দেশের কল্যাণের স্বার্থেই ‘ফ্রিবি’ ইস্যুতে বিতর্ক গুরুত্বপূর্ণ। এবার এমনটাই জানাল সুপ্রিম কোর্ট। নির্বাচনের সময় 'ফ্রিবি সংস্কৃতি' নিষিদ্ধ করার আবেদনের শুনানিতে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট একথা জানিয়েছে। প্রধান বিচারপতি এন ভি রমনা একজন রাজনীতিবিদের 'ফ্রিবি' এবং 'কল্যাণমূলক প্রকল্প' হিসাবে দেওয়া প্রতিশ্রুতির মধ্যে পার্থক্য করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন।
প্রধান বিচারপতি জিজ্ঞাসা করেন যে কেন্দ্র 'বিনামূল্যে' বিষয়টি নিষিদ্ধ করে যদি কোনও আইন আনে, তবে কি সেটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের অন্তর্ভুক্ত হবে? পর্যবেক্ষণে তিনি বলেন, 'ধরুন কেন্দ্র এমন একটি আইন করল যাতে রাজ্যগুলো বিনামূল্যে কোনও কিছু দিতে না-পারে। এই ধরনের আইন কি বিচার বিভাগীয় তদন্তের আওতাভুক্ত হবে?'
শুনানির সময়, আদালত তামিলনাড়ুর অর্থমন্ত্রী পালানিভেল থিয়াগা রাজনের মন্তব্যকে ব্যতিক্রম হিসেবে ধরেছে। সিজেআই রমনা ডিএমকে সাংসদ ও প্রবীণ আইনজীবী পি উইলসনকে বলেন, 'আমি অনেক কিছু বলতে চাই। কিন্তু, আমি প্রধান বিচারপতি হয়ে আপনার দল বা মন্ত্রী সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না।' এর আগে থিয়াগা রাজন, রেভডি (ফ্রিবিজ) সংস্কৃতি ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেছিলেন। আর, কেন রাজ্য সরকারগুলোকে তাদের নীতি পরিবর্তন করতে হবে, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন।
প্রধান বিচারপতি রমনা মঙ্গলবার বলেন, 'আমি মনে করি না যে জ্ঞান শুধুমাত্র একজন ব্যক্তি বা একটি নির্দিষ্ট দলেরই আছে। আমরাও দায়ী। কথা বলার ধরন, বিবৃতি দেওয়া… ভাববেন না যে আমরা এটাকে উপেক্ষা করছি, আমরা চোখ বন্ধ করে আছি।' প্রবীণ আইনজীবী গোপাল শংকরনারায়ণন, সেই সব আবেদনকারীদের একজন, যারা 'ফ্রিবিজ'-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন।
আরও পড়ুন- নাসার টেলিস্কোপে বৃহস্পতির নতুন ছবি, যা বদলে দিচ্ছে এই গ্রহ সম্পর্কে ধ্যান-ধারণা
এই প্রসঙ্গে শংকরনারায়ণন বলেন, 'তামিলনাড়ুর অর্থমন্ত্রী যে সাক্ষাত্কার দিয়েছেন এবং তিনি সুপ্রিম কোর্টের সম্পর্কে যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করেছেন, তা আমি দেখেছি। আমি মনে করি এটি সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য। তাদের সীমারেখা আছে। তাঁদের সেটাকে সম্মান করা উচিত।'
চলতি মাসের শুরুর দিকে শেষ শুনানির সময়, সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল যে আদালত রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া থেকে আটকাতে পারে না। একইসঙ্গে জানিয়েছিল, 'ফ্রিবি' কী, তার সংজ্ঞা নিরূপণ করা প্রয়োজন। বিজেপির আইনজীবী নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়ের একটি আবেদনের শুনানির সময় একথা বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট।
আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায় আবেদন করেছিলেন, আদালত এমন নির্দেশ দিক যাতে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে ভোটারদের কাছে বিনামূল্যের প্রতিশ্রুতি দিতে বাধা পায়। পালটা প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেছিলেন, 'সকলের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবা, পানীয় জলের ব্যবস্থা এবং ইলেকট্রনিক্স দ্রব্যের ব্যবহারকে কি বিনামূল্যের পরিষেবা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে?'
Read full story in English