Advertisment

মুসলমানরা 'স্বাভাবিকভাবে অপরাধ প্রবণ', মনে করেন ভারতের ৫০ শতাংশ পুলিশকর্মী

দেশের ২১ টি রাজ্যে থানায় কর্মরত ১২ হাজার পুলিশকর্মী এবং তাঁদের প্রায় ১১ হাজার আত্মীয় পরিজনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে গঠিত হয়েছে এই সমীক্ষা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
police report

প্রতীকী ছবি

ভারতে প্রতি দুজনের মধ্যে একজন পুলিশকর্মী মনে করেন, অপরাধের প্রতি "স্বাভাবিক প্রবণতা" রয়েছে মুসলমানদের। এই তথ্য প্রকাশ করেছে ২০১৯-এর 'স্ট্যাটাস অফ পুলিসিং ইন ইন্ডিয়া' শীর্ষক রিপোর্ট।

Advertisment

সমীক্ষায় আরও প্রকাশ পেয়েছে যে ৩৫ শতাংশ পুলিশকর্মী মনে করেন, গোহত্যার ক্ষেত্রে "অপরাধী"র শাস্তি হবে গণপ্রহার, এমনটাও স্বাভাবিক, এবং ৪৩ শতাংশ বিশ্বাস করেন যে ধর্ষণের ক্ষেত্রেও গণপ্রহার হওয়া স্বাভাবিক।

পুলিশের প্রাচুর্য এবং কাজের পরিবেশ সংক্রান্ত এই রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অফ ডেভেলপিং সোসাইটিজ-এর অন্তর্ভুক্ত 'কমন কজ অ্যান্ড লোকনীতি প্রোগ্রাম' নামের একটি এনজিও। মঙ্গলবার রিপোর্টটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জে চেলামেশ্বর।

দেশের ২১ টি রাজ্যে থানায় কর্মরত ১২ হাজার পুলিশকর্মী এবং তাঁদের প্রায় ১১ হাজার আত্মীয় পরিজনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে গঠিত হয়েছে এই সমীক্ষা।

আরও পড়ুন: রাজনৈতিক চাপই তদন্তে মূল বাধা, মনে করছেন পুলিশকর্মীরা

সমীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত ৩৭ শতাংশ পুলিশকর্মীর মতে, ছোটখাটো অপরাধের খুচরো শাস্তি আদালতের বদলে পুলিশেরই দেওয়া উচিত। এছাড়াও ৭২ শতাংশ কর্মী জানিয়েছেন, প্রভাবশালী ব্যক্তিরা কোনও মামলায় জড়িত থাকলে তদন্ত চলাকালীন "রাজনৈতিক চাপ" সৃষ্টি করা হয় পুলিশের ওপর।

বিচারপতি চেলামেশ্বরের কথায়, "একজন কর্তব্যনিষ্ঠ অফিসার অনেকটা তফাৎ করে দিতে পারেন। কিন্তু সেই অফিসারকে পদে বসাবে কে?" তিনি নিজের কর্মজীবনের এমন কিছু অভিজ্ঞতার কথাও বলেন, যখন পুলিশকে নিয়ম লঙ্ঘন করতে দেখেন তিনি।

"আমরা আমাদের অফিসারদের কী প্রশিক্ষণ দিই? সিভিল অ্যান্ড ক্রিমিনাল প্রসিডিয়র কোডস (দেওয়ানি ও ফৌজদারি অপরাধ বিধি)-এর ওপর ছ'মাসের ক্র্যাশ কোর্স যথেষ্ট বলে ধরে নেওয়া যায় না," বলেন চেলামেশ্বর। পুলিশকর্মীদের রাজনৈতিক চাপমুক্ত করার প্রসঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত ওই বিচারপতির বক্তব্য, "কাউকে অসন্তুষ্ট করলেই বদলি, এটা একটা সমস্যা। অন্যায্য বদলির খপ্পর থেকে রেহাই পান না বিচারকরাও, যাঁরা কিনা সাংবিধানিক পদ অধিকার করে থাকেন।"

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে হাশিমপুরা গণহত্যা মামলায় ঐতিহাসিক রায়দান পর্বে দিল্লি হাই কোর্ট সাহায্য নেয় ২০১৮ সালের 'স্ট্যাটাস অফ পুলিসিং ইন ইন্ডিয়া' রিপোর্টের, যার ফলে ১৯৮৭ সালে ৪২ জনকে হত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয় ১৬ জন পুলিশকর্মীকে। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে হাই কোর্ট এই সিদ্ধান্তে পৌঁছয় যে পুলিশের অভ্যন্তরে মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক পক্ষপাতিত্বের প্রমাণ রয়েছে। এর আগে মোটিভের অভাব রয়েছে, এই কারণ দেখিয়ে ওই পুলিশকর্মীদের খালাস করে দেয় দায়রা আদালত।

Advertisment