/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/03/indian-railways-759.jpg)
রেলের ভাঁড়ারে কোপ! প্রবীন নাগরিকদের রেলটিকিটে ছাড় এখন বিশ বাঁও জলে
মহামারী পরবর্তীতে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে চলতে শুরু করেছে রেল। মহামারী শুরুর আগে প্রবীণ নাগরিকরা রেলযাত্রায় ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ১,৬৬৭ কোটি টাকার ছাড় পেয়েছিলেন। কিন্তু করোনা মহামারী সেই পরিস্থিতিতে আমূল বদল আনে। গত ৪ঠা অগাস্ট রেলওয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে মহামারীর আগে তাদের রেল ভাড়ার ক্ষেত্রে ৪০-৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়ের সুযোগ মিলত। কিন্তু কোভিড সংকটের কারণে সেই ছাড় বন্ধ রয়েছে।
যদিও সংসদীয় কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী স্লিপার ক্লাস এবং এসি থ্রি-টায়ার ভাড়ার ক্ষেত্রে প্রবীণ নাগরিকদের ভাড়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করুক রেল এবং অবিলম্বে তা চালু করার কথাও সুপারিশে বলা হয়েছে। কমিটি আরও বলে যেহেতু রেল তার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে তাই প্রবীণ নাগরিকদের ছাড়ের বিষয়টি রেলের গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিৎ। যদিও কমিটির এই সুপারিশের প্রেক্ষিপ্তে রেলমন্ত্রী লোকসভায় এক বিবৃতিতে বলেন, করোনার কারণে রেলের যে বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সেই ক্ষতি বিবেচনা করে এই মুহূর্তে প্রবীণ নাগরিকদের ছাড়ের বিষয়টি চালু করা বাঞ্ছনীয় নয়।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস কর্তৃক পর্যালোচনা করা ডেটা দেখায় যে যখন সামগ্রিক প্রবীণ নাগরিক ছাড়ের কারণে রেলের লোকসানের অঙ্ক ২০১৭-২০১৮ সালে ১,৪৯২ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২০১৯-২০ সালে ১,৬৬৭ কোটি টাকা হয়েছে, তখন অসংরক্ষিত টিকিটে প্রাপ্ত ছাড় কমবেশি একই রয়ে গেছে। অসংরক্ষিত টিকিটে ছাড়ের বোঝা ২০১৭-১৮ সালে, ২১২ কোটি টাকা। পরের বছর তা বেড়ে হয়েছে ২২৩ কোটি টাকা আবার ২০১৯-২০ সালে তা নেমে আসে ২১৫ কোটি টাকায়।
একইভাবে, নন-এসি স্লিপার ক্লাসের কারণে রেলের ক্ষতির পরিমাণ ২০১৭-১৮ সালে ছিল ৪২৭ কোটি টাকা। পরের বছর বেড়ে হয়েছে ৪৫৮ কোটি টাকা। তার পরের বছর তা ৪৫১ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। ২০২০ সালের মার্চের শেষ সপ্তাহে দেশব্যাপী লকডাউনের পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশেই সমস্ত ট্রেন চলাচল স্থগিত করা হয়।
আরও পড়ুন: < ফের রক্তাক্ত উপত্যকা, জঙ্গিদের গুলিতে ঝাঁঝরা আরও এক পরিযায়ী শ্রমিক! >
এসি থ্রি টায়ারের ক্ষেত্রে সিনিয়র সিটিজেন ছাড়ের কারণে রেলের ক্ষতির পরিমাণ বছরের পর বছর বেড়েই চলেছে। ২০১৭-২০১৮ সালে লোকসানের পরিমাণ ছিল ৪১৯ কোটি টাকা। পরের বছর যা বেড়ে হয়েছে ৪৭৪ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ সালে এই অঙ্ক বেড়ে দাঁড়ায় ৫০৪ কোটি টাকা । এসি টু টায়ারের চার বছর আগে লোকসানের অঙ্ক ছিল ২৪৭ কোটি টাকা । তা ২০১৯-২০ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮৫ কোটি টাকায়
৫৮ বছরের ঊর্ধ্বে মহিলা এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সি পুরুষরা দূরপাল্লা ট্রেনে ভ্রমণের ক্ষেত্রে এই ছাড়ের সুবিধা পেতেন। যদিও সূত্র মারফৎ খবরে জানা গিয়েছে যেহেতু নন-এসি স্লিপার এবং সাধারণ শ্রেণিতে প্রাপ্ত ছাড় থেকে রেলের রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণের সম্ভাবনা অনেকটাই কম, তাই এই দুটি শ্রেণিতে ছাড় ফিরিয়ে আনা যায় কিনা তা খতিয়ে দেখছে রেল।