'দেশদ্রোহিতার' অভিযোগে গ্রেফতার শারজিল ইমাম। বিহারের জাহানাবাদ থেকে জেএনইউ-এর এই পিএইচডি স্কলারকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। দেশের পাঁচটি রাজ্যে তার বিরুদ্ধে 'দেশদ্রোহিতার' মামলা রুজু হয়েছিল। সিএএ-বিরোধী আন্দোলনে গত ১৬ জানুয়ারি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে শারজিলের বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে সে দেশবিরোধী স্লোগান দেয় বলে অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের। তার বিরুদ্ধে আসাম, দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশ, ও মণিপুরে মামলা রুজু হয়।
গত রবিবার থেকেই বিহারে শারজিলের সন্ধানে তল্লাশি শুরু করেছিল দিল্লি পুলিশ। এদিন দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের কর্মীরা পাঁচটি দলে ভাগ হয়ে রাজ্যের বিভিন্নপ্রান্তে তল্লাশি করেন। দিল্লি পুলিশের সহকারী মুখপাত্র অনিল মিত্তল সোমবারই বলেছিলেন, "বিহারের পাশাপাশি মুম্বই, দিল্লিতেও শারজিলের সন্ধানে তল্লাশি হয়।"
জাহানাবাদের পুলিশ সুপার মণীশ জানিয়েছেন, "রবিবার সকালে দিল্লি পুলিশের দল শারজিলের সন্ধানে তার গ্রামের বাড়ি কাকোতে গিয়েছিল। তাদের সহায়তা করতে সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় পুলিশ কর্মীরা।" শারজিলের তিন অত্মীয়কে প্রায় ঘন্টা চারেক আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ধৃত শারজিলের মা আফসান রহিমের দাবি, "ভাইরাল হয়ে যাওয়া ছেলের ভিডিওটি বিকৃত করে নির্বাচিত অংশবিশেষ দেখানো হচ্ছে। আমার ছেলে চোর নয়। ওকে বারংবার হেনস্থা করছে পুলিশ।" তবে ছেলের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই বলে দাবি করেন মধ্যবয়সী ওই মহিলা।
আরও পড়ুন: ‘ঘরে ঢুকে মেয়ে-বোনদের ধর্ষণ করতে পারে শাহিনবাগের বিক্ষোভকারীরা’
সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও-র ভিত্তিতে শারজিল ইমামের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করার অভিযোগ এনে প্রথম মামলা করে আসাম সরকার। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে শারজিলকে বলতে দেখা যাচ্ছে, "আসামকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করা উচিত। আসামে মুসলমান ও বাঙালিদের হত্যা করা হচ্ছে। কয়েক মাসের মধ্যে সব বাংলাভাষীকে মারা শেষ হয়ে যাবে। নির্বিচারে তাঁদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে। তাই রেললাইন বিচ্ছিন্ন করে ভারত থেকে আসামকে আলাদা করতে হবে। অন্তত কয়েক দিনের জন্যে হলেও এই কাজ করতেই হবে।"
শারজিল ইমাম বর্তমানে জেএনইউ থেকে আধুনিক ইতিহাসে পিএইচডি করছেন। বম্বে আইআইটি-র কম্পিউটার সায়েন্সের স্নাতক তিনি। প্রথম থেকেই শাহিনবাগ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন। দেশদ্রোহিতার অভিযোগ প্রসঙ্গে শনিবার শারজিল দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছিলেন, "আমি শান্তিপূর্ণ পথে প্রতিবাদ, সড়ক অবরোধের কথা বলেছিলাম। আসলে চাক্কা জ্যামের কথা বলেছিলাম।" তাঁর যে ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে তা সম্পাদিত অংশ বলে অভিযোগ করেন জেএনইউ-এর স্কলার। তাঁর কথায়, "সম্পাদিত ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। ওটা থেকে আমার বিরুদ্ধে পুলিশ কিছুই প্রমাণ করতে পারবে না।"
Read the full story in English