Advertisment

অযোধ্যা মামলা থেকে 'বরখাস্ত' মুসলিম পক্ষের হিন্দু আইনজীবী

সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে ধাওয়ান বলেন, "আমি সবক'টি মুসলিম পক্ষের হয়ে যৌথভাবে সওয়াল করেছি এবং সেটাই করতে চাইব। তবে, মুসলিম পক্ষগুলি আগে তাদের নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্যগুলি মিটিয়ে নিক"।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Rajeev Dhavan

ফেসবুকে ক্ষোভ উগরে দিলেন রাজীব ধাওয়ান

সুপ্রিম রায়ের পরেও বিতর্ক পিছু ছাড়ল না অযোধ্যা মামলার। মুসলিম পক্ষের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেও বরখাস্ত হলেন বলে মঙ্গলবার চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন বর্ষীয়ান আইনজীবী রাজীব ধাওয়ান। অসুস্থতার জন্যই তাঁকে সরানো হয়েছে, এমন গুঞ্জন শোনা গেলেও, এদিন তা অস্বীকার করেন ধাওয়ান। এই প্রবীণ আইনজ্ঞ জানিয়ে দেন, অযোধ্যা মামলার পুনর্বিবেচনার আবেদনে এবার থেকে তাঁর আর কোনও ভূমিকা থাকবে না।

Advertisment

আরও পড়ুন: ইশরাত জাহান মামলায় অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারকে রাষ্ট্রপতি পদক

ঘটনাক্রম নিয়ে ফেসবুকেও সোচ্চার হন ধাওয়ান। তিনি লেখেন, "জামিয়তের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী এজাজ মাকবুল বাবরি মসজিদ মামলা থেকে আমাকে বরখাস্ত করেছেন। কোনও রকম সংকোচ না রেখেই আমি এই বরখাস্ত মেনে নিয়ে একটি চিঠিও পাঠিয়েছি। এখন থেকে এই মামলা এবং পুনর্বিবেচনার সঙ্গে আমি কোনওভাবেই জড়িত নই।" অপর একটি পোস্টে মুসলিম পক্ষের হয়ে সওয়াল করা রাজীব ধাওয়ান বলেন, "আমাকে জানানো হয়েছে যে মি: মাদানী ইঙ্গিত দিয়েছেন যে আমি অসুস্থ থাকায় আমাকে মামলা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই কথাটি অর্থহীন। বরং তিনি তাঁর অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড এজাজ মকবুলকে নির্দেশ দিয়েছেন আমাকে বরখাস্ত করার জন্য। কিন্তু যে খবর রটানো হচ্ছে তা সার্বিকভাবে মিথ্যা।"

আরও পড়ুন: ‘সুপ্রিয়া সুলেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী, প্রত্যাখ্যান করেছি’

প্রসঙ্গত, সোমবারই সুপ্রিম কোর্টের জামিয়ত-উলেমা-হিন্দের তরফে অযোধ্যা রায়ের পুনর্বিবেচনার আবেদন (রিভিউ পিটিশন) জমা পড়েছে। বিতর্কিত জমিতে মন্দির বানানোর যে নির্দেশ শীর্ষ আদালত দিয়েছে, তার পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন জমা দিয়েছে জামিয়ত উলেমা-এ-হিন্দ। আইনজীবী এজাজ মকবুল অবশ্য জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়া আবেদনে নাম নেওয়া হয়নি আইনজীবি রাজীব ধাওয়ানের। সংবাদসংস্থা এএনআইকে তিনি বলেন, "রাজীব ধাওয়ানকে মামলা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে অসুস্থতার কারণে, এমনটা যে বলা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভুল। গতকাল মামলা দায়ের করার সময় রাজীব ধাওয়ানকে পাওয়া যায়নি। সে কারণেই তাঁর নাম উল্লেখ করা সম্ভব হয়নি। এটি এমন কিছু বড় বিষয় নয়।"

এদিকে, ধাওয়ানকে সরানোর খবর ছড়িয়ে পড়তেই অন্যান্য মুসলিম পক্ষগুলি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুর চড়ায়। ধাওয়ানকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে দাবি জানায় তারা। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনেল ল বোর্ডের আইনজীবী এমআর সামশেদ বলেন, "মিঃ ধাওয়ান এই মামলার জন্য প্রাণ পাত করে দিয়েছেন এবং তিনিই ৬-৭টি মুসলিম পক্ষের প্রধান আইনজীবী (এই মামলায়)। কেবল একটি পক্ষের জন্য অন্যান্য পক্ষগুলির তাঁকে ছেড়ে দেওয়া মোটেই উচিত হবে না। বাকিরা ডঃ ধাওয়ানকে ফিরিয়ে আনবেন।"

আরও পড়ুন: সারা দেশে এনআরসি ২০২৪ এর মধ্যে, ঘোষণা অমিত শাহের

অন্যদিকে, সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে ধাওয়ান বলেন, "আমি সবক'টি মুসলিম পক্ষের হয়ে যৌথভাবে সওয়াল করেছি এবং সেটাই করতে চাইব। তবে, মুসলিম পক্ষগুলি আগে তাদের নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্যগুলি মিটিয়ে নিক"।

উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের অযোধ্যা রায়ের রিভিউ পিটিশন জমা পড়েছে সোমবার। বিতর্কিত জমিতে মন্দির বানানোর যে নির্দেশ শীর্ষ আদালত দিয়েছে, তার পর্যালোচনা চেয়ে আবেদন জমা দিয়েছে জামিয়ত উলেমা-এ-হিন্দ। প্রথম আবেদনকারী এম সিদ্দিকের আইনি উত্তরাধিকারী তথা জামিয়ত উলেমা-এ-হিন্দের সভাপতি মৌলানা সৈয়দ আশাদ রশিদি রিভিউয়ের এই আবেদন জমা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই রায়ে ভুল হয়েছে বলে মনে হচ্ছে এবং সংবিধানের ১৩৭ নং অনুচ্ছেদের আওতায় তিনি এর রিভিউ চান। রিভিউ পিটিশনে বলা হয়েছে, শীর্ষ আদালত দু পক্ষের মধ্যে ভারসাম্য আনতে গিয়ে হিন্দু পক্ষকে বেআইনিভাবে সুবিধা দিয়েছে এবং মুসলিম পক্ষকে অন্য জায়গায় পাঁচ একর জমি দিয়েছে, যা মুসলিম পক্ষের সওয়াল বা আবেদনের বিষয় ছিল না। তবে সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড এবং মৌলানা মাহমুদ মাদানির নেতৃত্বাধীন জামিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ এ মামলার রায়ের রিভিউয়ের জন্য আবেদন করবে না বলে জানিয়েছে।

Read the full story in English

supreme court Ayodhya
Advertisment