সদ্য চল্লিশ পেরোনো বাল কৃষ্ণ তার কাপড়ের দোকান থেকে সবেমাত্র বাড়ি ফিরেই পরপর গুলির শব্দ শুনতে পান। ছুটে গিয়ে নিজের রাইফেল নিয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে ২ রাউণ্ড গুলিও ছোঁড়েন। তিনি বলেন "আমি আমার রাইফেলটি তুলে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম, দেখলাম দুই বন্দুকধারী জঙ্গি আশেপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা আমার বাড়ির খুব কাছে ছিল। আমি দুই রাউন্ড গুলি চালাই এবং জঙ্গিরা আতঙ্কিত হয়ে পাশের জঙ্গলে পালিয়ে যায়।" দ্রুত সিদ্ধান্ত না নিলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারত।
সেদিনের সন্ধায় জঙ্গিরা কমপক্ষে চারটি বাড়ি লক্ষ্য গুলি করে, এই ঘটনায় জঙ্গিরা চারজনকে হত্যা করে এবং ছয়জন গ্রুতর আহত হন। আপার ডাংরি পঞ্চায়েতের সদস্য দর্শন শর্মা বলেন, ‘বাল কৃষ্ণ গুলি চালানোর পর জঙ্গিরা জঙ্গলে পালিয়ে যায়। তিনি বেরিয়ে এসে গুলি না চালালে আরও বড় বিপদ হতে পারত”। রবিবার সন্ধ্যার ফের সোমবার সকাল। ভয়াবহ জঙ্গি হামলা জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরিতে। রাজৌরির ডাংরি গ্রামে পরপর তিনটি বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনায় সোমবার সকালে তিন শিশু এবং দুই মহিলা সহ পাঁচজন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে মৃত্যু হয় এক শিশুর।
রবিবার (১ জানুয়ারি) জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরিতে তিন সংখ্যালঘুর সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। রাজৌরির আপার ডাংরি এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ৪ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। ৬ জন আহত হয়েছেন। এই হামলায় এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় লোকজন এই হামলাকে ‘টার্গেট কিলিং’ বলে বর্ণনা করেছেন ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় মানুষজন। স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, “জেলা প্রশাসন ব্যর্থ । আমাদের দাবি এলজি মনোজ সিনহা এখানে এসে আমাদের দাবি শুনে যথাযথ ব্যবস্থা অবিলম্বে গ্রহণ করুন”। হামলার খবর পেয়ে তৎপর সেনাবাহিনী। পুরো এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: < ‘লাভ জিহাদে ‘ফোকাস’ করুন, রাস্তাঘাট-ড্রেন নিয়ে মাথা ঘামাবেন না’! বিজেপি নেতার মন্তব্যে হুলস্থূল >
স্থানীয়দের অভিযোগ, সন্ত্রাসবাদীরা প্রথমে দীপক কুমারের বাড়ি লক্ষ্য করে তাকে হত্যা করে। এর পর এই সন্ত্রাসীরা প্রীতম শর্মার বাড়িতে গিয়ে তাঁকে ও তাঁর ছেলে আশিসকে গুলি করে হত্যা করে। এরপর তৃতীয় বাড়িতে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এই বাড়িটি সতীশ কুমার নামে এক ব্যক্তির। ঘটনার খবর পেয়ে ডাংরি এলাকায় অভিযান জোরদার করে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী, আধাসামরিক বাহিনী এবং জম্মু পুলিশ এলাকার প্রতিটি কোণে তল্লাশি চালাচ্ছে। পাশাপাশি ড্রোনের মাধ্যমেও ওই এলাকা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
ডাংরিতেও, কয়েক বছর আগে, জেলা প্রশাসন ঘোষণা করে যে শান্তি বজায় থাকলে ৬০ উর্ধ্ব সকলকেই অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। যেহেতু বাল কৃষ্ণ ৬০ পেরোয়নি তাই পুলিশ তাকে রাজৌরি থানায় একটি পাসপোর্ট ছবি জমা দিতে বলে, যাতে তাকে তার বন্দুকের লাইসেন্স দেওয়া যায়। এখনও তিনি লাইসেন্স পাননি। তিনি বলেন, ‘ভাগ্যিস বন্দুকটা ছিল না হলে আরও কত লোককে বেঘোরে মরতে হত জঙ্গিদের হাতে”।