Sculpture Arun Yogiraj Success Story: প্রায় দুমাস কেটে গিয়েছে অযোধ্যার রামমন্দিরে (Ayodhya Ram Temple) প্রাণ প্রতিষ্ঠার (Pran Pratistha)। মহা ধুমধামে মন্দিরের গর্ভগৃহে বসেছে রামলালার মূর্তি। কিন্তু ভাস্কর অরুণ যোগীরাজের (Arun Yogiraj) এখনও ব্যস্ততা যেন কাটছেই না। নাওয়া-খাওয়া ভুলে দেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় তিনি আমন্ত্রণ পেয়ে ছুটে গেছেন, সংবর্ধিত হয়েছেন। সম্মান পেয়েছেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, স্কুল-কলেজে সম্মানিত হয়েছেন। গত ৬ মাস ধরে অযোধ্যা মূর্তি খোদাইয়ের সময়ও তিনি ব্যস্ত থাকতেন। এখনও একই অবস্থা।
চলতি সপ্তাহে দিল্লিতে এক রাত্রির জন্য ছিলেন। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি বলেছেন, রামলালার মূর্তি তৈরির জন্য ভাস্করদের চূড়ান্ত তালিকায় তাঁর নামও ছিল না। কিন্তু শেষমুহূর্তে তাঁর কাছে ফোন আসে মন্দির ট্রাস্টের মূর্তি কমিটির তরফে। তখন তাঁকে তাঁর মূর্তির প্রদর্শনী করতে বলা হয়। আরও তাৎপর্যপূর্ণ হল, তাঁর নাম আরও দুজনের সঙ্গে চূড়ান্ত হওয়ার পর বিপত্তি ঘটে। যে পাথর দিয়ে তিনি ৭০ শতাংশ মূর্তি তৈরি করে ফেলেছিলেন, সেটাই একটি গুণমান পরীক্ষায় পাশ করতে ব্যর্থ হয়। তবে তাঁকে পুনরায় কাজ শুরু করতে বলা হয়, যদি তিনি রাজি থাকেন তো।
৪০ বছর বয়সী মাইসুরুর ভাস্কর বলেছেন, তিনজন ভাস্করের নাম চূড়ান্ত করার আগে, দেশজুড়ে ১২ জন ভাস্করকে আমন্ত্রণ জানানো হয় কমিটির সামনে প্রদর্শনী করার জন্য। তবে সেই তালিকায় প্রথমে ছিলেন না যোগীরাজ। তার জন্য দুঃখও হয়েছিল। তবে কমিটির বৈঠকের একদিন আগে তিনি ডাক পান এক জন সদস্যের কাছ থেকে। ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় কলাকেন্দ্রের সচ্চিদানন্দ জোশীর কাছ থেকে ফোন আসে তাঁর কাছে। দিল্লির ইন্ডিয়া গেটে তাঁর তৈরি নেতাজির মূর্তি, কেদারনাথে আদি শঙ্করাচার্যের মূর্তির কাজ দেখেই সুবর্ণ সুযোগ তাঁর কাছে আসে বলে জানিয়েছেন যোগীরাজ। দুটো মূর্তিই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi) উন্মোচন করেন।
'আমার প্রদর্শনীর পর বাকি দুজন কর্ণাটকের গণেশ ভাট এবং জয়পুরের সত্যনারায়ণ পাণ্ডেকে অযোধ্যায় থাকতে বলা হয় এবং মূর্তির কাজ শেষ করতে বলা হয়। তার মধ্যেই একটি চূড়ান্ত করা হবে', স্মৃতিচারণ যোগীরাজের। ২২ জানুয়ারি রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠান হয়েছিল। তবে যোগীরাজকে একমাস আগেই কমিটির তরফে তাঁকে সুখবর দেওয়া হয়। যোগীরাজ বলেছেন, '২৯ ডিসেম্বর, আমি কোনওদিন ভুলব না। আমাকে ফোন করে জানানো হয় দিল্লি আসার জন্য। '
২০২৩ সালের জুন মাস থেকে মূর্তি তৈরি করছিলেন যোগীরাজ। কিন্তু ৭০ শতাংশ তৈরি হয়ে যাওয়ার পরও আগস্টে আবার একটা পরীক্ষার জন্য তাঁকে ডাকা হয়। নির্মাণ কমিটির প্রধান নৃপেন্দ্র মিশ্র (Nripendra Mishra) তাঁকে জানান, 'তোমার হাতে দুমাস রয়েছে। আবার নতুন করে শুরু করো।' এবার কৃষ্ণশীলা দিয়ে ফের মূর্তি নির্মাণ শুরু করেন যোগীরাজ। বাকিটা ইতিহাস।
পঞ্চম প্রজন্মের ভাস্কর যোগীরাজ বলেছেন, আগে ছোট ছোট কাজ করতেন তিনি। এক একটি মূর্তির জন্য দেড় থেকে দুহাজার টাকা পেতেন। তিনি বলেছেন, "সবসময় ভাবতাম, কবে বড় কাজ পাব!" তবে ঈশ্বর তাঁর জন্য যে এমন সুযোগ এনে দেবেন আজও বিশ্বাস করতে পারেন না রামলালার ভাস্কর।