বাংলাদেশে দুর্গামণ্ডপে দুষ্কৃতী হামলা ও মন্দিরে ভাঙচুরের ঘটনায় উদ্বিগ্ন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। তবে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকার উপযুক্ত তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেবে বলে আশাবাদী বিপ্লব দেব। বাংলাদেশের ঘটনায় নিন্দা তৃণমূলেরও। পড়শি দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবিতে সরব ত্রিপুরা তৃণমূল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। আগরতলায় বাংলাদেশ অ্যাসিস্ট্যান্ট হাই কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে একটি স্মারকলিপি তুলে দিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
দুর্গাপুজো চলাকালীন বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি পুজোমণ্ডপে ভাঙচুর চালায় দুষ্কৃতীরা। এমনকী বেপরোয়াভাবে ভাঙচুর চলে মন্দিরেও। দিন কয়েক আগে বাংলাদেশে ইস্কনের মন্দিরেও ব্যাপক ভাঙচুর চালায় দুষ্কৃতীরা। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে বাধা ও মন্দিরে ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। তবে বাংলাদেশ সরকার দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি আশাবাদী। বিপ্লব দেব বলেন, “এই ধরনের ঘটনা দুঃখজনক। বাংলাদেশ সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। আমি নিশ্চিত যে তিনি এই ঘটনার পিছনে যারা আছে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।”
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন আতঙ্কে রয়েছেন। বাংলাদেশ সরকার যতই তাঁদের আশ্বস্ত করা চেষ্টা করুক, আতঙ্ক কিছুতেই কাটছে না। বাংলাদেশে থাকা হিন্দুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি ত্রিপুরা তৃণমূলের। রাজ্যের নাগরিক সমাজও একই দাবিতে সরব হয়েছে। ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক অরুণোদয় সাহার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অ্যাসিস্ট্যান্ট হাই কমিশনার মহম্মদ জোবায়েদ হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজনের সুরক্ষার দাবিতে তাঁরা একটি স্মারকলিপি তুলে দেন অ্যাসিস্ট্যান্ট হাই কমিশনারের হাতে।
ত্রিপুরার নাগরিক সমাজের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বৃদ্ধি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের চেতনা ও আদর্শের উপর আক্রমণ। আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাই। বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিশ্বাস, সংস্কৃতি এবং সম্পদের সুরক্ষার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নিন। বাংলাদেশ সরকারের কাছে এটাই আমাদের দাবি।” অন্যদিকে, ত্রিপুরা তৃণমূলও বাংলাদেশের এই ঘটনার কড়া নিন্দায় সরব হয়েছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর এই হামলা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকায় হতাশ ত্রিপুরা তৃণমূল।
ত্রিপুরা তৃণমূলের আহ্বায়ক সুবল ভৌমিক বলেন, “বাংলাদেশ সরকার দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সক্রিয় হয়নি। আশ্চর্যজনকভাবে আমাদের প্রধানমন্ত্রীও এব্যাপারে নিশ্চুপ। আমাদের প্রধানমন্ত্রী যদি দ্রুত এব্যাপারে তৎপরতা নিতেন তাহলে তাঁরাও কঠোর পদক্ষেপ নিতেন।”
আরও পড়ুন- জঙ্গিদের রশদ সরবরাহের অভিযোগ, মহিলা-সহ আটক ৩
উল্লেখ্য, ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের মধ্যে ৮৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে। প্রতিবেশী দেশটির তিন দিক দিয়ে ঘেরা ভারতের ত্রিপুরা। বাংলাদেশের আখাউড়া, ব্রাহ্মণবেড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী এবং সিলেট ত্রিপুরা সীমান্তের কাছাকাছি। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার দূরত্ব মাত্র ১২০ কিলোমিটার।
Read full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন