মধ্যপ্রদেশের কুনো ন্যাশনাল পার্ক (কেএনপি) একমাসেরও কম সময়ে দুটি চিতার মৃত্যুর সাক্ষী হয়েছে। আফ্রিকা থেকে আনা বড় বিড়াল প্রজাতির এই প্রাণীদের জন্য কুনো জাতীয় উদ্যানে যথেষ্ট জায়গা নেই। সেটাই চিতাগুলোর মৃত্যুর অন্যতম কারণ। এমনটাই দাবি করেছেন ভারতের বন্যপ্রাণী প্রতিষ্ঠানের একজন প্রাক্তন আধিকারিক। ভারত থেকে চিতা অবলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। সেই চিতাকে দেশে ফিরিয়ে আনার উচ্চাভিলাষ ভারতের দীর্ঘদিনের। উচ্চাভিলাষ পূরণ করার পথে দেশ এগিয়েছে।
আফ্রিকা থেকে আনা চিতাগুলোর দেখভালের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে জাতীয় ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ (এনটিসিএ)-র হাতে। কিন্তু, তারপরও দুটি চিতার মৃত্যু হয়েছে। ব্যাপারটা একেবারেই মেনে নিতে পারছে না কেউই। সেজন্য সোমবার নয়াদিল্লিতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডেকেছে প্রশাসন। নামিবিয়া থেকে আনা মোট ২০টি চিতা কুনো ন্যাশনাল পার্কে আনা হয়েছিল। গত আট মাস ধরে এই চিতা আনা নেওয়ার কাজ চলেছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এক আধিকারিক।
কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, একটি চিতার চলাচলের জন্যই প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা দরকার। সেখানে কুনো ন্যাশনাল পার্ক মাত্র ৭৪৮ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। আর, এর বাফার জোন রয়েছে ৪৮৭ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। আর, এতেই চিতাগুলোর পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সমস্যা হচ্ছে। এমনটাই জানিয়েছেন, 'দ্য ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া'-র (ডব্লিউআইআই) প্রাক্তন ডিন যদবেন্দ্রদেব বিক্রমসিংহ ঝালা। তিনি অতীতে দেশের চিতা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ঝালা সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে সরাসরি বলে দিয়েছেন যে কুনো জাতীয় উদ্যানের কাছে এই প্রাণীগুলোর জন্য যথেষ্ট জায়গাই নেই।
আরও পড়ুন- মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে আসছি! মিথ্যা পরিচয়ে মহিলাকে ধর্ষণ, লক্ষ লক্ষ টাকা লোপাটের অভিযোগ
তিনি বলেন, 'চিতার জন্য ৭৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা মোটেও যথেষ্ট না। আমাদের একটা না, অনেকগুলো চিতার সংখ্যা বাড়াতে হবে। এজন্য প্রাণীদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার ব্যবস্থা থাকা চাই। সংখ্যা বাড়াতে গেলে এটা খুবই দরকার।' ঝালা জানিয়েছেন, একমাত্র চিতারা যদি কুনোর পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে, তবেই তারা টিকে থাকবে। না-হলে, চিতাগুলোকে স্ত্রী ও পুরুষ চিতার জোড়া হিসেবে বিভিন্ন অভয়ারণ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। এভাবেই একমাত্র চিতাগুলোকে টেকানো যেতে পারে বলেই তিনি জানিয়েছেন।