বিরাট আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে রাজ্য। বেশ কিছুদিন ধরেই এমন অভিযোগ করে চলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এবার, নিজের অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করতে তিনি রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরের একটি চিঠিকে হাতিয়ার করলেন। চিঠিটি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করে শুভেন্দুর দাবি, রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি দেউলিয়া।
এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের দফতরগুলোর বকেয়া পরিশোধের মত অর্থ নেই। আর, সেই কারণেই কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারকে অনুদান দিতেও গড়িমসি করছে। কারণ, কেন্দ্রীয় সরকারের ধারণা, অনুদানের অর্থ সঠিক জায়গায় ব্যবহার না-করে, রাজ্য দেউলিয়াপনা ঘোচাতেই খরচ করে ফেলবে।
মোট দুটি চিঠি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করেছেন। তার মধ্যে একটি চিঠি লেখা হয়েছে গত ১৮ নভেম্বর বা গত শুক্রবার। চিঠিটি লিখেছেন রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর শান্তনু বসু। চিঠিটি লেখা হয়েছে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের সচিব পি উলগানাথনকে।
সেই চিঠিতে শান্তনু বসু জানিয়েছেন, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের কাছে রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের বকেয়া রয়েছে ৪৩৬.৩১ কোটি টাকা। ওই টাকা যেন পঞ্চায়েত দফতর অবিলম্বে রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরকে মিটিয়ে দেয়। চিঠিতে শান্তনু বসু আরও জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত দফতর ওই বকেয়া না-মেটালে বিদ্যুৎ দফতর আর রাজ্যের পঞ্চায়েতের কার্যালয়গুলোয় নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে পারবে না। আর, পঞ্চায়েত দফতরও বকেয়া শোধ না-করায় কেন্দ্রীয় অনুদান এবং ঋণ পাবে না। কারণ, কেন্দ্রীয় অনুদান এবং ঋণ পাওয়ার পূর্বশর্তই হল বকেয়া পরিশোধ।
আরও পড়ুন- ট্রেনের ছাদে উঠে সেলফি! আজব নেশায় হাড়হিম পরিণতি যুবকের
ওই চিঠির প্রেক্ষিতে রাজ্যের জেলাশাসকদের মঙ্গলবার চিঠি দিয়েছে পঞ্চায়েত দফতর। জেলাশাসকদের লেখা চিঠিতে পঞ্চায়েত দফতর জানিয়েছে এর আগেও জেলাশাসকদের বকেয়া শোধ করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু, সেই চিঠিতে কোনও কাজ হয়নি জেলাশাসকদের লেখা চিঠিতে রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরের চিঠির প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছেন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের অতিরিক্ত সচিব। একইসঙ্গে তিনি কেন্দ্রীয় অনুদান পাওয়ার শর্তের কথাও জেলাশাসকদের মনে করিয়ে দিয়েছেন।
এই দুটি চিঠি প্রকাশ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, 'দেউলিয়া পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ত্রি-স্তর পঞ্চায়েত অফিসগুলো আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে। তারা তাদের বিদ্যুতের বিলও মেটাতে পারছে না। রাজ্য সরকারের আধিকারিকরা, রাজ্য সরকারকে সাহায্য এবং অনুদান দেওয়ার আগে কেন কেন্দ্রীয় সরকারের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত তার আরেকটি বৈধ কারণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন।'