লিভ-ইনে থাকত না নিক্কি! পরিবারের বিস্ফোরক অভিযোগ, সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই সামনে এল আরও এক তথ্য। সাহিল যে নিক্কিকে খুন করেছে সেকথা জানত সাহিলের বাবা। আর তা জানার পরও ছেলেকে অন্য মেয়ের সঙ্গে বিয়ে করতে বাধ্য করেছিল বাবা। তদন্তে নেমে পুলিশ এমনটাই জানতে পেরেছে সেই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে সাহিলের বাবাকেও। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে ২০২০ সালে সাহিল এবং নিক্কি একটি মন্দিরে বিয়েও করেন। উদ্ধার করা হয়েছে ম্যারেজ রেজিস্ট্রি সার্টিফিকেটও।
পুলিশ জানতে পেরেছে গ্রেটার নয়ডার আর্য সমাজ মন্দিরে ২০২০ সালে দুজনেই বিয়ে করেন। সাহিলের পরিবার এই বিয়ে মেনে নিতে পারেনি। তাই ছেলের অন্যত্র বিয়ের ঠিক করে পরিবার। ২০২২ সালের ডিসেম্বরেই অন্যত্র সাহিলের বিয়ের ঠিক হয়। মেয়েটির পরিবারের কাছ থেকে নিক্কিকে বিয়ের বিষয়টি পুরোপুরি আড়াল করা হয়। এদিকে দিল্লি পুলিশ প্রধান অভিযুক্ত সাহিল গেহলটের বাবা সহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। সূত্রের খবর সাহিলের পরিবার ও বন্ধুরাও এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল।
দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ সাহিলের বাবা বীরেন্দ্র সিং, তার দুই ভাই এবং তার দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। বীরেন্দ্র সিংয়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০ বি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে ১০ ফেরুয়ারি সাহিল যে অন্য কাউকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন সেকথা জানতে পারেন নিক্কি। তা থেকেই শুরু বচসা। এরপরই নিখুঁত পরিকল্পনা করে ‘রুদ্ধশ্বাস খুন’।
ফ্রিজে প্রেমিকার দেহ লুকিয়ে রেখেই অন্য মহিলাকে বিয়ে করে বন্ধুদের সঙ্গে দেদার সেলিব্রেশনে মেতেছিলেন সাহিল গেহলট। রাজধানীর বুক কাঁপিয়ে দিয়েছিল কিছুদিন আগের শ্রদ্ধা ওয়ালকরের খুনের ঘটনা। প্রেমিকের হাতে নৃশংসভাবে খুন হতে হয়েছিল তরতাজা এক তরুণীকে। খুনের পর শ্রদ্ধার দেহ খণ্ড খণ্ড করে কেটে ফ্রিজে লুকিয়ে রাখার পর জঙ্গলে ফেলে দিতে গিয়ে শেষমেশ ধরা পড়েছিল তাঁর প্রেমিক তথা অভিযুক্ত আফতাব পুনাওয়ালা। আর তার রেশ কাটতেই না কাটতেই রাজধানীর নজফগড়ের এক ধাবার ফ্রিজারে উদ্ধার হয়েছে ২৫ বছরের নিক্কি যাদবের দেহ।
আরও পড়ুন: <হকের DA চেয়ে পথে সরকারি কর্মীরা, বিধানসভা অভিযানে অচল হতে পারে শহর কলকাতা>
নিজের প্রেমিকাকে ঠান্ডা মাথায় ডেটা ক্যাবেল দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে ফ্রিজের ভিতর ভরে রাখার ঘটনার মাত্র কয়েক ঘন্টা পর সামনে এসেছে বিস্ফোরক তথ্য। মৃত তরুণীর নাম নিক্কি যাদবের পরিবার জানিয়েছে, লিভ ইনে নাকি থাকতই না নিক্কি! পুলিশই পরিবার ও সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতেই গল্প ফাঁদছে।নিকির মামা প্রবীণ যাদব বলেন, নিক্কি হোস্টেলে থেকেই পড়াশুনা করতেন। তিনি লিভ-ইনে থাকতেন না। নিকির কাকা প্রবীণ যাদব আরও অভিযোগ করেছেন,পুলিশ পরিবার এবং জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করছে। অভিযুক্ত সাহিল গেহলটকে ফাঁসি দেওয়ারও দাবি জানান তিনি।
দিল্লি পুলিশ দাবি করেছে সাহিল জিজ্ঞাসাবাদের সময় স্বীকার করেছেন নিক্কির সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা। এমনকি নিক্কি তাকে বিয়ের জন্য চাপও দেন। কিন্তু তার পরিবার অন্য একজনের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক করে। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা গেছে যে সে তার গাড়ির ভিতরে থাকা একটি ডাটা ক্যাবল দিয়ে নিক্কিকে শ্বাসরোধ করে খুন করে দেহ ফ্রিজে ভরে রাখে সাহিল। মহিলা কমিশন রিপোর্ট তলব করেছে
এই ঘটনায় দিল্লি পুলিশের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। কমিশন এই বিষয়ে দিল্লি পুলিশের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে। জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রধান রেখা শর্মা টুইট করেছেন যে কেউ কীভাবে এত হৃদয়হীন হতে পারে? সঙ্গীকে শুধু খুনই করেননি, একই দিনে অন্য মেয়েকেও বিয়েও করেন।
অপরাধে ব্যবহৃত গাড়িটি ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করে দিল্লি পুলিশ। ১৪ ফেব্রুয়ারি সাহিলকে হেফাজতে নেওয়া হয়, তাকে দিল্লির একটি আদালতে পেশ করা হলে আদালত ধৃত সাহিলকে পাঁচদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়।