আরব আমিরশাহীর রাজ পরিবারের সদস্য পরিচয় দিয়ে মাসের পর মাস হোটেলযাপন। তার পর বিল না মিটিয়েই পগারপাড়। এক-দুই লক্ষ নয়, ২৩ লক্ষ টাকার বিল বাকি রেখে পালিয়েছে গুণধর। সেই জালিয়াতকে খুঁজতে লুকআউট নোটিস জারি করল দিল্লি পুলিশ।
মহম্মদ শরিফ নামে সেই ব্যক্তি নিজেকে আবু ধাবির রাজপরিবারের কর্মী হিসাবে পরিচয় দিয়ে চার মাস দিল্লির লীলা প্যালেস হোটেলে থাকত। পুলিশ জানিয়েছে, গত ১ অগস্ট থেকে নভেম্বরের ২০ তারিখ পর্যন্ত দিল্লির সেই অভিজাত পাঁচ তারা হোটেলে থেকেছে। তার পর একদিন কাউকে না জানিয়ে পালিয়েছে। শুধু থাকাই নয়, হোটেলের রুপোর বাসনপত্র এবং আরও অনেক কিছু চুরিও করেছে। হোটেলে প্রায় ২৩ লক্ষ টাকার বিল মেটায়নি সে। শনিবার সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, শরিফ হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানায়, সে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর শেখ ফালাহ বিন জায়েদ আল-নাহইয়ানের অফিসে কাজ করে। যিনি আবু ধাবির রাজপরিবারের সদস্য। শরিফ হোটেলে ভুয়ো বিজনেস কার্ড, ভুয়ো নাগরিক পরিচয় পত্র এবং অন্যান্য জাল নথি জমা দেয়। সেগুলি পরীক্ষা করা হচ্ছে। হোটেলের বিলাসবহুল ৪২৭ নম্বর স্যুটে চার মাস ধরে থাকত। লীলা প্যালেস হোটেল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানিয়েছে, ২৩ লক্ষ ৪৬ হাজার ৪১৩ টাকা বিল না মিটিয়েই শরিফ পালিয়েছে।
আরও পড়ুন গঙ্গায় আটকে ‘গঙ্গা বিলাস’! শোরগোল ফেলা খবর ওড়াল ভারতের অভ্যন্তরীণ জলপথ কর্তৃপক্ষ
শরিফ হোটেলের স্টাফদের জানায়, সে শেখকে ব্যক্তিগত ভাবে চেনে। তাঁর অফিসে কাজ করে। ভারতে বিশেষ কাজে সে এসেছে। মাঝেমধ্যেই হোটেলের কর্মীদের আমিরশাহীর জীবনযাত্রা নিয়ে গল্প করত। তাতেই তাঁদের আস্থা অর্জন করে শরিফ। রাজপরিবারের অন্দরের কথাও অনেক জানিয়েছে সে।
হোটেলের বিল এবং অন্যান্য খরচ মিলিয়ে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা শরিফের বিল হয়। কিন্তু তার মধ্যে ১১.৭৫ লক্ষ টাকা মিটিয়ে বাকিটা না দিয়েই চলে গিয়েছে সে। গত ২০ নভেম্বর রাত একটা নাগাদ কাউকে না জানিয়েই সে হোটেল ছাড়ে। তার আগে হোটেল কর্তৃপক্ষকে ২০ লক্ষ টাকার একটি চেক দেয় সে। সেটাও পরে বাউন্স হয়। হোটেলের ঘর থেকে রুপোর বাসনপত্র, মাদার অফ পার্ল ট্রে নিয়ে চলে গেছে সে।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের খোঁজ শুরু হয়েছে। হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাঁকে শনাক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। তার কার্ডগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমিরশাহীর রাজপরিবারের অফিসের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।