বিদেশে ডাক্তারিতে ভর্তি থেকে থাকা-খাওয়া, মুশকিল আসানে ঝাঁ চকচকে বিজ্ঞাপনেই বাজিমাত এজেন্টদের

একবার ফোন করলেই আপনাকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে পড়ার একাধিক অপশন আপনার সামনে তুলে ধরবে এজেন্টরাই।

একবার ফোন করলেই আপনাকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে পড়ার একাধিক অপশন আপনার সামনে তুলে ধরবে এজেন্টরাই।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
students back from abroad must be provided education by country in crisis

শিক্ষা নিয়ে ছেলেখেলা নয়, প্রতি দেশকেই রাখতে হবে এই ব্যাবস্থা, ঘোষণা ইউনেস্কোর

বিদেশে মেডিকেল কোর্স করতে ইচ্ছুক, কোন ডোনেশন ছাড়াই…..? এরকম নানা ধরণের বিজ্ঞাপন আমারা সংবাদপত্র থেকে রেলস্টেশন হামেশাই দেখে থাকি। এই ধরণের বিজ্ঞাপণই পড়ুয়াদের আকর্ষণ করার একমাত্র উপায়, বলছেন সন্তোষ যাদব।

Advertisment

ইউক্রেনে বুকোভিনিয়ান স্টেট মেডিকেল ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সন্তোষ জানালেন, ‘কোচিং সেন্টারের বাইরে এই রকম বিজ্ঞাপন সহ পোস্টারে ভর্তি থাকে। অনেকেই নেহাতই কৌতূহলের বশেই সেই নম্বরে ফোন করেন। আর একবার ফোন করলেই আপনাকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে পড়ার একাধিক অপশন আপনার সামনে তুলে ধরবে এজেন্টরাই। থাকা খাওয়া থেকে সব কিছু এক্কেবারে রেডি’। শুধুমাত্র আপনার হ্যাঁ বলার অপেক্ষা!

তার কথায়, ‘প্রতিযোগিতা আকাশছোঁয়া। সরকারী মেডিকেল কলেজে চান্স পাওয়া রীতিমত কঠিন। বেসরকারি কলেজে কোর্স ফি মধ্যবিত্তের ধরা ছোঁয়ারও বাইরে। তাই এই ধরণের বিজ্ঞাপন দেখে সাধারণ পরিবারের ছেলেমেয়েরা আকৃষ্ট হন। আমি যখন এইরকম একটা লিফলেট পাই আমিও সেখানে যোগাযোগ করি। তিনি বলেন, আমাই এমন অনেক এজেন্টকেই চিনি যারা কোচিং সেন্টারগুলোর বাইরে লিফলেট বিলি করে।

আর সেখানে কোন পড়ুয়া যাওয়ার পর, ঝাঁ চকচকে ক্যাম্পাস, সাধ্যের মধ্যে কোর্স ফি! ভালো ভবিষ্যতের স্বপ্ন এই সব দেখে নিজেদের আর আটকে রাখা যায়না। ইউক্রেন সংকট চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে হাজারে হাজারে পড়ুয়া দেশ ছেড়ে ভিনদেশে ডাক্তারি পড়তে গেছেন। শিক্ষাব্যবস্থার একাধিক গলদ উঠে এসেছে এই সময়েই। তাও এটা সত্যি, প্রতি বছর হাজার হাজার পড়ুয়া ইউক্রেন, চিন সহ একাধিক দেশে মেডিকেল পড়ার জন্য যান। এখন প্রশ্ন হল যারা ডাক্তারি পড়ার জন্য ইউক্রেনে গিয়েছিলেন, তারা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে রীতিমত উদ্বিগ্ন। আর শিক্ষা ব্যবস্থার এই সংকটময় পরিস্থিতির সুযোগে কিছু এজেন্ট নিজেদের শ্রীবৃদ্ধি বাড়িয়েই চলেছেন’।

Advertisment

এজেন্টরা কিভাবে মেডিকেল ছাত্রদের সাথে যোগাযোগ করে? এই প্রশ্নের উত্তরে যাদব বলেন, ‘মূলত সোর্সকে কাজে লাগান তারা। বিশেষ করে এই ব্যাপারে সিনিয়র স্টুডেন্টদের ঢাল হিসাবে ব্যবহার করেন তারা। সেই সব সিনিয়র স্টুডেন্টরা নিজেদের পরিচিতদের এজেন্টদের নাম্বার দিয়ে থাকেন তাছাড়া রেডিও টিভি, সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন তো রয়েছেই'।

আরো পড়ুন: আগামী সোমবারই দেশে ফিরছে ইউক্রেনে নিহত ভারতীয় পড়ুয়ার মরদেহ

আরেক ছাত্র তেজস দেবীদাস গায়কওয়াড় বলেছেন, 'ধরুন একই এলাকার দুই পড়ুয়া, একজন সিনিয়ার আরেকজন সবে মেডিকেলে ভর্তি হতে চাইছেন সেক্ষেত্রে সিনিয়র পড়ুয়াই এজেন্টদের সঙ্গে তাকে যোগাযোগ করিয়ে দেন। এটা একটা চেইন সিস্টেমের মত। তার কথায়, কোচিং সেন্টারগুলো ভারতে পড়ার ব্যপারেই পড়ুয়াদের উৎসাহিত করে। আমি কোচিং সেন্টারে কখনও কোন এজেন্টকে আসতে দেখিনি’, তার কথায়, একটা সেমিনারে যোগ দিতে বেশ কয়েকজন বন্ধুদের সঙ্গে আমি সেখানে যাই, সেখানে আমকে ব্যঙ্ক লোন থেকে ভর্তি সব সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়। আমি আর দেরি না করেই সেই সুযোগকে বেছে নিই'।

'আমার মত অনেকেই এইরকম ঝক্কিহীন সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। তবে সংকটের সময় এজেন্টরা আমাদের পাশে থেকে আমাদের সবরকম ভাবে সাহায্য করেছিল। তার কথায়, অনেকক্ষেত্রে এজেন্টরা পরিবারের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের কে বোঝানোর চেষ্টা করেন সেদেশে তাদের নেটওয়ার্ক কত বড়, কত স্টুডেন্ট এর আগে সেদেশে তারা পাঠিয়েছেন ইত্যাদি। শুধুমাত্র কলেজে ভর্তি নয়, সেদেশে থাকা খাওয়ার যাবতীয় ব্যবস্থা এজেন্টরাই করে থাকেন , আমাদের শুধু টাকা দিতে হয়। এমনকী অনেক এজেন্টের সেদেশে নিজেদের মেস অথবা হোস্টেলও রয়েছে। যাদবের কথায়, অনেকে বড় এজেন্টদের কলেজগুলির সঙ্গে চুক্তি থাকে সেই অনুসারে তারা কমিশনও পান। প্রতি ছাত্রের বিনিময়ে ১ থেকে ৩ লক্ষ টাকা পান এজেন্টরা'।

Read full story in English

Ukrainian medical universities agents recruits candidates