ভারতে করোনার থাবা এখনও অটুট। কিন্তু তার মধ্যেই পরিসংখ্যান ঘিরে আশার আলো উঁকি মারতে শুরু করেছে। গত ছয় দিন ধরে দেশে নতুন করে আক্রান্তের তুলনায় করোনাজয়ীয় সংখ্যা উর্ধ্বমুখী। একই সঙ্গে কমছে অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা। হয়তো তা সাময়িক। তবে, আপাতত সেটাই স্বস্তির।
কমছে আর ভ্যালু-র হারও। ইনস্টিটিউট অফ ম্যাথামেটিক্যাল সায়েন্সে-র (চেন্নাই) কষা এফেক্টিভ রিপ্রোডাকশনের (আর ভ্যালু) হিসেব অনুযায়ী মার্চ মাস থেকে এই প্রথম ভারতে আর ভ্যালু-র হার ১ এর নীচে নেমেছে। বর্তমানে এ দেশে আর ভ্যালু-র হার ০.৯৩। অর্থাৎ, ভারতে এখন ১০০ জন সংক্রমিতের থেকে ৯৩ জনের শরীরে জীবাণু ছড়াচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন কোনও সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করে, তখন একজন আক্রান্তের থেকে কতজন সংক্রামিত হতে পারে তার হিসেবই হল এই এফেক্টিভ রিপ্রোডাকশন ভ্যালু বা আর ভ্যালু। এই আর ভ্যালু বাড়তে বাড়তে যদি একটা সময়ে কমতে শুরু করে, তখন বুঝতে হবে সংক্রমণ ছড়ানোর হার কমছে (যাকে অনেক সময় বলা হয় কার্ভ ফ্ল্যাট হচ্ছে)। আর এই হার একের নীচে চলে আসা মানে বুঝতে হবে, নিয়ন্ত্রণে আসছে সংক্রমণ। কিন্তু, সে জন্য আর ভ্যালুকে ধারাবাহিকভাবে একের নীচে থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণে শীর্ষ রাজ্যগুলিতে কমছে আক্রান্তের সংখ্যা
কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুসারে, অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যা ১৭ সেপ্টেম্বর ১০.১৭ লক্ষ ছিল। এক সপ্তাহ পর তা কমে হয়েছে ৯.৬৬ লক্ষ। অর্থাৎ স্পষ্ট যে ভারতে অ্যাকটিভ করোনা রোগীর সংখ্যা কমছে। মহামারী হ্রাসে অ্যাকটিভ রোগীর এই নিম্নমুখিতা খুবউ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা কমলেই মেডিক্যাল সায়েন্স মনে করে সংক্রমিতের হারও কমছে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে যা আশার ইঙ্গিত।
তবে, এই প্রবণতা ধারাবাহিকভাবে বজায় থাকে কিনা সেটাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগামী কয়েক সপ্তাহ এই ধারা বজায় থাকলে তা অর্থবহ বলে মনে করা যেতে পারে।
তবে, এখানে গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা রয়েছে। সংক্রমণ কমছে কিনা তা বোঝার জন্য এই আর ভ্যালুই চূড়ান্ত গাণিতিক হিসাব নয়। নানা মডেলে আর ভ্যালুর হিসাব কষা হয়ে থাকে। যদিও, সংক্রমণ বৃদ্ধি ও হ্রাসের বিষয়টি কম-বেশি একইভাবে প্রতিফলিত হয়ে থাকে। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস মহামারীর প্রথম থেকেই ডঃ সীতাভ্র সিনহার নেতৃত্বাধীন ইনস্টিটিউট অফ ম্যাথামেটিক্যাল সায়েন্সে-র (চেন্নাই) কষা ভারতে করোনার আর ভ্যালু পরিসংখ্যান তুলে ধরছে। দেখা গেল এই প্রথম এ দেশে আর ভ্যালুর হার ১-এর নীচে।
উল্লেখ্য, ভারতে এখনও করোনা সংক্রমণ হয়ে চলেছে। তাই আর ভ্যালুর হারের বদল ঘটতে পারে। সবচেয়ে যা আশা জাগাচ্ছে তা হল দেশের যে রাজ্যগুলি কোভিড সংক্রমণের শীর্ষে ছিল সেখানে গত কয়েকদিনে কমেছে আক্রান্তের সংখ্যা। যার প্রভাব গোটা দেশের পরিসংখ্যানে প্রতিফলিত হচ্ছে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন