অবশেষে ধর্না প্রত্যাহার করলেন বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটিতে সংস্কৃত ভাষার শিক্ষক পদে ফিরোজ খানের নিয়োগের বিরোধিতা করা শিক্ষার্থীরা। যদিও শিক্ষার্থীদের তরফে জানানো হয়, ধর্না তুলে নিলেও ক্লাস বয়কট এবং প্রতিবাদ চালিয়ে যাবেন তাঁরা। এমনকী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি ১০ দিনের মধ্যে ফিরোজ খানের নিয়োগের বিষয়ে তাঁদের প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যর্থ হন, তাহলে বৃহৎত্তর আন্দোলনে যাওয়ার কথাও বলেছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, এগারো দিন আগে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিদ্যা ধর্ম বিজ্ঞান (এসভিডিভি) বিভাগে যোগদান করেন সংস্কৃতে ডক্টরেট ফিরোজ খান। এরপরেই শুরু হয় ধর্ম তরজা। যদিও আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিম শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টির বিরোধিতা করছেন না তাঁরা। বরং কেন একজন অ-হিন্দু শিক্ষক সংস্কৃত পড়াবেন, সেখানেই তাঁদের প্রশ্ন। যদিও ফিরোজ খানের পাশে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হয়েছেন ফিরোজ খান, ধর্মের ভিত্তিতে নয়।
আরও পড়ুন: ‘সংস্কৃত পড়তে গিয়ে কখনই মনে হয়নি আমি মুসলমান, কিন্তু এখন…’
তবে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, ফিরোজ খানের পাশে রয়েছে আরএসএস অনুমোদিত সংগঠন সংস্কৃত ভারতী। তাদের বক্তব্য, "ধর্ম সবসময় আচরণীয় ধর্ম নয়। ভারতের যে সভ্যতা, তা অত্যন্ত প্রাচীন। পরবর্তীতে সমাজ সংস্কারের জন্য অনেকবার সংবিধান রচিত হয়েছে। বর্তমানে সেগুলিই হলো স্মৃতি। সেই স্মৃতিই ধর্মশাস্ত্রে পড়ানো হয়। আধুনিক যুগে এই ধর্মশাস্ত্রই আইনে রূপান্তরিত হয়েছে।" এদিকে, দু'সপ্তাহব্যাপী ধর্না জারি রেখেছেন আন্দোলনকারীরা। যা চলাকালীন কার্যত লুকিয়েই থেকেছেন ফিরোজ খান। বেশ কিছুদিন ধরে বন্ধ মোবাইল ফোনও। জানা গেছে, ছুটি নিয়ে জয়পুর চলে গিয়েছেন সংস্কৃতের এই শিক্ষক।
ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিষয়টির উপর দৃষ্টি নিক্ষেপ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র রাজেশ সিং বলেন, "যেসব শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেছিলেন, তাঁরা ধর্না প্রত্যাহার করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।" ধর্না তুলে নিলেও শিক্ষার্থীদের তরফে একরাশ প্রশ্নের তালিকা ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। সেখানে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, বিএইচইউ-এর আইন অনুসারে ফিরোজ খানের নিয়োগ করা হয়েছে কি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের এসভিডিভি নিয়ম মেনেই এই নিয়োগ হয়েছিল কি না। শিক্ষার্থীদের তরফে একটি লিখিত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, যতক্ষণ না সমস্যার সমাধান হচ্ছে, ততক্ষণ তাঁদের প্রতিবাদ জারি রাখবেন তাঁরা।
Read the full story in English