করোনা সতর্কতা। দলের সব সাংসদদের চলতি বাজেট অধিবেশনে আর যোগ না দেওয়ার নির্দেশ দিল তৃণমূল। এমনকী বলা হয়েছে, দিল্লিতে না থেকে সাংসদরা যেন তাঁদের কেন্দ্রে ফিরে আসেন। তৃণমলের রাজ্যসভার দলনেতা সংসদীয় অধিবেশন বাতিলের দাবি জানিয়ে প্রিসাইডিং অফিসারকে চিঠিও দিয়েছেন।
ওই চিঠিতে লেখা হয়েছে, 'করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ভিড় এড়ানো ও সামাজিক মেলামেশা করতে নিষেধ করা হচ্ছে। তাও সংসদীয় অধিবেশন জারি রয়েছে। ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের অতি সাবধানতা থাকতে বলা হচ্ছে। রাজ্যসভার ৪৪ শতাংশ সাংসদ ও রাজ্যসভার ২২ শতাংশ সাংসদেরই বয়স ৬৫ বছর বা তার বেশি। শুধু সাংসদরাই নন, প্রতিদিন নানা কাজে হাজারেরও বেশি মানুষ সংসদভবনে আসেন। ফলে অধিবেশন জারি থকলে সম্পূর্ণ বিষয়টিই পরস্পর বিরোধী বার্তা বহন করে, যা বিপজ্জনক।'
করোনার থাবা ভারতজুড়ে ভয়ঙ্কর হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে গণপরিবহণ ব্যবস্থা বন্ধের সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে যাত্রীবাহী সব ট্রেন চলাচল ও আন্তঃরাজ্য বাস পরিষেবায়। করোনায় সংক্রমণ ঠাকাতে রাজধানী শহর সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতে এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪১৫। মৃতের সংখ্যা ৭। বাংলাতেও কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্য়া বেড়ে হয়েছে ৭। এই পরিস্থিতিতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবেই তাই তৃণমূলের পক্ষ থেকে দলীয় সাংসদদের বাজেট অধিবেশন এড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: Live: ‘লকডাউন’কে গুরুত্ব দিন, সব নির্দেশ মেনে চলুন: প্রধানমন্ত্রী
প্রসঙ্গত, স্বেচ্ছা কোয়ারান্টাইনে রয়েছেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। তবে করোনা পরীক্ষায় তাঁর শরীরে কোনও জীবাণু মেলেনি। বর্তমানে লোকসভায় তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা ২২। রাজ্যসভায় রয়েছেন জোড়া-ফুলের ১৩ সাংসদ।
এদিকে, গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখতে আজ বিকেল পাঁচটা থেকে আগামী ২৭ মার্চ পর্যন্ত কলকাতা সহ রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। বাকি জেলাগুলির সদর ও বেশ কয়েকটি মহকুমাতেও হবে লকডাউন। এই সময়কালে রাস্তাঘাটে সাত জনের বেশি মানুষের জমায়েতের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। বন্ধ থাকছে ট্রেন, মেট্রো, বাস-সহ যাবতীয় গণপরিবহণ ও অফিস, কারখানা। প্রয়োজন ছাড়া সকলকেই বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, নির্দেশিকা না মানলে আইন মোতাবেক পদক্ষেপ করা হবে।
রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের ক্যাবিনেট সচিব ও প্রধান সচিবের সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন দেশের সব রাজ্যের মুখ্য সচিবরা। এদিনে বৈঠকে বিভিন্ন রাজ্যের করোনাভাইরাস আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে এমন কেন্দ্রশাসিত আঞ্চল সহ ২২ রাজ্যের ৭৫টি জেলাকে চিহ্নিত করে ওই জেলায় জরুরি পরিষেবা ছাড়া অন্য সমস্ত কাজকর্ম বন্ধের পরামর্শ দেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনা, এই দুই জেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
Read the full story in English