এবার পুজোয় কি মুখভার থাকবে প্রিয়ার? একটা আগুন, ছারখার করে দিয়েছে দক্ষিণ কলকাতার ওই অভিজাত সিনেমা হলের রমরমা ব্যবসা। ৫ অগাস্ট, রবিবার নাইট শো চলাকালীন প্রিয়া সিনেমা হল লাগোয়া একটি মোমোর দোকানে আগুন লেগেছিল। যে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই ঝাঁপ বন্ধ দেশপ্রিয় পার্কের ওই সিঙ্গল স্ক্রিনের। প্রায় দেড় মাস ধরে বন্ধ সিনেমা হল। কবে আবার প্রিয়ার পর্দায় ছবি দেখার আনন্দে শামিল হবেন দর্শকরা?দুর্গাপুজো মানেই বাংলা ছবির উৎসব। আর সেই উৎসবে প্রিয়ার মতো অভিজাত সিঙ্গল স্ক্রিনে সিনেমা দেখা থেকে কি এবার তবে বঞ্চিত হবেন দর্শকরা? উত্তরটা আপাতত অনিশ্চিত। শুধু দর্শকরাই নন, এবারের পুজোয় হতাশ প্রিয়ার কর্মীরাও।
অগ্নিকাণ্ডের জেরে এবার প্রিয়ার কর্মীদের বেতনে কোপ পড়তে চলেছে। এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে প্রিয়ার কর্ণধার অরিজিৎ দত্ত জানালন, ''বাধ্য হয়ে কাল কর্মীদের জানালাম যে, সেপ্টেম্বর মাসের বেতন দিতে পারব না। একইসঙ্গে জানিয়েছি যে, পুজো বোনাসও দিতে পারব না।'' এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বললেন, ''এরপর যদি ওঁরা অনশনে বসেন আমার কিছু করার থাকবে না।''
কবে আবার চালু হবে সিনেমা হল? জবাবে অরিজিৎবাবু বললেন, ''কিছুই বলতে পারছি না। কেমন করে বলব? কোনও খবর নেই। দমকলের তরফে কিছু জানানো হয়নি।'' অরিজিৎবাবুর আরও অভিযোগ, ''আমার তো কাজ হয়ে গেছে, পুরোপুরি তৈরি। দমকলের দাবি মতো সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু ওদের তো এখনও সময় হল না পরিদর্শন করার। ১০-১২ দিন আগে চিঠি দিয়েছি দমকলকে। কিন্তু এখনও কেউ আসেননি।''
অন্যদিকে, চিঠি দেওয়ার প্রসঙ্গে দমকল বাহিনীর এক শীর্ষ আধিকারিক বললেন, ''এমন কোনও চিঠি এখনও পাইনি। চিঠি পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'' দমকল সূত্রে জানানো হয়েছে যে, হয়তো কুরিয়র বা ডাকযোগে দেরি হচ্ছে চিঠি পৌঁছতে। তবে, দমকল সূত্রে এও জানানো হয় যে, ''সবরকম ব্যবস্থা করা হলেই ফের চালু করা হবে।'' অরিজিৎবাবুর অবশ্য পাল্টা দাবি, ''আমার কর্মীরা ১০-১২ দিন আগে চিঠি দিয়ে এসেছেন দমকলে। চিঠির রিসিভড কপি রয়েছে।''
আরও পড়ুন, Priya Cinema Fire Live update: প্রিয়া সিনেমায় অগ্নিকাণ্ড, তদন্তে দমকল
যে দোকান থেকে আগুন লেগেছিল, সেই দোকানের বিরুদ্ধে কি কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? জবাবে প্রিয়া কর্ণধার বললেন, "কী করব ব্যবস্থা নিয়ে? দোকানের তিনজন কর্মীর গাফিলতি, তাই বলে ওঁদের বিরুদ্ধে মামলা করব? কোনও মানে নেই। আমি জানি তো, এটা একটা দুর্ঘটনা মাত্র। আমাদের বিল্ডিং আগুন ছোঁয়ইনি।''
এদিকে, পুজোয় এবার প্রিয়ার দর্শকরা কি বঞ্চিত হবেন? ''হয়তো, বলতে পারব না। সবারই সমস্যা, শুধু দর্শকরাই নন, প্রযোজকরাও সমস্যায় পড়বেন।''
যে কটা সিঙ্গল স্ক্রিন শহর কলকাতায় বেঁচেবর্তে রয়েছে, তার মধ্যে দক্ষিণ কলকাতার প্রিয়া সিনেমা হল অন্যতম। মাল্টিপ্লেক্সের রমরমাতেও প্রিয়ার দরজায় এতটুকুও সিনেদর্শকদের ভিড় কমেনি। অগ্নিকাণ্ডের আগেও প্রিয়ার সদর দরজায় ঝুলেছে হউসফুল বোর্ড। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের মতো একটা দুর্ঘটনার জেরে প্রিয়ার ভবিষ্যত কেন অন্ধকারে? কেনই বা দমকলের তরফে এহেন উদাসীনতার অভিযোগ উঠছে? কেনই বা দর্শক, সিনেমা হলের কর্মীদের কথা মাথায় রেখে প্রিয়ার মতো নামী সিনেমা হল ফের খোলার ব্যাপারে তৎপরতা দেখাচ্ছে না প্রশাসন?