করোনা ও লকডাউন পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আজ দেশের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠক করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ৩ মে-র পর লকডাউন জারি থাকবে, নাকি পর্যায়ক্রমিকভাবে তা শিথিল করা হবে? তার রূপরেখা নির্ধারণেই মূলত এই বৈঠক বলে জানা গিয়েছে। গত ২২ মার্চ থেকে এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে চতুর্থবার মোদীর ভিডিয়ো সাক্ষাৎ। পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে বিশেষ ট্রেন, হটস্পট বা কনটেনমেন্ট নয় এমন জায়গায় আরও বেশি অর্থনৈতিক কাজকর্মে ছাড়, ছোট ব্যবসায়ী ও করোনা মোকাবিলার জন্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ, আরও বেশি পরিমানে টেস্ট কিট, পিপিই ও ভেন্টিলেটরের আয়োজন- এ দিনের বৈঠকে রাজ্যগুলির তরফে মূলত এই চার দাবি কেন্দ্রের কাছে পেশ করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
গতকালই রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, 'রাজস্ব নেই। কোষগার প্রায় শূন্য। এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হটস্পট বা কনটেনমেন্ট জোন ছাড়া বাকি অংশে লকডাউনে ছাড় বৃদ্ধি করা উচিত। লকডাউন গাইডলাইন নিয়ে বিবেচনা করা প্রয়োজন।' একই দাবি ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রীর ভূপেশ বাঘেলেরও। এক সপ্তাহ আগেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে বাঘেল মিষ্টির দোকান, গাড়ি, ইলেকট্রনিক শো-রুম, মেরামতির দোকান ও খুচরো পণ্য বিক্রির ছাড়পত্রের দাবি জানিয়েছিলেন। এছাড়াও ৩০ হাজার কোটির আর্থিক প্যাকেজেরও দাবি জানানো হয়।
ভাইরাস বিধ্বস্ত মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী আবার পরিয়ায়ীদের ঘরে ফেরাতে বিশেষ ট্রেন বা বাসের দাবি করেছেন। গুজরাট ও পাঞ্জাবের তরফে আর্থিক সহায়তার দাবি তোলা হয়েছে। রাজ্যের কেন্দ্রীয় দল পাঠানোকে কেন্দ্র করে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন। আগেই মোদীকে চিঠি লিখে রাজ্যের বকেয়া পাওনার দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। এ দিন ফের একবার টেস্ট কিট সহ বকেয়া আর্থিক দাবিতে সরব হতে দেখা যেতে পারে তাঁকে।
আরও পড়ুন- ‘বৈষম্য না রেখে’ করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার নির্দেশ আরএসএস প্রধানের
পরিস্থিতি পর্যালোচনার রবিবার সব রাজ্যের মুখ্য সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেন ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা। লকডাউন অনন্তকাল জারি থাকতে পারে না। কিন্তু, লকডাউন শিথিলের পর যে বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে- বৈঠকে রাজ্যগুলিকে তা মনে করিয়ে দেওয়া হয়। সূত্র মারফত জানা যায়, সংক্রমণের একটি অনুমানির পরিসংখ্যানও পেশ করা হয় সেখানে। বলা হয়েছে যে, ১৫ মে-র পর্যন্ত ভারতে কোভিড-১৯ সংক্রমণের সংখ্যা ৬৫ হাজার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। বর্তমানে সংক্রমণ দ্বিগুণ হচ্ছে ১০-১২ দিনে। অগাস্টের ১৫ তারিখ সংক্রমণ ছুঁতে পারে ২৭৪ কোটি। জুনের শেষের দিকে দেশে রোজ প্রায় ১ লক্ষ মানুষ করোনা সংক্রামিত হবেন।
বৈঠকে কেন্দ্র রাজ্যগুলিতে সতর্ক তাকার কথা জানিয়েছে। বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য রাজ্যের বিষয়। সুতরাং, করোনার মোকাবিলা নানা প্রাসঙ্গিগ পদক্ষেপ সতর্কতার সঙ্গে রাজ্যগুলিকতকেই বলবৎ করতে হবে। মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যা না হলে অনুমানির পরিসংখ্যান আরও বাড়তে পারে বলে রাজ্যগুলিকে বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন আগেই পরিসংখ্যান তুলে ধরে করোনা মোকাবিলায় ভারতের পরিস্থিতি নিয়ে স্বস্থি প্রকাশ করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, ভারতে করোনায় মৃত্যুর হার বিশ্বের নিরিখে অনেকটাই কম। ভাইরাস দ্বিগুণ হারে ছড়াতেও বেশি সময় লাগছে। যা লকডাউনের সুফল বলেই মনে করেন হর্ষবর্ধন।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন