ঐতিহাসিক মুহূর্ত ছুঁতে পারল না ইসরো? যে পনেরো মিনিটের দুশ্চিন্তা প্রতি মুহূর্তে গ্রাস করছিল বিজ্ঞানীদের, তা সত্যি হয়ে দাঁড়াল? কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, ল্যান্ডিং এর সময় চন্দ্রযানের ল্যান্ডার বিক্রমের গতিবেগ ছিল প্রায় ছয়শো কিমি প্রতি ঘন্টা, যেখানে প্রয়োজনীয় গতিবেগ ছিল সাত কিমি প্রতি ঘন্টা। মনে করা হচ্ছে, চাঁদের পাথরের আঘাত লেগেই বিনষ্ট হয়ে যায় ল্যান্ডার। যার ফলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পৃথিবীর সঙ্গে বিক্রমের যোগাযোগ। কিন্তু ঠিক কী ঘটেছে, তা নিয়ে এখনও চলছে পর্যালোচনা।
এত দিন ধরে তিল তিল করে গড়ে তোলা বিপুল খরচ সাপেক্ষ স্বপ্ন, ল্যান্ডারের সঙ্গে এক লহমায় ভেঙে চুরমার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে গোটা দেশ। ইসরোর মিশন কন্ট্রোল সেন্টার থেকে জানানো হয়েছে, চাঁদের মাটি থেকে যখন ২,১ কিলোমিটার উচ্চতায় ছিল বিক্রম, তখন থেকেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এখনও অবধি যে তথ্য এসে পৌঁছেছে, তা নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে।
আরও পড়ুন: ‘ভেঙে পড়ার কিছু নেই, বিশ্বাস রেখে এগিয়ে যান’, বিজ্ঞানীদের ফের আশ্বাস মোদীর
আপাতত চাঁদের দক্ষিণাংশে অভিযানের স্বপ্ন, স্বপ্নই রয়ে গেল ভারতের। কোথায় গেল ল্যান্ডার? কেন বিজ্ঞানীদের ডাকে সাড়া দিচ্ছে না সে? পনেরো মিনিটের দুশ্চিন্তা কি সত্যি হলো তাহলে? একাধিক প্রশ্ন এখন গোটা দেশ জুড়ে। ৭ সেপ্টেম্বর ইসরোর অন্দরমহলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মৃদু হাসিমুখেই সান্ত্বনা বাক্য আওড়ালেন বটে, কিন্তু তাতে কাজ হলো বলে মনে হয় না। তিনি হাল ছাড়েন নি, কিন্তু তাঁর কথায় হতাশা কাটল না ইসরোর বিজ্ঞানীদের। যাঁদের হাতে গত দশ বছর ধরে তিল তিল করে গড়ে উঠেছিল চন্দ্রযান-২, তার ল্যান্ডার বিক্রম, এবং রোভার প্রজ্ঞান।
আরও পড়ুন: চন্দ্রযান-২: একাধারে ল্যান্ডার, অরবিটার, রোভার; চাঁদের মিশন কয় প্রকার?
অবতরণের নির্ধারিত সময়ের কুড়ি মিনিট অতিক্রম হওয়ার পর ল্যান্ডার বিক্রমের অবস্থান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে গম্ভীর মুখে আপডেট দিয়ে যান ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিভন। তারপরই নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। বিজ্ঞানীদের মন শক্ত করতে তিনি বলেন, "জীবনে চড়াই উতরাই এসেই থাকে। আপনার কেন নিজেদের ছোট করছেন? আপনারা গোটা দেশের গর্ব। মানবজাতির সেবায় নিয়োজিত। যোগাযোগ করা গেলে শুরু হবে কাজ। আশা রাখুন। পিছিয়ে যাবেন না।" কিন্ত তৎসত্ত্বেও ইসরো কন্ট্রোল সেন্টারের চারদিকে ছড়ানো হতাশ, মলিন মুখগুলোতে হাসি ফুটল কই?