গুজরাটের মোরবির মাচ্ছু নদীতে এখনও জারি রয়েছে তল্লাশি অভিযান। এরই মধ্যে মঙ্গলবার সরেজমিনে উদ্ধারকাজ খতিয়ে দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মোরবির ব্রিজ বিপর্যয়স্থল ঘুরে দেখার পর মোদী যান স্থানীয় সিভিল হাসপাতালে। সেখানেই সেতু ভেঙে আহত বেশ কয়েকজনের চিকিৎসা চলছে। তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছেন মোদী। কথা বলেছেন চিকিৎসকদের সঙ্গেও। মোরবিতে সেতু বিপর্যের জেরে এখন বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। এদিন তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের আশ্বস করা রচেষ্টা করেছেন মোদী। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এদিন আগাগোড়া দেখ গিয়েছে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলকে।
বিরাট বিপর্যয় গুজরাটে। মোরবিতে ঝুলন্ত সেতু ভেঙে মৃত্যু মিছিল অব্যাহত। এখনও পর্যন্ত মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় ১৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ৪০ জন মহিলা ও ৩৪টি শিশুও রয়েছে। সোমবার মোরবির স্থানীয় প্রশাসনিক আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন, এখনও কমপক্ষে দু'জনের খোঁজ মেলেনি। এর আগের দিন, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল বলেছিলেন, "আমরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে কৃতজ্ঞ। এই কঠিন সময়ে উনি আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। গুজরাটকে এই শোক থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার জন্য পথ দেখাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।"
গুজরাটে বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক মুখে এই বিপর্যয়ে স্বভাবতই বেশ অস্বস্তিতে শাসকদল বিজেপি। বিরোধীরা এই দুর্ঘটনা নিয়ে রাজ্য সরকারকেই দায়ী করেছে। ভোটের মুখে চমকের রাজনীতি করতে গিয়ে ফিট সার্টিফিকেট ছাড়াই তড়িঘড়ি ব্রিজটি খুলে দেওয়া হয়েছিল বলে তোপ বিরোধীদের। গুজরাচে এবার বিজেপিকে জোর ধাক্কা দিতে মরিয়া প্রচার চালাচ্চে আম আদমি পার্টি।
আম আদমি পার্টির প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, ''গুজরাটের মোরবি ব্রিজ ভেঙে এ পর্যন্ত ১৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটি বিশাল দুর্নীতির ফল। কেন একটি ঘড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থাকে এটি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ওদের তো সেতু তৈরির অভিজ্ঞতাই ছিল না?"
আরও পড়ুন- ব্রিটিশ আমলের মোরবি ব্রিজ, একসঙ্গে ১৫ জনের ওঠার অনুমতি ছিল, বলছে পুরনথিই
এদিকে, গুজরাটে ব্রিজ বিপর্যের জল গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। ব্রিজ দুর্ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের আবেদন করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। আগামী ১৪ নভেম্বর সেই আবেদনটি শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করেছে শীর্ষ আদালত। এদিকে, মঙ্গলবারও মোরবির মাচ্ছু নদীতে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এনডিআরএফের কমান্ড্যান্ট, ভিভিএন প্রসন্ন কুমার সংবাদসংস্থা এএনআইকে বলেন, "নদীর তলার দিকে এখনও বেশ কয়েকটি মৃতদেহ থাকতে পারে। জলের আরও গভীরে ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।"