Advertisment

ফের সেলফির নেশায় মৃত্যু, এবার ত্রিপুরায়

দুর্ভাগ্যজনক এই ঘটনাটি ঘটেছে ত্রিপুরার গোমতী জেলায়, রাজধানী আগরতলা থেকে আনুমানিক ৭০ কিমি দূরে ডুম্বুর লেক-এর কাছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
selfie deaths india

প্রতীকী ছবি। অলঙ্করণ: অভিজিৎ বিশ্বাস

জলাশয়ের অতিরিক্ত জল বেরিয়ে যাওয়ার পথ বা 'স্পিলওয়ে'র ধারে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ২৮ বছর বয়সী এক যুবক। দুর্ভাগ্যজনক এই ঘটনাটি ঘটেছে ত্রিপুরার গোমতী জেলায়, রাজধানী আগরতলা থেকে আনুমানিক ৭০ কিমি দূরে ডুম্বুর লেক-এর কাছে। 'স্পিলওয়ে'র পাশে বিপজ্জনক জায়গায় দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রায় ৫০ ফুট নীচে পড়ে যান ওই যুবক। জলাশয়ের অতিরিক্ত জল বেরোনোর এই 'স্পিলওয়ে' স্বাভাবিকভাবেই অত্যন্ত খরস্রোতা।

Advertisment

প্রায় ৪২ কিমি এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ডুম্বুর লেক, যা একসময় মানুষের বসতি ছিল। ১৯৭৬ সালে গোমতী হাইড্রো-ইলেকট্রিক পাওয়ার প্রজেক্টের সূচনা হয় যান্ত্রিক উপায়ে রাইমা এবং সরমা নদীর জল একত্রিত করে। এই দুই নদীর জলের মিশ্রণে সৃষ্টি হয় একটি জলাশয়, যার নাম রাখা হয় ডুম্বুর। এই জলের তোড়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয় আশেপাশের অসংখ্য গ্রামে, এবং এই প্রকল্পের কোপে নিজেদের জমি থেকে উৎখাত হয়ে যান প্রায় ২৭ হাজার উপজাতি জনগোষ্ঠীর মানুষ।

আরও পড়ুন: ফাস্ট্যাগের সময়সীমা বাড়াল কেন্দ্র

অমরপুরের এসডিপিও স্নেহাশিস দেব জানিয়েছেন যে ওই যুবকের নাম রাজেশ ভট্টাচার্য, তিনি আগরতলার বাসিন্দা। শুক্রবার তিনি গোমতী জেলার নতুনবাজারে যান কিছু আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করতে। "নতুনবাজারে আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করে তাঁর জামাইবাবু রূপক দাসের সঙ্গে ডুম্বুর লেক দেখতে যান। দুজনেই সেলফি তুলছিলেন স্পিলওয়ের পেছল রাস্তায় দাঁড়িয়ে। সেই সময়ই রাজেশ পা পিছলে ৫০ ফুট নিচের পাথরের ওপর পড়ে যান। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়," বলেন স্নেহাশিসবাবু।

পর্যটকদের স্পিলওয়ে'র ওপর হাঁটা বারণ, কিন্তু অনেকেই সেলফি তোলার আগ্রহে এই নিয়ম অমান্য করে থাকেন। রাজেশ পড়ে যাওয়ার পর তাঁকে উদ্ধার করতে কাছাকাছি কড়াইচেরা গ্রাম থেকে বাসিন্দাদের ডেকে আনেন রূপক দাস। স্পিলওয়ে'র নীচে রাইমা নদীর জল থেকে অবশেষে পাওয়া যায় রাজেশের দেহ। নতুনবাজার প্রাইমারি হেলথ সেন্টারে মৃত ঘোষণা করা হয় তাঁকে।

গোড়ায় ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা নিয়ে চালু হয় ডুম্বুর প্রকল্প, কিন্তু জলাশয়ের জল ক্রমাগত কমতে থাকার ফলে কমেছে উৎপাদনের মাত্রাও। নিয়মিত বৃষ্টির অভাবে বর্তমানে বছরে প্রায় ছ'মাস বন্ধই থাকে এই প্রকল্প। যখন চালু থাকে, তখনও নির্ধারিত ক্ষমতার অর্ধেক বিদ্যুৎও উৎপাদন হয় না।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের একটি সমীক্ষায় জানা যায়, অক্টোবর ২০১১ এবং নভেম্বর ২০১৭ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে ১৩৭ টি ঘটনায় মোট ২৫৯ জন 'সেলফি মৃত্যুর' শিকার হয়েছেন। মর্মান্তিক এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে ভারত, এবং দুই, তিন, ও চার নম্বরে রয়েছে যথাক্রমে রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ও পাকিস্তান।

tripura
Advertisment