গত সেপ্টেম্বরে শীর্ষ আদালত রায় দিয়েছিল, সব বয়সের মহিলারা প্রবেশ করতে পারবেন কেরালার শবরীমালা মন্দিরের গর্ভগৃহে। সুপ্রিম রায় বেরনোর দিন কয়েকের মধ্যেই ৪৩ বছরের বিন্দু থাঙ্কাম কল্যাণী যাত্রা করেছিলেন শবরীমালার উদ্দেশে। কল্যাণীর শবরীমালা অভিযান অবশ্য সফল হয়নি। বিন্দুর অভিযোগ, দক্ষিণপন্থী এক সংগঠনের চাপে বিন্দুর ১১ বছরের মেয়ে কে স্কুলে ভর্তি নেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ।
কেরালার পল্লকড় জেলার এক সরকারি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের ইংরেজি শিক্ষিকা বিন্দু। এলাকায় দলিতকর্মী হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে তাঁর। শবরীমালা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে বিন্দুর সমর্থন করা ভালো ভাবে নেয়নি দক্ষিণপন্থী সংগঠনগুলো।
"বিদ্যা বনম স্কুলের প্রধানশিক্ষক এবং বাকি শিক্ষকদের সঙ্গে আমি কথা বলেছিলাম দিন কয়েক আগে। ওরা আমার মেয়েকে ভর্তি নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন। কাল যখন আমি মেয়ের সঙ্গে স্কুলে যাই, প্রায় ষাট জন লোকের জমায়েত হয়েছিল আনাইকাট্টির স্কুল গেটের সামনে। প্রথমে না বুঝলেও পরে আমি বুঝতে পারি আমার মেয়ের স্কুলে ভর্তি হওয়ার ব্যাপারে বিক্ষোভ জানাতেই ওখানে জমায়েত হয়েছিলেন সবাই", ফোনে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাংবাদিকদের জানালেন বিন্দু।
আরও পড়ুন, ৪৮ ঘণ্টার জন্য বন্ধ মোবাইল ইন্টারনেট, এসএমএস
তিনি আরও জানান, "আমার মনে হয়, স্কুল কর্তৃপক্ষও আমার মেয়েকে ভর্তি নিতে চায়, কিন্তু ওরা ভয় পেয়েছে। প্রতিবাদ হলে স্কুলের অন্যান্য পড়ুয়াদেরও খুব সমস্যা হবে। স্কুলে ৩০০-এর কাছাকাছি পড়ুয়া আছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ নিশ্চই ভয় পাচ্ছে, আমার মেয়ে ওখানে পড়লে বাকিদের ওপরেও হামলা হতে পারে। প্রধানশিক্ষক আমায় জানিয়েছেন, শবরীমালা ইস্যু একটু সয়ে গেলে আমার মেয়ের ভর্তি প্রসঙ্গে আলোচনা করা হবে"।
দলিত অধিকার নিয়ে লড়াই করা বিন্দু থাঙ্কাম কল্যাণী জানিয়েছেন, মেয়েকে আগালি-র সরকারি স্কুল ছাড়িয়ে আনাইকাট্টির বেসরকারি স্কুলে আনার ভাবনা এসছে তাঁর মেয়ের সহপাঠী এবং শিক্ষকদের কাছ থেকে মানসিক অত্যাচারের শিকার হওয়ার পরেই। "আগে আমার মেয়ে সরকারি স্কুলের পরিবেশই পছন্দ করত, কিন্তু শবরীমালার ঘটনার পর থেকে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে রয়েছে স্কুলের। ক্লাস টিচার এবং অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের আমার মেয়ের সঙ্গে মিশতে মানা করে দিচ্ছে। অনেক বাচ্চা আমার মেয়েকে বলছে ও যেন আমার মতো না হয়। খুব শক্ত মনের মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও একটা সময়ে এসে আর পারছে না আমার মেয়ে। ও নিজেই আমাকে বলেছে আর ওই স্কুলে যেতে চায় না", জানালেন বিন্দু।
Read the full story in English