Advertisment

এনকাউন্টারে খতম হায়দরাবাদ ধর্ষণকাণ্ডের চার অভিযুক্ত, পুলিশের প্রশংসায় ধর্ষিতার বাবা

শুক্রবার ভোররাতে অভিযুক্তদের নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করছিল পুলিশ। সেই সময়ই ওই চার অভিযুক্ত পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

এনকাউন্টারে খতম হায়দরাবাদ ধর্ষণকাণ্ডের চার অভিযুক্ত।

পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হায়দরাবাদে পশু চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার চার অভিযুক্ত। শুক্রবার পুলিশের সঙ্গে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সাইবারাবাদ পুলিশ কমিশনার ভি সি সজ্জনার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, 'এদিন ভোররাতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তাতেই মৃত্যু হয় চারজন অভিযুক্তের।'

Advertisment

গত ২৭ নভেম্বর সামসাবাদ টোলপ্লাজার কাছে পেশায় পশু চিকিৎসক মহিলাকে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারা হয়। ২৯ নভেম্বর অভিযুক্ত চার জনকেই গ্রেফতার করে তেলেঙ্গানা পুলিশ। কড়া সুরক্ষায় অভিযুক্তদের চেরলাপল্লি কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছিল। বুধবার রাতে ঠিক হয় হয়েছিল? শুক্রবার ভোররাতে অভিযুক্তদের নিয়ে সেই ঘটনারই পুনর্নির্মাণ করছিল পুলিশ। সেই সময়ই ওই চার অভিযুক্ত পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেই সংঘর্ষের মৃত্যু হয় হায়দরাবাদে পশু চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত চারজনের। কেন হঠাৎ ভোররাতে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছিল তা  নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, সকালে পুনর্নির্মাণ করলে জনতার অসন্তোষে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারত। যা এড়াতেই ভোররাতে পুনর্নির্মাণের সিদ্ধান্ত।

আরও পড়ুন: হায়দরাবাদের পুনরাবৃত্তি বাংলাতেও? আমবাগানে উদ্ধার তরুণীর পোড়া দেহ

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মহিলা পশু চিকিৎসকে প্রথমে অপহরণ করে ধর্ষণ করে এই চার অভিযুক্ত। পরে শ্বাসরোধ করে খুন করে চিকিৎসকের দেহ পুড়িয়ে দেয় তারা। রীতিমত পরিকল্পনা করেই ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছিল মহিলা পশু চিকিৎসককে। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ মহিলা পশু চিকিৎসককে সামসাবাদ টোল প্লাজায় স্কুটি পার্কিং করতে দেখেন ওই চার যুবক। তারা তখনই তরুণীকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করে। রাত ৯টার পর নিজের কাজ সেরে আবার টোল প্লাজায় ফেরেন যুবতী চিকিৎসক। তিনি দেখেন স্কুটির চাকা ফুটো হয়ে গিয়েছে। কীভাবে বাড়ি ফিরবেন, কিছুই বুঝতে পারছিলেন না তিনি। সেই সময় দুই অভিযুক্ত তাঁর কাছে আসে। স্কুটি সারিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয় তারা। দু’জনে গ্যারেজ খোঁজার অছিলায় স্কুটি নিয়ে যায়। বেশ কিছুক্ষণ পর তারা স্কুটি নিয়ে ফিরে আসে। দোকান বন্ধ বলে চিকিৎসককে জানানো হয়। তারপরই চলে পাশবিক অত্যাচার।

আরও পড়ুন: ধর্ষণে মৃত্যুদণ্ড কিংবা গণপিটুনির দাবি: হাত ধুয়ে ফেলার রাজনৈতিক চেষ্টা

এই ঘটনায় তোলপাড় হয় গোটা দেশ। সিসিটিভি দেখে ঘটনার দু'দিন পর পুলিশ চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি জেরায় অভিযুক্তরা তাদের দোষ কবুল করেছিল। আদালতের নির্দেশে হেফাজতে ছিল ওই চারজনই। কর্তব্যে গাফিলতির জন্য তিন পুলিশ কর্মীকে বহিষ্কার করে তেলেঙ্গানা পুলিশ। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই তেলেঙ্গারা মুখ্যমন্ত্রী জানান ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে হায়দরাবাদ ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার অভিযুক্তদের বিচার হবে।

উল্লেখ্য, এই নিয়ে তৃতীয়বার তেলেঙ্গানায় পুলিশ এনকাউন্টারে হেফাজতপ্রাপ্ত অভিযুক্তদের মৃত্যু ঘটনা ঘটল। ২০০৮ সালে মহিলার উপর অ্যাসিড হামলায় অভিযুক্ত তিনজন হেফাজত থেকে পালানোর চেষ্টা করে। সেই সময় ওরাঙ্গল পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে তিন অভিযুক্ত প্রাণ হারায়। বর্তমানে সাইবারাবাদের পুলিশ কমিশনার ভিসি সজ্জনা সেই সময় ওরাঙ্গলের পুলিশ সুপার ছিলেন।

publive-image ছবি: রাহুল ভি পিশারোদি

পুলিশের ভূমিকায় খুশি হায়দরাবাদের নির্যাতিতার বাবা। পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি জানিয়েছেন, 'রাত জেগেই বিগত কয়েকদিন কেটেছে আমাদের। শধু আমরাই নই, হায়দরাবাদ, গোটা দেশের অবস্থা একই। ভারত রাগে ফুঁসছে। অভিযুক্তরা পালাতে গিয়েছিল, তখন পুলিশ গুলি করে ঠিক কাজ করেছে।' অভিযুক্তদের এনকাউন্টারে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই মানুষ সাইবারাবাদ পুলিশ কমিশনারেটের বাইরে জড় হন। তাদের স্লোগানে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশের প্রশংসা শোনা যায়।

জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা জানিয়েছেন, 'আমি ব্যক্তিগতভাবে খুশি। আমরা অভিযুক্তদের মৃত্যদণ্ডের দাবি করেছিলাম। পরিস্থিতি কি হয়েছিল জানা নেই। তবে, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অভিযুক্তদের অই পরিণতি হলে আরও ভাল হত।'

'পুলিশকর্মীরা খুব ভাল করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে যেন কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হয়।' হায়দরাবাদ ধর্ষণকাণ্ডে ৪ অভিযুক্তের মৃত্যুর খবর শুনে প্রতিক্রিয়া নির্ভয়ার মায়ের। একই সঙ্গে খেদের সঙ্গে তিনি বলেন, 'আমার মেয়ের হত্যাকারীদের মৃত্যদণ্ডের দাবি জানিয়ে গত চার বছর ধরে প্রশানের দরজায় দরজায় ঘুরে চলেছি।'

Read the full story in English

national news rape
Advertisment