩ শতাংশ। ২০২০-২১ শস্য বছরে ধানের ক্ষেত্রে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য প্রতি কুইন্টাল ৫৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৮৬৮ টাকা করেছে এবং তুলোর ক্ষেত্রে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য প্রতি কুইন্টাল ২৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫৫১৫ টাকা করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নরেন্দ্র তোমর বলেন, "কৃষকরা আরও বেশি সময় পাবেন তাঁদের ঋণ শোধ করার। আগস্ট মাস অবধি সেই সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে।"
করোনা সংক্রমণ রুখতে দু'মাসে কঠোর লকডাউনের পর আজ থেকে পঞ্চম দফার লকডাউনের 'আনলক ১' পর্যায় শুরু হল দেশে। লকডাউন নিয়মের ফাঁস আলগা করে দেশকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই আবহে দ্বিতীয় মোদী সরকারের এক বছর পূর্তির পর এই প্রথম আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেন নরেন্দ্র মোদী।
আরও পড়ুন, চার রাজ্যে বাড়ল লকডাউন, ‘খুব সতর্ক থাকুন’ আর্জি মোদীর
জানা গিয়েছে সোমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক ছাড়াও সুরক্ষা সম্পর্কিত মন্ত্রিপরিষদ কমিটি এবং অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটিরও সঙ্গে পৃথক বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এছাড়াও জানুয়ারি-মার্চ মাসে জিডিপির এই বিশাল পতন (৩.১ শতাংশ) এবং চিনের সীমান্তে যে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে বারংবার সেই বিষয় নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন, করোনায় মৃত রোগীকে দাহ পরিবারের, হাসপাতালের ফোন ‘রোগী সুস্থ আছে’!
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও লকডাউনে দেশে অর্থনীতির অবস্থা বেহাল। গত ১১ বছরের মধ্যে বর্তমানে দেশের আর্থিক বৃদ্ধি সবচেয়ে কম। এরকম এক পরিস্থিতিতে আনলক-১ এ কীভাবে দেশজুড়ে অর্থনৈতিক কাজকর্ম ফের চালু করা যায় তা নিয়েও আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতে এখনও করোনার দাপট জারি রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৩৯২ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ১ লক্ষ ৯০ হাজার ৫৩৫ জনে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন