সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে বিচারবিভাগীয় তদন্ত চালানো যাবে না, এমনই রায় দিল রাজস্থান হাইকোর্ট। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে ২০০১ সালের মার্চে সাসপেন্ড করা হয়েছিল সে রাজ্যের এক ইন্সপেক্টর ও এক মহিলা কনস্টেবলকে। ওই দুই পুলিশ কর্মীর দায়ের করা রিট পিটিশনের ভিত্তিতে শুনানির পর এদিন এমন রায় দেয় হাইকোর্ট। এ মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দুজনের সাসপেনশন ও বিভাগীয় তদন্তের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে আদালত।
গত ৭ মার্চ বিচারপতি সঞ্জীব প্রকাশ শর্মা জানান, সরকার বেআইনি পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি আরও জানান, এ সংক্রান্ত বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপরই ছেড়ে দেওয়া ভাল। কেউ বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ালে তিনি কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন, সেটা তাঁর উপর ন্যস্ত করাই শ্রেয়। অন্যদিকে, রাজ্যের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) জি এস গিল জানান, সার্ভিস রুল অনুযায়ী, এ ব্যাপারে রাজ্যের অধিকার রয়েছে। তিনি আরও বলেন, কর্মীকে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে দেওয়া যায় না। তাই এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় তদন্ত করতেই পারেন।
আরও পড়ুন, শিলং টাইমসের সম্পাদকের বিরুদ্ধে জারি করা মেঘালয় হাইকোর্টের নির্দেশে সুপ্রিম স্থগিতাদেশ
এ মামলার শুনানিতে পৌরাণিক আখ্যান এবং হিন্দু দেবদেবীর প্রসঙ্গও উত্থাপিত হয়। গণেশ ও ইন্দ্রের একাধিক সম্পর্কের বিষয়টি এজলাসে আলোচিত হয়। আদালতের তরফে বলা হয়, মানুষের মন সবসময়ই পরিবর্তনশীল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নীতিবোধের ধারণাও বদলায়। আজ কোনও ব্যক্তি যে চিন্তাধারায় বিশ্বাস করেন, ১০০ বছর আগে সেই একই চিন্তাধারায় মানুষ আস্থাশীল ছিলেন না। আইনপ্রণেতাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটের মানোন্নয়নের ধারা বোঝা প্রয়োজন।
আদালতের তরফে এও জানানো হয়, কোনও এক ব্যক্তি বা মহিলা কাকে সঙ্গী হিসেবে বাছবেন, কার সঙ্গে থাকবেন, সেটা তাঁর নিজের পছন্দের উপর নির্ভর করে। এজন্য বিভাগীয় তদন্তের কোনও দরকার নেই। কর্মীদের ব্যক্তিগত বিষয়ে নীতি পুলিশের মতো আচরণ করতে পারেন না কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, এর আগে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে রাজস্থান ক্যাডারের আইপিএস অফিসার পঙ্কজ চৌধুরিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হন তিনি।
Read the full story in English