বহুলচর্চিত শবরীমালা রায় বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল দেশের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়েছে, মসজিদে মুসলিম মহিলাদের প্রবেশ, পার্সি মহিলাদের মামলা এবং দাউদি বোরা মামলার বিষয়ও একই। সেই মর্মেই শবরীমালায় মহিলাদের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞার মামলাটিকে বৃহত্তর বেঞ্চে স্থানান্তকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সহমত না হওয়ায় কার্যত অমিমাংসিত থেকে গেল মেয়েদের মন্দিরে প্রবেশের বিষয়টি। এদিন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে ভিন্নমত প্রকাশ করেন দুই বিচারপতি আর এফ নরিম্যান এবং ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়।অন্যদিকে, সাংবিধানিক বেঞ্চে মামলা পাঠানোর ক্ষেত্রে সহমত প্রকাশ করেছিলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি এ এম খানভিকর এবং ইন্দু মালহোত্রা।
উল্লেখ্য, শবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরের সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছিল তা পুনর্বিবেচনার আবেদন জমা পড়ে। বৃহস্পতিবার সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে রায় ঘোষণার কথা ছিল দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর দেশের তৎকালীন বিচারপতি দীপক মিশ্র নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের তরফে কেরালার শবরীমালার মন্দিরে ঋতুমতী মহিলাদের আয়াপ্পা দর্শনের অনুমতি দেওয়া হয়। বিচারপতিরা বলেছিলেন, ৫০ বছরের কম বয়সী মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাকে, ধর্মীয় আচার বলে মেনে নেওয়া যায় না। এর পরে ওই মন্দির নিয়ে উত্তাল হয়েছে কেরল-সহ গোটা দেশ। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে মন্দিরের দরজা একাধিকবার খুললেও ভক্তদের বাধায় একজনও ৫০-এর কমবয়সী মহিলা ঢুকতে পারেননি সেখানে। এই রায় পুনর্বিবেচনা করার জন্য ৪৯ টি আর্জি জমা পড়েছিল সুপ্রিম কোর্টে । পরে পুনর্বিবেচনা আর্জি গ্রহণ করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
আরও পড়ুন- শিবসেনার দাবি মানা সম্ভব নয়, জানিয়ে দিলেন অমিত শাহ
তবে সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের প্রতিবাদে কেরালার বিভিন্ন প্রান্তে এনএসএস এবং সংঘ পরিবারের শরিক সংগঠন বিক্ষোভ দেখায়। এমনকী, রাজ্যের শীর্ষস্থানীয় বিজেপি নেতারাও সেই বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেছিলেন। পাশাপাশি কংগ্রেস সহিংস আন্দোলনে যোগদান না করলেও তাঁদের বক্তব্য ছিল যে শীর্ষ আদালত হিন্দু অনুভূতিকে অবমাননা করেছে। সেপ্টেম্বরের শবরীমালার সুপ্রিম রায়কে পুনর্বিবেচনার আর্জিকেও সমর্থন জানায় কংগ্রেস।
অন্যদিকে, দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসার পর মোদী সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, শবরীমালা রায়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকেই শিরোধার্য করবে বিজেপি। এহেন পরিস্থিতিতে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ কী রায় দেয় সেদিকেই তাকিয়েই গোটা দেশ।
Read the full story in English