রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক সারলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন ও বহির্বিশ্বে তার প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করেছেন জয়শঙ্কর ও গুতেরেস। এরই পাশাপাশি আফগানিস্তান ও মায়ানমারের পরিস্থিতি নিয়েও কথা হয়েছে দু'জনের।
রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে এই বৈঠক নিয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর টুইটে লিখেছেন, ''আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে। ইউক্রেন পরিস্থিতির বহির্বিশ্বে প্রভাব এবং বিশেষ করে খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য এই বিষয়গুলি গুরুত্বপূর্ণ।"
টুইটে তিনি আরও লিখেছেন, ''আফগানিস্তান এবং মায়ানমারের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ের গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলির কার্যকরভাবে মোকাবিলা করার জন্য ভারতের সঙ্গে কাজ করার তাঁর (গুতেরেস) এই আগ্রহ প্রশংসনীয়।''
উল্লেখ্য, ইউক্রেনে এখনও রুশ আগ্রাসন জারি রয়েছে। নতুন করে রাজধানী কিয়েভে বোমা-বর্ষণ শুরু করেছে রাশিয়া। যুদ্ধ থামার কোনও ইঙ্গিত এখনও পর্যন্ত নেই। রুশ বাহিনীর লাগাতার হামলায় মৃত্যু মিছিল ইউক্রেনে। অন্যদিকে, আফগানিস্তানের পরিস্থিতিও এখনও বেশ জটিল। দুই দশকের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর গত বছরের ৩১ অগাস্ট আফগানিস্তান থেকে পুরোপুরিভাবে সেনা সরিয়ে নিয়েছে আমেরিকা। তার ঠিক দুই সপ্তাহ আগেই ১৫ আগস্ট গোটা আফগান মুলুকের ক্ষমতা হাতে নিয়েছিল তালিবান।
তালিবান জমানায় আফগানিস্তানের মাটিতে ফের মাথাচাড়া দিতে পারে ভারত-বিরোধী শক্তিগুলি। শুরু থেকেই এই আশঙ্কা করে আসছে দিল্লি। রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ এই আলোচনায় আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেছেন বিদেশমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- ভারত অহিংসার কথা বলবে ও লাঠিও বহন করবে, বিশ্ব কেবল শক্তি বোঝে: ভাগবত
বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এর আগে মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড জে. অস্টিনের সঙ্গে ওয়াশিংটনে বৈঠক করেছেন। ভারত এবং আমেরিকা তালিবান নেতৃত্বকে UNSC রেজোলিউশন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে। ওই রেজোলিউশন অনুযায়ী, আফগানিস্তানের মাটিকে ব্যবহার করে কখনও কোনও দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার প্রস্তুতি নিতে দেওয়া যাবে না।
ভারত-আমেরিকা মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে দেওয়া একটি যৌথ বিবৃতিতে দুই দেশের মন্ত্রীরা আফগানিস্তানের মহিলা, শিশু এবং সংখ্যালঘু গোষ্ঠী-সহ সব আফগান নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে তালিবান নেতৃত্বকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, একইভাবে মায়ানমার পরিস্থিতি নিয়েও রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের। মায়ানমারে হিংসা বন্ধের পাশাপাশি নির্বিচারে আটক প্রত্যেকের মুক্তি এবং গণতন্ত্র রক্ষায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে ভারত।
Read story in English