চাঁদের মাটিতে নামবে ভারত, অশোক স্তম্ভের ছাপ পড়বে প্রজ্ঞানের গমনে, অজানা রহস্য উদঘাটন করবে ভারত, সেই অপেক্ষায় প্রহর গুনছিল গোটা দেশ। শেষ পনেরো মিনিটের ল্যান্ডিংকে লাইভ স্ট্রিমিং করে গোটা পৃথিবীর কাছে তুলে ধরে ইসরো। আর এই ১৫ মিনিটের সাক্ষী থাকতে ইসরো সেন্টারে হাজির হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দেশের জনা কয়েক স্কুল পড়ুয়া। কিন্তু ল্যান্ডারের সঙ্গে শেষ মুহূর্তে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সংযোগ। মাথায় হাত দিয়ে হতাশ হয়ে পড়েন বিজ্ঞানীরা। চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়েন তাঁরা। ঘোর আলোচনা করতে থাকেন। বারবার ল্যান্ডারকে কম্যান্ড পাঠাতে থাকেন। কিন্তু ল্যান্ডার সাড়া দেয় না।
আরও পড়ুন: তীরে এসে তরী ডুবল? হারিয়ে গেল বিক্রম
এমন সময় নিজের চেয়ার ছেড়ে বিজ্ঞানীদের কাছে এসে হতাশ না হওয়ার বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর দেখা করেন চন্দ্র অভিযান দেখতে আসা পড়ুয়াদের সঙ্গে। তাদেরকেও হারতে মানা করেন তিনি। সাফল্যের চাবিকাঠি খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন তিনি। সেটি শুনে এক ছাত্র প্রশ্ন করে ওঠে, "কীভাবে লক্ষ্যে পৌঁছবে স্যার?" অনেক বড় কোনো লক্ষ্য থাকলে সেটিকে ভেঙে নিজের মত করে ছোট করে নিতে বলেন তিনি। "পরিশ্রম করে যা অর্জন করতে পেরেছ তা এক এক করে জুড়ে বড় লক্ষ্যে পৌঁছাও। ব্যর্থ হলে তার দুঃখ রাতারাতি মুছে ফেলো। হতাশ হবে না জীবনে।"
পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী
এর আগেই বিজ্ঞানীদের মনোবল শক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি চেয়ারম্যান কে শিভনের পিঠ চাপড়ে বলেন, "হতাশ হবেন না। পাশে আছি আমি। জীবনে চড়াই উতরাই থাকে। আপনারা কেন নিজেদের ছোট করছেন? আপনাদের জন্য গোটা দেশ গর্বিত। মানবজাতির সেবায় নিয়োজিত আপনারা। যোগাযোগ করা গেলে শুরু হবে কাজ । আশা রাখুন। পিছিয়ে যাবেন না।"
হাতে বাকি ছিল মাত্র দু'মিনিট। কিন্তু সেই দু মিনিট আর সফলভাবে অতিক্রম করা গেল না শনিবার মধ্যরাতে। জানা যাচ্ছে, গতিবেগ বেশি থাকার কারণে সফট ল্যান্ডিং সম্ভবত সম্ভব হয়নি চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডার বিক্রমের পক্ষে। ইসরো এখনো খোলসা করে কিছু জানায়নি, তবে কে শিভন জানান, চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ২.১ কিলোমিটার উচ্চতায় স্বাভাবিক ছিল বিক্রমের অবতরণ প্রক্রিয়া। তারপর আচমকাই ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কী হয়েছে ল্যান্ডার বিক্রমের? সেটা তথ্য বিশ্লেষণ করে বলা সম্ভব হবে।