২৯ সেকেন্ডের ভয়াবহতা! সামান্য সময়ের মধ্যেই উত্তরপ্রদেশের লখিমপুরে রবিবার দুপুরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এসইউভি পিষে দেয় বিক্ষোভরত কৃষকদের। তাতে চারজনের মৃত্যু হয়। সেই ভয়াবহ ভিডিও প্রকাশ্যে এনেছে কংগ্রেস। ভিডিও টুইট করে তাদের দাবি, ইচ্ছাকৃত ভাবে কৃষকদের পিষে দেয় মন্ত্রীর গাড়ি।
ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, আন্দোলনরতদের একটি দল এগিয়ে যাচ্ছিল কৃষিখেতের ধারে একটি রাস্তার দিকে। তখনই পিছন থেকে গাড়িটি গতি বাড়িয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। একজন চলন্ত গাড়ির বনেটে লাফ দেন গাড়ি ধাক্কা মারতেই। তারপর সামনে সবাইকে পিষে বেরিয়ে যায় গাড়িটি। ততক্ষণে বেশ কয়েকজনের দেহ রাস্তার ধারে দলা পাকিয়ে পড়েছিল।
ভিডিওটি টুইটারে ট্র্যাক্টর টু টুইটার নামে একটি অ্যাকাউন্ট থেকেও পোস্ট হয়। তারা নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়ায় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের প্রতিবাদকে সমর্থন জানিয়েছে। এই ঘটনার পর হিংসা ছড়ালে আরও চার জনের মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থলে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলে। তাঁরা বলেছেন, চোখের সামনে সেই ভয়ঙ্কর ঘটনা সারাজীবন তাঁদের তাড়া করবে।
কৃষকরা এবং উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সূত্র অনুযায়ী, কয়েক দিন আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র কৃষকদের উদ্দেশে যে ধরনের উস্কানিমূলক মন্তব্যের জেরে ক্ষোভ দানা বাঁধতে থাকে। গুরমিত সিং নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, "সেদিন গাড়িগুলি কৃষকদের পিষে দেওয়ার সময় জিগজ্যাগ কায়দায় এগিয়ে যায়। তার মধ্যে একটি গাড়িতে ছিলেন মন্ত্রীর ছেলে আকাশ মিশ্র। আমাদের এক নেতা তেজেন্দর সিং ভির্ককে গাড়ি পিষে অনেকটা দূরে টেনে নিয়ে যায়। কেউ কেউ গাড়ির নীচে আটকে যান। কিন্তু গাড়ি থামেনি। আমার চোখকে এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না।"
এক শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, "মন্ত্রীর ছেলে বুঝতে পারেননি যে এত মানুষের জমায়েত হবে। তাই তিনি পালাতে গিয়েছিলেন, যার ফলে এই ঘটনা হয়।" অজয় মিশ্র কয়েকদিন আগে যে মন্তব্য করে উত্তেজনা বাড়িয়েছিলেন সেটা ছিল, "এই দেশ কৃষকদের দেশ। আমিও কৃষক। আপনারাও। আমরা যদি রাস্তায় নামতাম তাহলে ওদের পালানোর পথ থাকত না। পিছনে কাজ করার লোক। এরকমই ১০-১৫ জন চেঁচামেচি করে। যদি কৃষি আইন খারাপ হত তাহলে গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ত।"
আরও পড়ুন লখিমপুর কাণ্ডে বিজেপির মধ্যে দানা বাঁধছে ক্ষোভ, নেতৃত্বকেই কাঠগড়ায় তুলছেন নেতা-মন্ত্রীরা
তিনি আরও বলেন, "এরকম লোকদের বলতে চাই, শুধরে যান। নাহলে সামনাসামনি এসে শুধরে দেব আমরা। দুই মিনিট লাগবে শুধু।" ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের লখনউ শাখার প্রধান দিলবাগ সিং বলেছেন, "কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ্যে ২৫ সেপ্টেম্বর এই হুমকি দেওয়ার পর উত্তেজনা বাড়ে এলাকায়।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন