খরচ ৭৮ হাজার কোটি টাকা! ভারতীয় রেলের নয়া সিগন্যালিং পদ্ধতিতে ‘না’ মোদির

ইউরোপের ট্রেনের সিগন্যালিং পদ্ধতির আদলে এ দেশে নতুন সিগন্যাল পদ্ধতির জন্য মুখিয়ে ছিল ভারতীয় রেল। কিন্তু এজন্য গুণতে হবে প্রায় ৭৮ হাজার কোটি টাকা। এত ব্যয় সাপেক্ষ প্রকল্প এখনই হাতে নিতে নারাজ প্রধানমন্ত্রী।

ইউরোপের ট্রেনের সিগন্যালিং পদ্ধতির আদলে এ দেশে নতুন সিগন্যাল পদ্ধতির জন্য মুখিয়ে ছিল ভারতীয় রেল। কিন্তু এজন্য গুণতে হবে প্রায় ৭৮ হাজার কোটি টাকা। এত ব্যয় সাপেক্ষ প্রকল্প এখনই হাতে নিতে নারাজ প্রধানমন্ত্রী।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
pm narendra modi

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রতীকী ছবি।

নয়া অত্যাধুনিক সিগন্যালিং পদ্ধতি থেকে আপাতত মুখ ফেরাতে হচ্ছে ভারতীয় রেলকে। এ প্রকল্পের সমর্থনে রেলমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল প্রভূত চেষ্টা চরিত্র করলেও, প্রধানমন্ত্রী তাতে নারাজ। গত ২৬ মার্চের বৈঠকে নয়া প্রকল্প নিয়ে সাফ না বলে দিয়েছেন তিনি।

Advertisment

ইউরোপে ট্রেনের সিগন্যালিং পদ্ধতির আদলে এ দেশে নতুন সিগন্যাল পদ্ধতির জন্য মুখিয়ে ছিল ভারতীয় রেল। কিন্তু এজন্য গুণতে হবে প্রায় ৭৮ হাজার কোটি টাকা। এত ব্যয় সাপেক্ষ প্রকল্প তাই হাতে নিতে নারাজ প্রধানমন্ত্রী। গত ২৬ মার্চ রেলবোর্ডের সঙ্গে বৈঠকে এই প্রকল্পের কাজ বাতিল করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।

তবে শুধু এত খরচের জন্যই ইউরোপিয়ান ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম-লেভেল ২ পদ্ধতির আদলে ভারতীয় রেলে সিগন্যালিং পদ্ধতির সিদ্ধান্ত বাতিল করার যে সিদ্ধান্ত নেননি প্রধানমন্ত্রী, তাও তিনি জানিয়েছেন। সাধারণত এই সিগন্যালিং পদ্ধতি বিশ্বে দ্রুতগামী ট্রেনের জন্যই কার্যকরী। সেক্ষেত্রে ভারতীয় পরিস্থিতিতে এ ধরনের সিগন্যালিং পদ্ধতি যে খুব একটা কাজে লাগবে না সে ব্যাপারে মোদির সঙ্গে অনেকেই একমত হয়েছেন। এ ব্যাপারে, রেলমন্ত্রকের অর্থ দফতরই লাল পতাকা দেখিয়েছে। অন্যদিকে ভবিষ্যতে দেশীয় প্রযুক্তির সাহায্যে যাতে রেলের সিগন্যালিং পদ্ধতি আপগ্রেড করা যায় সে ব্যাপারে সেদিনের বৈঠকে ভারতীয় রেলকে মোদি পরামর্শ দিয়েছেন বলে সূত্র মারফৎ জানা গেছে।

Advertisment

আরও পড়ুন, ট্রেনের কামরায় এলাহি বেডরুম! এমনও হয়? ভারতীয় রেলের নয়া উদ্যোগ

ইউরোপিয়ান ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম-লেভেল ২ নিয়ে ভারতীয় রেলের একটি প্রজেক্ট রিপোর্ট বানিয়েছে আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়াং। ওই রিপোর্টে প্রায় ৭৮ হাজার কোটি টাকা খরচের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্টে জানা গেছে, সিমেন্স, থালস, অ্যালস্টম, বোম্বারাইডার, আনসালডো, এসটিএস, সিএএফ, এবং মেম্যাক গ্রুপের মতো ৮টি বিদেশি কোম্পানি চুক্তি পাওয়ার দৌড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

ইউরোপিয়ান ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম-লেভেল ২ সিস্টেমটি রেললাইনের সঙ্গে ইনস্টল করা থাকে, যা লোকোমেটিভ ইঞ্জিনে থাকা কম্পিউটারের মাধ্যমে সিগন্যাল পাঠাতে পারে। এই পদ্ধতিতে ক্রমাগত সিগন্যাল আপটেড হতে থাকে। এমনকি এই সংকেত ক্রমাগত ওয়ারলেস পদ্ধতিতে ট্রেনের চালকের কাছে চলে যায়। দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য এ ধরনের অত্যাধুনিক সিগন্যাল খুব কাজে দেয়।

এত ব্যয়সাপক্ষে প্রযুক্তির থেকে দেশীয় প্রযুক্তিতেই ভর করে ভারতীয় রেলের অগ্রগতির কথা যেমন বলেছেন মোদি। তেমনই, এ ধরনের অত্যাধুনিক পদ্ধতি আদৌ কতটা এ দেশের জন্য উপযোগী হবে, সেকথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। ফলে শেষপর্যন্ত ইউরোপিয়ান ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম-লেভেল ২-এর মতো অত্যাধুনিক সিগন্যালিং পদ্ধতি যে দূরাগত, তা বলাই বাহুল্য।

indian railway PM Narendra Modi