বিচার বিভাগে সংরক্ষণের দাবি দলিত সাংসদদের

সরকারি চাকরি-পদোন্নতিতে সংরক্ষণ ব্যক্তির মৌলিক অধিকার নয়। ঐতিহাসিক রায়ে এমনই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

সরকারি চাকরি-পদোন্নতিতে সংরক্ষণ ব্যক্তির মৌলিক অধিকার নয়। ঐতিহাসিক রায়ে এমনই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান।

সরকারি চাকরি এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে সংরক্ষণ ব্যক্তির মৌলিক অধিকার নয়। এক ঐতিহাসিক রায়ে এমনই জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শুধু তাই নয়, সরকারি চাকরি বা পদোন্নতির ক্ষেত্রে এসটি বা এসসি-দের সংরক্ষণের ব্যবস্থা করার নির্দেশ কোনও রাজ্যের সরকারকে আদালত দিতে পারে না বলেও সর্বোচ্চ আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে। সুপ্রিম এই রায়ে অসন্তুষ্ট দেশের বিভিন্ন দলের দলিত সাংসদরা। এবার তাঁরা বিচার বিভাগে সংরক্ষণের দাবি তুললেন।

Advertisment

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী পাসোয়ানের বাড়িতে দল, মত নির্বিশেষে প্রায় সব রাজনৈতিক দলের দলিত সাংসদরা দেখা করেন। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে পাসোয়ান বলেছেন, 'সাংসদরা এখন বিচার বিভাগে সংরক্ষেণ দাবি করছেন এবং ইন্ডিয়ান জুডিশিয়াল সার্ভিস গড়ে তুলতে বলছে। কারণ, সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশের কোনও বিষয় আদালতে গেলেই তা ধাক্কা খায়।' পাসোয়ানের কথায়, ''সংবিধানের ৩১২ ধারায় অল ইন্ডিয়া জুডিশিয়াল সার্ভিস গঠনের বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু, নির্দিষ্ট ও স্বচ্ছ পক্রিয়া মেনে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে হতে হবে। এতে সংরক্ষণেরও ব্যবস্থা থাকবে।

আরও পড়ুন: সিএএ প্রতিবাদীদের ‘বিশ্বাসঘাতক-দেশ বিরোধী’ তকমা নয়: বম্বে হাইকোর্ট

Advertisment

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কী দলিত সাংসদের আর্জি সমর্থন করছেন? পাসোয়ান বলেন, 'তাঁদের দাবি আমি সমর্থন করছি। তবে দু'টি শর্ত রয়েছে। প্রথমত- বর্তমান কলেজিয়াম প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। তাই জুডিশিয়াল সার্ভিস হলে তা নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ হতে হবে। দ্বিতীয়ত- সেখানে সমাজের সব স্তরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।' এবিষয়ে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কী কথা হয়েছে? কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর জবাব, 'বিষয়টি কিছুটা এগিয়েছে। ইন্ডিয়ান জুডিশিয়াল সার্ভিস নিয়ে সংসদে সদর্থক জবাব দিয়েছে কেন্দ্র। সরকার আগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিষয়টি বিবেচনা করছে।'

সরকারি চাকরি এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় বাতিলের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবি তুলেছেন দলিত সাংসদরা। রামবিলাস পাসোয়ান বলেন, 'সংরক্ষণ কেউ বাতিল করতে পারবেন না। এটা পাথরের পাঁচিল। এক্ষেত্রে উচ্চ জাতের দুস্থরাও রয়েছেন ফলে কোনও মতেই কেউ সংরক্ষেণ বাতিল করতে পারবেন না।' প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধনেরও দাবি তোলা হবে বলে জানিয়েছেন পাসোয়ান।

আরও পড়ুন:  মিসড কল দিলেই মিলতে পারে ‘দেশ গড়ার’ সুযোগ, বলছে আপ

এলজেপি-র তরফে সুপ্রিম রায় পর্যালোচনার দাবি তোলা হবে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পাসোয়ান।

গত ৯ই ফেবরুয়ারি বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও এবং বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তের বেঞ্চ জানিয়েছেন যে, সরকারি চাকরি এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে সংরক্ষণ ব্যক্তির মৌলিক অধিকার নয়। আদালত তার রায়ে আরও বলেছে, চাকরি এবং পদোন্নতিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হবে কি না, সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার একমাত্র রাজ্য সরকারের। এই বিষয়ে সরকারের ওপরে কিছু চাপিয়ে দেওয়া যায় না। ফলে কোনও ব্যক্তি পদোন্নতিতে সংরক্ষণের সুযোগ দাবি করতে পারে না। রাজ্যকে সংরক্ষণের নির্দেশও আদালত দিতে পারে না।

২০১২ সালে পূর্ত দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে এসসিএবং এসটি-দের সংরক্ষণ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল উত্তরাখণ্ড সরকার। রাজ্যের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হন ওই দফতরের কর্মীরা। সেই মামলায় হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। সেই মামলার শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দিয়েছে।

Read the full story in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

supreme court