অগ্নিপথ প্রকল্পের প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ শনিবার চতুর্থ দিনে পড়ল। বিক্ষোভ-প্রতিবাদ কমার কোনও লক্ষ্মণই নেই। বরং রাজ্যে-রাজ্যে অগ্নিপথের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে। পঞ্জাব, কেরালা, জম্মু ও কাশ্মীর এবং বিহার-সহ একাধিক রাজ্যে অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে পথে নেমে চলছে যুব সমাজের ব্যাপক বিক্ষোভ।
শনিবার পঞ্জাবের লুধিয়ানায় কেন্দ্রের এই নয়া প্রকল্পরে প্রতিবাদে বিক্ষোভ চরম আকারে পৌঁছোয়। এদিন সকালে একদল যুবক লুধিয়ানা স্টেশনে ঢুকে পড়ে ভাঙচুর শুরু করে। বেপরোয়াভাবে ভাঙচুর করা হয় রেলের সম্পত্তি। বিক্ষোভকারীদের দাবি, অগ্নিপথ প্রকল্প বাতিল করতে হবে, দেশের সশস্ত্র বাহিনীতে আগের নিয়মেই নিয়োগ প্রক্রিয়া জারি রাখতে হবে।
এদিকে, পুলিশ জানিয়েছে এদিন অধিকাংশ বিক্ষোভকারীর মুখ ঢাকা ছিল। স্টেশনের টিকিট কাউন্টার থেকে শুরু করে জানলার কাচ ভেঙে ফেলেছে বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তারা এসে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। বিক্ষোভকারীরা এদিন জানিয়েছেন, প্রায় দু'বছর ধরে সেনায় নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ রেখেছে সরকার। পঞ্জাবের একটি বড় অংশের যুবক সেনায় চাকরির জন্য পরীক্ষা দেন। তাই সেনায় নিয়োগের ক্ষেত্রে এখন চুক্তির বিষয়টিতে ঘোরতর আপত্তি রয়েছে তাঁদের।
সেনায় নিয়োগে পুরনো ব্যবস্থা ফেরানোর দাবি বিক্ষোভকারীদের। সেনায় নিয়োগের পরীক্ষার ব্যবস্থাও দ্রুত করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এদিকে শনিবার লুধিয়ানা স্টেশনে ভাঙচুরের ঘটনা প্রসঙ্গে ডিসিপি ভারিন্দর সিং ব্রার জানিয়েছেন, স্টেশনে হামলাকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। শীঘ্রই একটি এফআইআর দায়ের করা হবে।
আরও পড়ুন- ‘অগ্নিপথ’ ক্ষতে প্রলেপ, অগ্নিবীরদের জন্য এবার ‘বিরাট’ সুযোগ এনে দিল কেন্দ্র
অগ্নিপথ বিক্ষোভের আঁচ পড়েছে জম্মু কাশ্মীরেও। শনিবার প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি উদয় ভান চিবের নেতৃত্বে একদল কংগ্রেস কর্মী জম্মু প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলেছেন তাঁরা। উল্টোদিকে, দক্ষিণের রাজ্য কেরলেও এদিন কেন্দ্রের নয়া প্রকল্প অগ্নিপথের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে যুব সমাজ। এদিন অগ্নিপথের বিরুদ্ধে দুটি বড় বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে কেরলে। প্রায় শ'তিনেক যুবক এদিন মিছিল করে রাজভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। অন্যদিকে, কোঝিকোড় রেল স্টেশনের কাছে কেন্দ্রের নয়া প্রকল্পের প্রতিবাদে শ'পাঁচেক যুবক বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
একইভাবে কর্নাটকের বিভিন্ন জায়গাতেও শনিবার দেশের সশস্ত্র বাহিনীতে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগের এই প্রক্রিয়ার প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভ সামাল দিতে এদিন বাড়তি বাহিনী নিয়োগ করে রেল। বিক্ষোভের জেরে এদিন একগুচ্ছ ট্রেন বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এরই পাশাপাশি দিল্লি লাগোয়া নয়ডাতেও এদিন অগ্নিপথের বিরুদ্ধে পথে নেমে গ্রেফতার হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন। অগ্নিপথ নিয়ে এখনও তপ্ত বিহার। অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (AISA)-এর নেতৃত্বে বিহারের বেশ কয়েকটি ছাত্র সংগঠন আজ ২৪ ঘণ্টা বিহার বনধের ডাক দিয়েছে। বনধে সমর্থন করেছে আরজেডি নেতৃত্বাধীন জোট।