ভারত-পাক উত্তপ্ত সম্পর্কের আবহে এবার থমকে গেল সমঝোতা এক্সপ্রেসের চাকা। বৃহস্পতিবার সমঝোতা এক্সপ্রেস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান। রেল সূত্রে এমনটাই জানানো হয়েছে। লাহোর থেকে ১৬ জন যাত্রীকে নিয়ে আজ ভারতে আসার কথা ছিল ট্রেনটির। ওই যাত্রীরা লাহোর স্টেশনেই রয়েছেন বলে পাকিস্তানের সংবাদপত্র ‘ডন’ সূত্রে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার এয়ার স্ট্রাইকের পর থেকেই তেঁতে রয়েছে ভারত-পাক সম্পর্ক। সেদিন সন্ধের পর থেকেই নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর লাগাতার গোলাবর্ষণ চালিয়েছে পাকিস্তান। বুধবার সকালে ভারতের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাক যুদ্ধবিমান। ভারতীয় বায়ুসেনার তৎপরতায় পাক হামলা বানচাল হয়ে যায় বলে দাবি করেছে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক। পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান গুলি করে নামায় ভারত। অন্যদিকে, ভারতের একটি মিগ-২১ যুদ্ধবিমানকে পাকিস্তানে গুলি করে নামানো হয়েছে বলে দাবি করেছে সে দেশ। অভিনন্দন নামে এক ভারতীয় পাইলটকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেছে পাকিস্তান। অবিলম্বে অভিনন্দনকে প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়েছে ভারত।
আরও পড়ুন, ফের সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন পাকিস্তানের, কড়া জবাব ভারতের
এক নজরে জেনে নিন সমঝোতা এক্সপ্রেসের ইতিহাস...
সিমলা চুক্তির পর ১৯৭৬ সালের ২২ জুলাই প্রথম ছুটেছিল সমঝোতা এক্সপ্রেস। সেসময় অমৃতসর ও লাহোরের মধ্যে চলত এই ট্রেন। আশির দশকে পাঞ্জাবে গোলমালের জেরে সমঝোতা ট্রেনের গতিপথ কাটছাঁট করে আত্তারি পর্যন্ত করা হয়। যেখানে শুল্ক ও অভিবাসন দফতর তল্লাশি চালায়। প্রথমে রোজ চলত এই ট্রেন। পরে ১৯৯৪ সাল থেকে সপ্তাহে দু’দিন এই ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বর্তমানে সপ্তাহে বুধবার ও রবিবার এই ট্রেন চলে। দিল্লি-আত্তারি-লাহোর, এই রুটে চলে সমঝোতা এক্সপ্রেস। ভারত-পাকিস্তান রেলপথে একমাত্র ট্রেন সমঝোতা এক্সপ্রেস।
২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর সংসদ হামলার জেরে প্রথমবার বন্ধ রাখা হয়েছিল এই ট্রেন। এরপর ২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি ফের এই ট্রেন পরিষেবা চালু করা হয়। এরপর ২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর বেনজির ভুট্টোর হত্যার ঘটনার জেরে ফের বন্ধ রাখা হয় সমঝোতা এক্সপ্রেস। ২০০৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি সমঝোতা এক্সপ্রেসে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। যে ঘটনায় মৃত্যু হয় ৭০ জনের। হরিয়ানার পানিপথের কাছে দিওয়ানা স্টেশনে এই হামলার ঘটনা ঘটে।