করোনার জেরে ধুঁকছে দেশের অর্থনীতি। আর্থিক বৃদ্ধির হার ক্রমশ তলানিতে। এই পরিস্থিতিতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে মরিয়া মোদী সরকার। আরও সক্রিয় পন্থার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কীভাবে আকৃষ্ট করা যায় তারই কৌশল নিরুপণে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। খনিজ ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির বিষয়েও পর্যালোচনা করা হয়।
বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যাতে শিল্প সংস্থাগুলোকে কোনও রকম অসুবিধার মুখোমুখি না হতে হয় তার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র সহ সব সমস্যার সমাধান মন্ত্রকগুলিকে অতি সক্রিয়তার সঙ্গে করতে হবে বলে জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর প্রকাশিত বিবৃতিতে একথা উল্লেখ রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী ছাড়াও বৈঠকে ছিলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন, অর্থমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, বানিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল সহ কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষ আমলারা। লকডাউনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্পগুলি আর্থিক সহায়তার বিষয়টি ক্রমশ জোরাল হচ্ছে। তার মধ্যেই এই বৈঠক খুবই গুরুত্ববাহী।
পিএমও-এর বিবৃতিতে উল্লেখ, 'বিনিয়োগ আকর্ষণে বর্তমান শিল্প পরিকাঠামোকে তুলে ধরা ও আর্থিক সহায়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।' বিদেশি বিনিয়োগ টানতে কেন্দ্রীয় সরকার বর্তমান নিয়ম-বিধি কিছুটা শিথিল করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়াও বলা হয়েছে যে, 'বিনিয়োগ আকর্ষণই এখনই মূল লক্ষ্য।' এবিষয়ে রাজ্যগুলির সঙ্গে আগেই একপ্রস্থ আলোচনা হয়েছে বলে জানানো হয়।
করোনা ও লকডাউনের জেরে ভারতীয় অর্থনীতির বৃদ্ধি ধাক্কা খাবে। এই অবস্থায় ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্পগুলোর অস্তিত্ব বজায়ে আর্থিক সহায়তার বিশেষ প্রয়োজন বলেই মনে করেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। যদিও, আর্থিক সামঞ্জস্যতা বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সরকারকে জনসাধারণের ব্যয় বৃদ্ধিতেও নজর দিতে হবে।
আরও পড়ুন- বেতন নিচ্ছেন না মুকেশ আম্বানি, সংস্থার অধিকাংশ কর্মীর মাস মাইনেয় কাট ছাঁট
ক্রাইসিলের সাম্প্রতিকতম গবেষণা বলছে, ভারতে কোভিড ক্ষতের প্রভাব এতটাই গাঢ় হবে, যে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হারে স্থায়ীভাবেই ৪ শতাংশ কমার আশঙ্কা রয়েছে। অর্থাৎ কোভিড বিপর্যয় কেটে গেলেও আর্থিক ভাবে বেশ কিছু ক্ষতি অপূরণীয়ই থেকে যাবে, যা প্রায় ৪ শতাংশ জিডিপি-এর সমান। ক্রাইসিলের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ধর্মকৃতি যোশী জানিয়েছেন, সারা বিশ্বজুড়ে ২০০৮ সালে যে অর্থনৈতিক সংকট এসেছিল, কোভিড পরিস্থিতি তাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে।
নানা অর্থনৈতিক রেখাচিত্র দিয়ে অঙ্ক কষে দেখানো হয়েছে আর্থিক ক্ষতির হিসাব। তবে এই সংকট থেকে বেরোনোর একটি শর্তসাপেক্ষ উপায়ও বাতলেছে ক্রাইসিল। ২০২৪ পর্যন্ত আর্থিক বৃদ্ধির হার লাগাতার ৮.৫ শতাংশের ওপর রাখতে পারলে তবেই এই শোচনীয় আর্থিক সংকট থেকে বেরোতে পারবে ভারত, এমনটাই বলা হয়েছে। তবে বার্ষিক ৮.৫ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধির হার ভারতের ইতিহাসে বেনজির।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন